স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা: আসামির মৃত্যুদণ্ড

পুলিশের সাথে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামি
পুলিশের সাথে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামি  © সংগৃহীত

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী তাওহীদা ইসলাম ইলমাকে মুখে ও গলায় ওড়না পেচিয়ে ধর্ষণ শেষে হত্যার দায়ে মোহাম্মদ আলী বাপ্পী নামের এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (০২ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১টায় কুমিল্লার বিজ্ঞ আদালত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন এ রায় দেন।

মৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন- কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গজারিয়া গ্রামের মোঃ জাকারিয়ার ছেলে মোহাম্মদ আলী বাপ্পী।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৫ মার্চ বিকেলে ৩টার পর গজারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী তাওহীদা ইসলাম ইলমা (৯) নিখোঁজ হয়, পরদিন আসামি মোহাম্মদ আলী বাপ্পি (২১) নিজেই অটোরিকশা ও মাইক ভাড়া করে এলাকায় মাইকিং শুরু করলে বাদীর সন্দেহ সৃষ্টি হয় এবং আসামি মোহাম্মদ আলী বাপ্পীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে কোন তথ্য না পেয়ে তাকে ছেড়ে দেন স্থানীয় লোকজন।

এরপর ১৬ মার্চ ডাকাতিয়া নদীতে ইলমার মৃতদেহ কাঁথা মোড়ানো অবস্থায় উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশ। পরে বাপ্পি হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করে বলে যে, যৌন কামনা চরিতার্থ করার জন্য তেঁতুল খাওয়ানোর কথা বলে তার ঘরে নিয়ে মুখে ও গলায় ওড়না পেচিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করার পর গলায় গামছা পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ কাঁথা দিয়ে পেচিয়ে ডাকাতিয়া নদীতে ফেলে দেয়।

এ ঘটনায় ২০১৯ সালে ইলমা'র পিতা মোঃ দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে একই গ্রামের মোঃ জাকারিয়ার ছেলে মোহাম্মদ আলী বাপ্পীকে আসামি করে চৌদ্দগ্রাম থানায় মামলা করেন।

একই বছর ২ জুন আসামি মোহাম্মদ আলী বাপ্পীসহ একই গ্রামের আবুল কালাম এর ছেলে মোঃ মিজানকে (২২) জড়িত করে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০২০ আসামিদ্বয়ের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ধারায় অভিযোগ গঠনক্রমে রাষ্ট্র পক্ষে ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে আসামি মোহাম্মদ আলী বাপ্পীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনাক্রমে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মোহাম্মদ আলী বাপ্পির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বাপ্পিকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অপর আসামি মোঃ মিজান এর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় আসামিদ্বয় আদালত কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।

এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পিপি এডভোকেট প্রদীপ কুমার দত্ত ও এপিপি এডভোকেট মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা আশা করছি উচ্চ আদালত উক্ত রায় বহাল রেখে দ্রুত কার্যকর করবেন।

আসামি পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট মোঃ আতিকুল ইসলাম (আতিক) বলেন- এ রায়ে আসামিপক্ষ অসন্তুষ্ট ও ক্ষুদ্ধ। রায়ের কপি হাতে পেলে শিগগিরই উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে। আমি আশাবাদি উচ্চ আদালত আসামি মোহাম্মদ আলী বাপ্পীকে খালাস প্রদান করবে।

 

সর্বশেষ সংবাদ