সীমান্তে কাঁদায় আটকে বন্য হাতির মৃত্যু
নেত্রকোনার সীমান্ত এলাকায় কাঁদায় আটকে মাঝারি আকারের এক পুরুষ বন্য হাতির মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার সকালে স্থানীয়রা উপজেলার রংছাতি ইউনিয়নের পাচগাঁও সীমান্তে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ১১৮৩-১ এস নম্বর পিলার সংলগ্ন জনৈক কৃষক মনসুরের খেতে মৃত অবস্থায় হাতিটিকে দেখতে পায়।
স্থানীয়রা জানায়, সীমান্তে কৃষকদের আমন খেতের ধান পাকা ও আধা পাকা অবস্থায় রয়েছে। সম্প্রতি কিছু দিন যাবত সন্ধ্যা হলে ভারতীয় সীমান্ত পার হয়ে দলবেধে বন্য হাতির পাল আমন খেতে প্রবেশ করে এবং ধানের থৌঢ়(মৌচা) খেয়ে ফসলের ক্ষতি সাধন করে যাচ্ছে। সীমান্তবর্তী কৃষকরা একত্রিত হয়ে রাতের বেলায় মশাল জ্বালিয়ে পাহারার ব্যবস্থা করে যাচ্ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে আটটি হাতির একটি পাল প্রবেশ করে ধানের ক্ষতি সাধন শুরু করে। এলাকাবাসীর তাড়া খেয়ে হাতির পাল সীমান্তের ওপারে চলে যায়। সকাল বেলা গ্রামবাসীরা দেখতে পান একটি মাঝারি আকারের পুরুষ হাতি কাঁদা মাটিতে আটকে মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। স্থানীয়দের ধারণা, রাতে তাড়া খেয়ে হাতির পাল থেকে আলাদা হয়ে হাতিটি কাঁদায় আটকে রাতের কোন এক সময় মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।
স্থানীয় কৃষক জহির খান জানান, তার তিন একরের আমন ধান খেতের এক একরের বেশি ধানের ক্ষতি করেছে হাতির পাল। ব্যবসায়ী রতন মিয়া জানান, সীমান্ত পার হয়ে হাতিরপাল যেন তাদের ফসলের ক্ষতিসাধন না করতে পারে এ ব্যাপারে তিনি বনবিভাগের দৃষ্টি কামনা করেন।
আরও পড়ুন: ধানক্ষেত থেকে ধরে নিয়ে বাংলাদেশি কৃষককে হত্যা বিএসএফের
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. হাদিউল ইসলাম বলেন, প্রতি বছর এই সময়ে হাতির পাল নেমে আসে ফসল ও বাড়ি-ঘরের ক্ষতিসাধন করে। দুঃখের বিষয় বনবিভাগ ও সরকার এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেয়না। তিনি জানান, কিছুদিন আগেও আমার ওয়ার্ডের এক কৃষকের হাতির আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এক হাতির মৃত্যুতে প্রতিশোধ নিতে দলবদ্ধভাবে যে কোন সময় হাতির পাল এসে বাড়ি-ঘরে হামলা চালাতে পারে। এনিয়ে আমরা গ্রামবাসীরা আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠার মধ্যে আছি।
কলমাকান্দা থানার ওসি মো. আবদুল আহাদ খান জানান, স্থানীয় ইউপি সদস্যের মাধ্যমে হাতি মৃত্যুর খবরটি পেয়েছি। বিষয়টি বন বিভাগ ও উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে অবগত করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ প্রেরণ করা হয়েছে।
এর আগে মাসের গত ১৪ নভেম্বর রাত ৯টার দিকে একই ইউনিয়নের বেতগড়া এলাকায় সীমান্ত পার হয়ে ধানী জমিতে হাতির পাল নেমে আসে। স্থানীয় কৃষকরা মশাল জ্বালিয়ে তাড়ানোর সময় এক হাতির আক্রমণে সন্যাসীপাড়া এলাকার মো. মফিজুল ইসলামের ছেলে মো. নূরুল ইসলাম (৩৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছিল।