১৫ মার্চ ২০২৩, ০৯:৪৫

প্রধান শিক্ষককে মারধর করে হাসপাতালে পাঠালেন সহকারী শিক্ষকরা

  © সংগৃহীত

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে প্রধান শিক্ষক কামরুল আহসান সোহেল (৫২) সহকারী শিক্ষকদের মারধরে আহত হয়েছেন। তার ছেলে সিনহা ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ফাতেমা বেগমও এ সময় আহত হন। প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ, ভবন নির্মাণে জটিলতাসহ নানা দ্বন্দ্বের জেরে সহকারী শিক্ষকরা মারধর করেন।

মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) দুপুরে পলাশবাড়ী উপজেলার বরিশাল ইউনিয়নের জুনদহ উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। মারধরের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন পলাশবাড়ী থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) দিবাকর অধিকারী। খবর পেয়ে তাদের উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন পুলিশ ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।

আরও পড়ুন: আইসিইউতে থাকা রাবির সেই শিক্ষার্থীর বুকে শতাধিক গুলির ‘পিলেট’

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বছরের নভেম্বরে স্কুলের পুরাতন টিনশেড পাকা ভবন ভেঙে ফেলা হয়। উদ্দেশ্য ছিল বিদ্যালয়ের নতুন চারতলা ভবন নির্মাণ। কিন্তু জমির সীমানা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হলে প্রতিবেশী জমির মালিকের অভিযোগে সেখানে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন সম্ভব হয়নি। বর্তমানে টিনের ছাপরা ঘর তৈরি করে প্রখর রোদের মধ্যেই পাঠদান চলছে। সম্প্রতি পাশের জমির মালিক স্কুলের টয়লেটে যাতায়াতের রাস্তাটি বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন। এ নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদেরর মধ্যে চাপা ক্ষোভ তৈরি হয়।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিদ্যালয়ের এসব সমস্যা সমাধানে সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে প্রধান শিক্ষকের বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে ধাক্কা-মারধরের শিকার হন প্রধান শিক্ষক সোহেল। খবর পেয়ে তার ছেলে সিনহা ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ফাতেমা বাধা দিতে গেলে তারাও আহত হন।

হাসপাতালে ভর্তি আহত প্রধান শিক্ষক কামরুল আহসান সোহেল জানান, বিদ্যালয়ের নানা সমস্যাসহ বর্তমান পরিস্থিতি সকলের জানা। এসব নিয়ে সহকারী শিক্ষকরা ক্ষুব্ধ। মঙ্গলবার বিদ্যালয় চলাকালে হঠাৎ সহকারী শিক্ষকরা একজোট হয়ে মারমুখি হয়ে উঠেন। একপর্যায়ে তারা আমাকে মারধর করে আহত করেন। ঘটনার সময় বাধা দিলে তারা আমার ছেলে ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রীকেও মারধর করেন। শারীরিকভাবে পক্ষাঘাত বলে দাবি করেন প্রধান শিক্ষক।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সহকারী শিক্ষক মুক্তার হোসেন ও রিজেন মিয়া বলেন, বিদ্যালয়ের বেশ কিছু বিষয় নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে মতবিরোধ চলছিল। এর জের ধরে প্রধান শিক্ষকের পরিবারের সদস্যরাই বিদ্যালয়ে এসে তাদের ওপর হামলা চালান। আর প্রধান শিক্ষক রেগে গিয়ে টেবিলে আঘাত করলে কাচ ভেঙে তার হাত কেটে যায়।

পলাশবাড়ী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহাতাব হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করা হয়। এ সময় শিক্ষক ও স্থানীয়দের কাছে ঘটনার বিষয় জানা হয়। তবে শিক্ষকদের উভয়পক্ষ একে-অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিচ্ছেন। এ ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পলাশবাড়ী থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) দিবাকর অধিকারী জানান, এ ঘটনায় রাতে প্রধান শিক্ষক একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।