২২ অক্টোবর ২০২৫, ১৮:৫২

এইচএসসি পরীক্ষায় অভূতর্পূব সাফল্যের আনন্দে হামদর্দ কলেজে উৎসব আমেজ

এইচএসসি পরীক্ষায় অভূতপূর্ব সাফল্য উপলক্ষে হামদর্দ কলেজে ফলাফল উৎসব  © টিডিসি

২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে রাজধানীর হামদর্দ পাবলিক কলেজ। এবার ৯৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ পাসের হারের পাশাপাশি ৯১ জন শিক্ষার্থী অর্জন করেছে জিপিএ‑৫।

এ উপলক্ষে বুধবার (২২ অক্টোবর) পান্থপথ সিগন্যাল সংলগ্ন কলেজ প্রাঙ্গণে কর্তৃপক্ষ আয়োজন করেছে ‘ফলাফল উৎসব‑২০২৫’। এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও অতিথি সবার মাঝেই সৃষ্টি হয় আনন্দঘন পরিবেশ।

“আমাদের কলেজের শিক্ষকদের আন্তরিকতা ও অক্লান্ত পরিশ্রমই আমাদের সাফল্যের অন্যতম মাধ্যম। তারা আমাদের মা-বাবার মতো গাইড করেছেন এবং কঠিন লেসনকে সহজ করে বুঝিয়ে পড়িয়েছেন। আমরা আমাদের কলেজ কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষকদের প্রতি সন্তুষ্ট” - কৃতি শিক্ষার্থী, হামদর্দ পাবলিক কলেজ।

কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চলতি বছর ৩৭৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। এর মধ্যে ৩৭১ জন শিক্ষার্থীই কৃতকার্য হয়েছে। শুধু তাই নয়, পাস করা ৩৭১ জনের মধ্য থেকে ৯১ জন শিক্ষার্থীই জিপিএ-৫ পেয়েছে বলে জানা গেছে। 

যেখানে জাতীয় পর্যায়ে গড় পাসের হার এবং ৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ, সেখানে হামদর্দ কলেজের এই ফলাফলকে ব্যতিক্রমী হিসেবে বিবেচনা করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

ফলাফল উদযাপন অনুষ্ঠান বেলুন উড়িয়ে উদ্বোধন করা হয়

ফলাফল উৎসবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে শিক্ষার্থীদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও হামদর্দ ল্যাবরেটরিজ (ওয়াকফ) বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. হাকীম মো. ইউসুফ হারুন ভূঁইয়া এবং কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি অধ্যাপক কামরুন নাহার হারুন। তারা শিক্ষার্থীদের এ অর্জনকে কলেজের মানসম্পন্ন একাডেমিক পরিবেশ ও শিক্ষকদের নিবেদনমূলক প্রচেষ্টার ফল বলে উল্লেখ করেন।

“এসএসসিতে এ গ্রেডপ্রাপ্ত অনেক শিক্ষার্থীই আমাদের শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে ভাল ফল অর্জন করেছে। আমাদের হিসেব অনুযায়ী, ২০২৩ সালে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিল মাত্র ৭৬ জন এবং এবার এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯১ জন। তাদের মধ্যে এসএসসিতে জিপিএ-৫ ছিলো না এমন ১৫ জন পরীক্ষার্থী গ্রেড উন্নয়ন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে” - মো. নজরুল ইসলাম, অধ্যক্ষ, হামদর্দ পাবলিক কলেজ। 

এসময় তারা ভাল ফলাফল করে কলেজের সুনাম অক্ষুণ্ন রাখতে ভূমিকা রাখার কারণে কৃতি শিক্ষার্থীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এছাড়া, ভবিষ্যৎ জীবন ও ক্যারিয়ারের চূড়ান্ত সাফল্য অর্জনে শিক্ষারর্থীদের উদ্দেশ্যে তারা বিভিন্ন অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য রাখেন। 

আরও পড়ুন: বিসিএসে সাফল্যের মুকুট: প্রাক্তন ৫ শিক্ষার্থীকে সম্মাননা দিল হামদর্দ পাবলিক কলেজ

অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানকালে কলেজের অধ্যক্ষ মো. নজরুল ইসলাম বলেন, কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ড. হাকীম মো. ইউসুফ হারুন ভূঁইয়ার অনুপ্রেরণা ও গর্ভনিং বডির সভাপতি অধ্যাপক কামরুন নাহার হারুনের প্রত্যক্ষ দিকনির্দেশনায় এবং শিক্ষকদের কঠোর পরিশ্রমে প্রতিবারই হামদর্দ পাবলিক কলেজ এইসএসসিতে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করে আসছে।

তিনি বলেন, এসএসসিতে এ গ্রেডপ্রাপ্ত অনেক শিক্ষার্থীই আমাদের শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে থেকে পরিশ্রমের মাধ্যমে তারা জিপিএ ৫ পেয়ে ভাল ফলাফল অর্জন করেছে। আমাদের হিসেব অনুযায়ী, ২০২৩ সালে হামদর্দ পাবলিক কলেজ জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিল মাত্র ৭৬ জন এবং এবার এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯১ জন। তাদের মধ্যে এসএসসিতে জিপিএ-৫ ছিল না এমন ১৫ জন পরীক্ষার্থী গ্রেড উন্নয়ন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে।

হামদর্দ পাবলিক কলেজ ভবন ও প্রতিষ্ঠানটির লোগো

অনুষ্ঠানে কৃতি শিক্ষার্থীদের কয়েকজন নিজ অনুভূতি প্রকাশ করেন। এসময় তারা তাদের পিতৃতুল্য শিক্ষকদের দিকনির্দেশনা ও কলেজ কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতার প্রশংসা করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তাছাড়া, সন্তানদের সাফল্যে অবিভাবকরাও নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করে কলেজ কর্তৃপক্ষের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

এক শিক্ষার্থী অনুভূতি প্রকাশ করে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমাদের কলেজের শিক্ষকদের আন্তরিকতা ও অক্লান্ত পরিশ্রমই আমাদের সাফল্যের অন্যতম কারণ। তারা আমাদের মা-বাবার মতো গাইড করেছেন এবং কঠিন লেসনকে সহজ করে বুঝিয়ে পড়িয়েছেন। আমরা আমাদের কলেজ কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষকদের প্রতি সন্তুষ্ট। 

প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে দাতব্য সংস্থা হামদর্দ ল্যাবরেটরিজ (ওয়াকফ্)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. হাকীম মো. ইউসুফ হারুন ভূঁইয়ার উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় হামদর্দ পাবলিক কলেজ (এইচপিসি)। শিক্ষা, সমতা ও জাতির উন্নয়নের প্রতি গভীর দায়বদ্ধতা থেকে এ প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন তিনি। আলোকিত মানুষ গড়ে তোলার এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণের স্বপ্ন নিয়ে মাত্র ১৪ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে যাত্রা শুরু করে এ কলেজ। কলেজটি প্রতি বছর শতভাগ পাসের হার এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জিপিএ-৫ অর্জনকারীদের সাথে সফল ধারা অব্যাহত রেখেছে। এটি ২০১৪ সাল হতে ধারাবাহিকভাবে ধানমন্ডি থানায় প্রথম স্থান দখল করে আসছে।