জাফর ইকবাল হত্যাচেষ্টা মামলার বিচার শুরু

ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল
ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল  © ফাইল ছবি

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালকে হত্যাচেষ্টা মামলায় বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণের মাধ্যমে বিচারকাজ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মমিনুন নেসা মামলার বাদী ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট মাসুক আহমদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণের সময় মামলার আসামি ফয়জুল, তার বাবা-মা ও ভাইসহ ছয়জন উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন- ফয়জুলের বাবা আতিকুর রহমান, মা মিনারা বেগম, মামা কৃষকলীগ নেতা ফজলুর রহমান ও ভাই এনামুল হাসান এবং ফয়জুলের বন্ধু সোহাগ মিয়া।

গত বছরের ৩ মার্চ বিকেলে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের মুক্তমঞ্চে এক অনুষ্ঠান চলাকালে ড. জাফর ইকবালের ওপর হামলা চালান মাদরাসাছাত্র ফয়জুল হাসান। এ ঘটনার পর দেশে-বিদেশে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালকে প্রথমে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তাকে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়।

এ ঘটনায় ৩ মার্চ রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইশফাকুল হোসেন বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মহানগর পুলিশের জালালাবাদ থানায় মামলা করেন।

এপিপি মাসুক আহমদ বলেন, আলোচিত এ মামলায় ৫৬ জনের সাক্ষ্য নেয়া হবে। আগামী ২৫ এপ্রিল মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ঠিক ধার্য করেছেন আদালত।

এপিপি বলেন, হামলার সঙ্গে জড়িত বলে ফয়জুল আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে ফয়জুল জানিয়েছেন ২০১৬ সালে বন্ধু সোহাগের মাধ্যমে পাওয়া মেমোরি কার্ডে জসিম উদ্দিন রহমানী, তামিম ইল আদরানী ও ওলিপুরী হুজুরের ওয়াজ শুনে জিহাদের ব্যাপারে প্রভাবিত হন।

এছাড়া জসিম উদ্দিন রহমানীর লেখা ‘উন্মুক্ত তরবারি’ বই ও তিতুমীর মিডিয়ার ভিডিও দেখে ফয়জুলের ধারণা হয় জাফর ইকবাল একজন ‘নাস্তিক’। এই ধারণা থেকে ফয়জুল একাই জাফর ইকবালকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। একাই হত্যার জন্য ছুরি নিয়ে আঘাত করেন।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার বিভিন্ন স্থিরচিত্র, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার বিভিন্ন সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও অন্যান্য সাক্ষ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ করে হামলার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। ফয়জুল একাই জাফর ইকবালকে হত্যার জন্য আঘাত করেন বলে পুলিশের তদন্তেও উঠে এসেছে। আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের আশা করেন এপিপি মাসুক আহমদ।

২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এর আগে ২৬ জুলাই ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জালালাবাদ থানার ওসি শফিকুল ইসলাম।


সর্বশেষ সংবাদ