আদালত থেকে জঙ্গি ছিনতাই

এমআইএসটির সাবেক ছাত্রী ফাতেমার স্বীকারোক্তি

  © সংগৃহীত

ঢাকার আদালত চত্বর থেকে পুলিশের চোখে রাসায়নিক স্প্রে করে প্রকাশক দীপন হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার মামলায় আরেকজন স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। ছিনতাই হওয়া আসামি আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাবের স্ত্রী ফাতেমা তাসনীম ওরফে শিখা এ ঘটনায় জড়িত থাকার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিমের কাছে এই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। দুপুরের দিকে শিখাকে রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করেন তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) পরিদর্শক মুহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ। এর আগে তাকে চার দফা রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল।

আরও পড়ুন: এমআইএসটির সাবেক ছাত্রী ফাতেমা যেভাবে জঙ্গি কার্যক্রমে জড়ান

ফাতেমা তাসনীম ওরফে শিখা পড়াশোনা করেছেন মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে (এমআইএসটি)। ২০১৪ সালে ওই প্রতিষ্ঠান থেকে প্রথম শ্রেণি পেয়ে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেন। ভাইয়ের মাধ্যমে আনসার আল ইসলামের আদর্শে দীক্ষিত হন তিনি। বিয়ে করেন আনসার আল ইসলামের সদস্য আবু সিদ্দিক সোহেলকে। বিয়ের পর গভীরভাবে জঙ্গি কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়েন ফাতেমা।

আসামির স্বীকারোক্তি দেওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই আলী আশ্রাফ।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, শিখা ঘটনার দিন জঙ্গি ছিনতাইয়ের সময় নিজে আদালতে উপস্থিত ছিলেন বলে স্বীকার করেছেন। জঙ্গি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনার সঙ্গে তিনি প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। জঙ্গি নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে ছয় মাস ধরে পরিকল্পনা করেন। কারাগারে জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা এবং জঙ্গি নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে জঙ্গি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

আরও পড়ুন: এমআইএসটির সাবেক ছাত্রী ফাতেমাসহ দুই নারী আরও ৩ দিনের রিমান্ডে

শিখা স্বীকারোক্তিতে আরও বলেন, নারী হওয়ায় জঙ্গি ছিনতাইয়ের সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করা তাঁর পক্ষেই সহজ হবে—এই বিবেচনায় তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

জঙ্গি ছিনতাইয়ের সঙ্গে আরও যাঁরা জড়িত ছিলেন তাঁদের নাম তিনি প্রকাশ করেছেন বলেও জানা গেছে। তবে মামলার তদন্তের স্বার্থে নামগুলো সূত্রটি প্রকাশ করতে চাননি। শিখার জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার পর তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এ নিয়ে এই মামলায় গ্রেপ্তার দুইজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন। ১৮ এপ্রিল জঙ্গি সোহেল ও তাঁর স্ত্রী শিখাকে আশ্রয় দেওয়ার কথা আদালতে স্বীকার করেন আরেক আসামি হুসনা আক্তার। ৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকা থেকে এই দুই নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত বছরের ২০ নভেম্বর ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রধান ফটক থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেন সহযোগীরা। ওই দিন রাতে এ ঘটনায় ২০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়।

ছিনিয়ে নেওয়া দুই জঙ্গি মইনুল হাসান শামীম ওরফে সামির ওরফে ইমরান ও আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাবকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।


সর্বশেষ সংবাদ