আওয়ামী লীগ নেতার গ্রেফতারে এলাকায় মিষ্টি বিতরণ
পঞ্চগড়ে হারুন প্রধান নামে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেফতার করায় এলাকায় মিষ্টি বিতরণের ঘটনা ঘটেছে। বেক্সিমকোর প্রায় শত কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় ওই আওয়ামীলীগ নেতাকে গ্রেফতার করা হয়।
আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরী জানান, আজ শনিবার (২৫ মার্চ) তাকে আটক করা হয়েছে।
পঞ্চগড়ে বেক্সিমকোর প্রায় শত কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা হারুন প্রধানকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি। গ্রেফতার হারুন অর রশিদ প্রধান জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়নের সাতমেড়া বাসামোড় এলাকার মৃত গফুর উদ্দীন প্রধানের ছেলে।
আরো পড়ুন: ইবিতে ছাত্রী নির্যাতন: ভিডিও ধারণ করা মোবাইলের হদিস মিলছে না
স্থানীয় সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, চলমান বিদ্যুৎ সংকট মোকাবিলায় বেক্সিমকো পাওয়ার লিমিটেড ও বেক্সিমকো ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ওসমান কায়সার চৌধুরীর নেতৃত্বে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় দুটি প্রজেক্টের মাধ্যমে ৩০ মেগাওয়াট এবং ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন দুইটি সৌর বিদ্যুৎ প্লান্ট স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে স্থানীয় আ.লীগ নেতা হারুনুর রশিদ প্রধানের মাধ্যমে ভূমি অধিগ্রহণ শুরু করে বেক্সিমকো। কিন্তু প্রায় তিন বছর অতিক্রম করলে বেক্সিমকোর পক্ষে ক্রয়কৃত জমি বুঝে চওয়া হয়। এসময় হারুন নানা টালবাহানার মাধ্যমে ভুয়ো দলিল দিয়ে কালক্ষেপণ করেন এবং প্রায় শতকোটি টাকা আত্নসাৎ করেন।
এ ঘটনায় কোম্পানির সঙ্গে প্রতারণা ও টাকা উদ্ধারে বেক্সিমকো লিমিটেড তাদের প্রজেক্টের পক্ষে ঢাকায় ধানমন্ডি থানায় ১১ জনকে আসামি করে একটি মামলা করে। ৪৬ কোটি ৩৫ লাখ ৮৯ হাজার টাকা আত্নসাতের এ মামলায় হারুন অর রশিদ প্রধান ওরফে হারুন প্রধানকে পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়ন থেকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।
আরো পড়ুন: শিক্ষার্থীদের বাকি ১০ লাখ, নিঃস্ব তারা মিয়া লিখলেন ‘বিদায়’
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, হারুন প্রধানসহ অপর অভিযুক্তরা ১১৫ একর ২৪ শতাংশ জমি বিভিন্ন ভুয়া ও জাল দলিলের মাধ্যমে কোম্পানির নামে ক্রয়ের কথা বলে ওসমান কায়সার চৌধুরী এবং বিভিন্ন মানুষের নামে ১১৪টি ভুয়া পাওয়ার অব অ্যাটর্নি এবং করতোয়া সোলার লিমিটেডের নামে ৩১টি ভুয়া সাব-কবলা দলিলের রেজিস্ট্রি দেখিয়ে, ১৬ একর জমি কোম্পানিকে বুঝিয়ে দেয়। প্রতারণামূলকভাবে তারা তাদের নামে-বেনামে এবং তাদের বিভিন্ন কোম্পানি ও ফার্মের নামে বাদীর সংশ্লিষ্ট কোম্পানি থেকে ৪৬ কোটি ৩৫ লাখ ৮৯ হাজার টাকা প্রতারণামূলকভাবে আত্মসাৎ করে।
এছাড়া অভিযোগ রয়েছে,বেক্সিমকো ছাড়াও স্থানীয় বিভিন্ন ব্যক্তির সাথেও একইধরনের প্রতারণা করেছেন হারুন। এসব ঘটনায় স্থানীয়দের পক্ষেও ভয়-ভীতি, জবর দখল, ভূমি প্রতারণার অভিযোগে বেশ কয়েকটি মামলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে তেঁতুলিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মুক্তারুল হক মুকু বলেন, কোম্পানির জন্য জমি ক্রয় করে দেওয়ার নামে দীর্ঘদিন ধরে বেক্সিমকো কোম্পানির টাকা আত্মসাৎ করে আসছিল হারুন প্রধান। তার হাত থেকে স্থানীয়রাও রক্ষা পায়নি। তার অত্যাচারে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। তার গ্রেফতারের খবরে তাই স্থানীয়রা মিলে আনন্দে মিষ্টি মুখ করেছে।