আল্টিমেটাম দিয়ে শাহবাগ ছাড়লেন শিক্ষার্থীরা

  © সংগৃহীত

শিক্ষার্থীদের আট দফা দাবি আদায়ের জন্য বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিয়েছেন নিরাপদ সড়কের দাবিতে শাহবাগে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে দাবি আদায় না হলে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে ফের সড়ক অবরোধে ঘোষণা দিয়েছেন তারা। শিক্ষার্থীরা সরে যাওয়ার পর শাহবাগ দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। 

বুধবার  বিকাল পৌনে ৪টার দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার হাসান সাংবাদিকদের মাধ্যমে এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যে আট দফা দাবি দিয়েছে তা আগামীকাল সকালের মধ্যে বাস্তবায়ন না হলে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে আমরা আবার সড়কে নামবো। শুধু আশ্বাস দিলে হবে না, আমাদের দাবিগুলো মেনে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে লিখিত দিতে হবে।’

শাহরিয়ার হাসান বলেন, ‘এর আগেও আমাদের অনেক আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।  কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। সড়কে মানুষ মরছেই।’ ঢাবি’র শিক্ষার্থী বিল্লাল তুহিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো।’

নিরাপদ সড়কের দাবিতে বুধবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে শাহবাগে  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও স্কুলের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে। বিকালে পৌনে ৪টার দিকে সরকারকে আল্টিমেটাম দিয়ে সড়ক ছেড়ে দেন তারা।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাজধানীর প্রগতি সরণীতে বাসচাপায় নিহত হয় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরী। এরপর থেকে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে নামে। বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করেন তারা। আজ ছিল আন্দোলনের ত্বিতীয় দিন।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো শুরু হওয়া বিক্ষোভের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে এতে যোগ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে যোগ দেন তিনি।

রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বেলা ১১টার দিকে বিক্ষোভ শুরু করেন। আশেপাশের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এতে যোগ দিয়েছেন।

সেখানে যোগ দিয়ে নুরুল হক নুর বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি শিক্ষার্থী এই যৌক্তিক আন্দোলনের সাথে রয়েছে। শহীদ রমিজ উদ্দীন ক্যান্টনমেন্টের দুজন শিক্ষার্থীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা এ রাষ্ট্রের অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলাগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিল। তখন প্রথমদিকে শিক্ষার্থীদের প্রশংসা করা হলেও এ আন্দোলন দমনের জন্য রাষ্ট্র বর্বর ভূমিকা পালন করেছিল, হাতুড়ি-হেলমেট বাহিনী লেলিয়ে দিয়েছিল।’

তিনি বলেন, ‘একদিকে বলা হয়েছিলো যে, শিক্ষার্থীরা তাদের চোখ খুলে দিয়েছে অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের হাতকড়া পরিয়ে দেয়া হয়েছিল।’

তিনি আরো বলেন, ‘আজকে শিক্ষার্থীরা যে আট দফা দাবি দিয়েছে তার প্রত্যেকটি দফা মানতে হবে। গত নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছিল তা আজকের মধ্যেই তুলে নিতে হবে। এ বাংলার ছাত্রসমাজ কখনো অন্যায় করেনি। এদেশের ছাত্রসমাজ মুক্তিকামী মানুষের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ছিল, আছে এবং থাকবে।

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে এতে যোগ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) এজিএস ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। বুধবার বিকাল ৪টার দিকে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে যোগ দেন তিনি।

এসময় ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বলেন, প্রয়োজনে গাড়ির কাগজপত্র ও চালকের লাইসেন্স চেক করার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় চেকপোস্ট বসানো যেতে পারে।


সর্বশেষ সংবাদ