বাসের হেলপারের ধাক্কায় প্রাণ গেল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর

নিহত শিক্ষার্থী ঘোরী মো. ওয়াসিম
নিহত শিক্ষার্থী ঘোরী মো. ওয়াসিম

রাজধানীতে বাসচাপায় বিইউপি শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরীর নিহতের ঘটনায় দায়ীদের বিচারের দাবিতে বেঁধে দেয়া আল্টিমেটাম শেষ হওয়ার আগেই  ফের হেলপারের ধাক্কায় বাস থেকে পড়ে চাকার নিচে প্রাণ হারালেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ঘোরী মো. ওয়াসিম। শনিবার বিকেল ৫টায় মৌলভীবাজারের শেরপুর বিশ্বরোডে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, ওয়াসিম সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি ও জেনেটিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী এবং হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের রুদ্র গ্রামের ঘোরী মো. আবু জাহেদ মাহবুব ও ডা. মীনা পারভিনের ছেলে। 

কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী নয়ন শুভ জানান, ওয়াসিমসহ ১১ জন শিক্ষার্থী হবিগঞ্জের দেবপাড়ায় বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে তারা ময়মনসিংহ-সিলেট রোডের উদার পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন। ভাড়া নিয়ে বাসের হেলপারের সঙ্গে তাদের বিবাদ হয়। একপর্যায়ে বাসের হেলপার ওয়াসিমসহ আরেকজনকে ধাক্কা দেন। এতে ওয়াসিম বাস থেকে পড়ে যান এবং চাকা তার পায়ের ওপর দিয়ে চলে যায়। এ সময় তার সঙ্গে থাকা রাকিব হোসেন নামে আরেকজন শিক্ষার্থী বাস থেকে লাফ দিয়ে নামেন।

ওয়াসিমকে দ্রুত প্রাইভেটকারে করে সিলেট এম এ জি ওসমানী সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাস্তায় তার মৃত্যু হয়। রাকিব হোসেনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা বাসটি আটক করেন। ততক্ষণে বাসের চালক ও হেলপার পালিয়ে যায়। পরে মৌলভীবাজার সদর থানা পুলিশ বাসটি জব্দ করে।

এদিকে সিলেট এম এ জি ওসমানী হাসপাতালে ভিড় করছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী। হাসপাতালে তাৎক্ষণিকভাবে গেছেন সিকৃবির উপাচার্য প্রফেসর মতিয়ার রহমান হাওলাদার। তিনি জানান, মানুষের জীবনের মূল্য কমে গেছে। সহনশীলতা কমে গেছে। ওয়াসিমের মৃত্যুর এই ঘটনাকে সড়ক দুর্ঘটনা বলা যায় না, এটা মার্ডার। 

এর আগে মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর বসুন্ধরা গেট এলাকায় ‘সুপ্রভাত’ নামে একটি বাসের চাপায় বিইউপির শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরী নিহত হন। এ ঘটনার পর ঘাতক বাস সুপ্রভাত পরিবহনের রুট পারমিট বাতিল, ঘাতক চালকের ফাঁসির দাবিসহ আট দফা দাবিতে নানা স্লোগান দিয়ে সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। বুধবারও রাজধানীজুড়ে শিক্ষার্থীদের অবরোধ আন্দোলন হয়। 

পরে সাত দিনের আলটিমেটাম দিয়ে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলামের সঙ্গে আলোচনা শেষে বুধবার সন্ধ্যা ছয়টার পর রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সামনের সড়কে এসে তাঁরা এই ঘোষণা দেন।

মেয়রের কাছে তাঁরা তিনটি প্রধান দাবি তুলে ধরেন। দাবি তিনটি হলো-১. ঘাতক বাসচালকের সর্বোচ্চ শাস্তি, ২. সুপ্রভাত ও জাবালে নুর বাসের লাইসেন্স বাতিল ও ৩. ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ।


সর্বশেষ সংবাদ