বাবা জেলে, ছেলেকে অপহরণ করে পুড়িয়ে হত্যা
নাটোরে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে নির্মমতার এক বীভৎস চিত্র সামনে এসেছে। গত বছরের এদিনে (৫ আগস্ট) নাটোর শহরে বাবা জেলে বন্দী, ছেলেকে অপহরণ করে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যার করা হয়। আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের অনুসারীরা এ নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটান।
নিহত মিকদাদ হোসেন খান (১৮) ছিলেন নাটোর জেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও নাটোর সিটি কলেজের অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেনের একমাত্র সন্তান। মিকদাদ নবাব সিরাজউদ্দৌলা সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি নাটোর সদর উপজেলার উপশহর এলাকায়।
গত বছরের জুলাই মাসে গণঅভ্যুত্থান আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছিলেন মিকদাদ। সে ‘অপরাধে’ ৫ আগস্ট সকালে নাটোরে আন্দোলনরত অবস্থায় তাকে অপহরণ করা হয়। পরে বহু খোঁজাখুঁজির পর তার অগ্নিদগ্ধ মরদেহ উদ্ধার করে নাটোর-২ আসনের সাবেক এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুলের বিলাসবহুল বাসভবন ‘জান্নাতি প্যালেস’ থেকে।
এ ঘটনায় শিমুল ও তার ঘনিষ্ঠ অনুসারীদের সরাসরি দায়ী করেছেন নিহতের পরিবার। মিকদাদের বাবা দেলাওয়ার হোসেন ওই সময় মিথ্যা মামলায় জেলে বন্দী ছিলেন।
আরও পড়ুন: জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অনুষ্ঠানে গ্যাস বেলুন বিস্ফোরণ, আহত বেশ কয়েকজন
ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে জেলে বসে কান্নায় ভেঙে পড়েন দেলাওয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার আমাকে মিথ্যা মামলায় জেলে পাঠিয়েছে। তাতেও ক্ষান্ত হয়নি। আমার একমাত্র ছেলেকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। আমি এই হত্যার বিচার চাই। এ দুনিয়ার যেকোনো আদালতে আর না হলে আল্লাহর আদালতে বিচার হবেই।’
অন্যদিকে সন্তান হারিয়ে বাকরুদ্ধ মিকদাদের মা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমি তাকে বহুবার বলেছি, আন্দোলনে যেও না। কিন্তু সে বলত, মা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। আজ সে নেই। আমি একা। আমি শুধু আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করছি, যারা আমার ছেলেকে পুড়িয়ে মেরেছে, তারা কেউ রেহাই পাবে না।’