বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় প্রেমিকাকে গলা টিপে হত্যা!

  © প্রতীকী ছবি

ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়ার সময় থেকেই পরিচয় ছিল তাদের। একে-অপরকে গভীরভাবে ভালোও বাসতেন। কিন্তু পাশ করার পর দুজনে চাকরি পেলে বিয়ের আসায় কাল হল। বিয়ের কথা উঠতেই প্রেমিকাকে খুন করলেন প্রেমিক। এমনকি লাশ স্যুটকেসে ভরে নর্দমায় ফেলে দিয়েছেন।

ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের হায়দরাবাদে। বিয়ের জন্য প্রেমিকা চাপ দেওয়ায় বিরক্ত হয়ে তাকে গলা টিপে খুন করার পরে স্যুটকেসে ভরে নর্দমায় ফেলে দিয়েছে হায়দরাবাদের তরুণ প্রযুক্তিবিদ সুনীল কুমার। অবশ্য ঘটনার পর তাকে পুলিশ গ্রেফতারও করেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, হায়দরাবাদের একটি বেসরকারি সংস্থায় স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরি করত সুনীল। আর টিসিএস সাইনার্জি পার্কে সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার পদে চাকরি করতেন তাঁর প্রেমিকা বি লাবণ্য। গত ৭ এপ্রিল থেকে লাবণ্য নিখোঁজ হলে পুলিশে অভিযোগ জানায় তাঁর পরিবার। কিন্তু লাবণ্যর মোবাইল ফোন সুইচ অফ থাকায় এবং তাঁর প্রেমিক সম্পর্কে পরিবার ও বন্ধুরা বিস্তারিত না জানায় এ নিয়ে কোন কূলকিনারা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না।

পরে ওই যুবতীর কল রেকর্ড পর্যালোচনা করে সুনীলের হদিশ পাওয়া যায়। একপর্যায়ে গত শনিবার তাকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশি জেরায় সুনীল জানিয়েছে, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়ার সময় থেকেই লাবণ্যর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পাশ করার পরে দুজনে চাকরি পেলে বিয়ের প্রসঙ্গও কথাবার্তায় উঠে আসতে শুরু করে। কিন্তু বিয়ের কথা উঠতেই মেজাজ বিগড়ে যায় তারা। ধীরে ধীরে তাদের সম্পর্কে খারাপ হয়। এই সময় পত্রিকা এ খবর দিয়েছে।

লাবণ্যর পরিবারের চাপে গত ফেব্রুয়ারি মাসে সুনীল মিথ্যা কথা বলে জানায়, সে মাসক্যাটে চাকরি পেয়েছে। প্রবাসে হবু স্ত্রীকেও চাকরি পাইয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে ইন্টারভিউয়ের ব্যবস্থা করেছে জানিয়ে সে লাবণ্যকে তার সঙ্গে মাসক্যাটে পাঠাতে বলে।

আর সি পুরম থানার ইন্সপেক্টর পি রামচন্দ্র রাও জানিয়েছেন, সুনীলের কথায় বিশ্বাস করে দুজনকে গত ৪ এপ্রিল রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ছেড়ে দিয়ে যায় লাবণ্যের পরিবার। বিমানবন্দরে ঢুকে সুনীল লাবণ্যকে জানায়, ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। সে কারণে তারা এয়ারপোর্ট লজে ওঠে।

তিনি জানান, লজের ঘরে ফের বিয়ের প্রসঙ্গ উঠলে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত লাবণ্যর গলা টিপে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে সুনীল। গত ৫ এপ্রিল স্যুটকেসে লাবণ্যর দেহ ভরে শহরের সুরারাম এলাকার নর্দমায় ফেলে সে পালিয়ে যায়।

এদিকে পরিবারকে লাবণ্য কথা দিয়েছিলেন, ৭ এপ্রিলের মধ্যে দেশে ফিরবেন। সে অনুযায়ী তাঁর মোবাইল ফোন থেকে ওই দিন লাবণ্যর দিদিকে দেশে ফেরার বার্তা দিয়েই ফোন লুইচ অফ করে দেয় সুনীল। কিন্তু অপেক্ষার পরেও তার খোঁজ না পেয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করে পরিবার। পরে ফোন কল পর্যালোচনা করে গ্রেফতার করা হয় সুনীলকে। আপাতত আদালতের নির্দেশে তাকে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ