০৪ জুন ২০২৫, ১০:৩৩

যুক্তরাষ্ট্রে থেকেই আসামি, মামলা দেশে— নাম বাদ দিতে এসআইয়ের ৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবি

উপপরিদর্শক (এসআই) আবু জাফর মৃধা  © সংগৃহীত

নাটোরে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী রাসেল হোসাইনের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে গুরুদাসপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু জাফর মৃধার বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে জেলার পুলিশ সুপার বরাবর অডিও রেকর্ডসহ লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন ভুক্তভোগী রাসেল।

অভিযোগ থেকে যায়, গত (১৫ মে) গুরুদাসপুর পৌরসভার চাঁচকৈড় বাজার এলাকায় ইটভাটা ব্যবসায়ী ফরিদ মোল্লার ছেলে রুবেল মোল্লাকে দুর্বত্তরা মারপিট করেন। মারপিটের সময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী রাসেল হোসাইনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের এক কর্মচারী ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। এর জেরে পরদিন ১৬ মে মামলায় প্রবাসী রাসেলকে ১ নম্বর আসামি করে মামলা করেন ফরিদ মোল্লা। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান গুরুদাসপুর থানার এসআই আবু জাফর মৃধা। মামলার দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই আবু জাফর মৃধা প্রবাসী রাসেলের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে তার ম্যানেজারের কাছে ঘুষ দাবি করতে থাকেন।

একপর্যায় গত ২ জুন মোবাইল ফোনে ম্যানেজার গোলাম রাব্বির কাছে রাসেল হোসাইনের নাম মামলা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন এবং কোরবানির ঈদের আগেই এক লাখ টাকা দিতে হবে বলেও আলটিমেটান দেন।

আরও পড়ুন : ঈদে বাড়ি ফেরা হলো না ৫ জনের, সড়কে গেল প্রাণ

গোলাম রাব্বি বলেন, আমি যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী রাসেল ভাইয়ের ম্যানেজার। তার ইটভাটার ব্যবসা দেখাশোনা করি। কিছুদিন আগে একটি মারামারির ঘটনায় করা মামলায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রাসেল হোসাইনের নাম জড়ানো হয়েছে। সেই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবু জাফর মৃধা প্রতিনিয়ত আমাকে ভয়ভীতি দেখান। পরে গত সোমবার রাতে মোবাইল ফোনে কথা হলে রাসেল হোসাইনের নাম মামলা থেকে বাদ দেওয়ার কথা বলে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন। ঈদের আগেই এক লাখ টাকা তাকে দিতে হবে বলেন। আমি এসআইয়ের ঘুষ দাবির বিষয়টি রেকর্ড করে প্রতিকার পাওয়ার জন্য নাটোরের পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী রাসেল হোসাইন বলেন, ‘আমার বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। প্রবাসে থেকেও আমি দেশের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে চাঁচকৈড় বাজারে দুটি ব্যবসা পরিচালনা করছি, যা আমার ম্যানেজার গোলাম রাব্বি দেখাশোনা করে। একটি ভিত্তিহীন ও মিথ্যা মারপিটের মামলায় আমাকে ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে, যেখানে আমি দেশে পর্যন্ত নেই। এ বিষয়ে গুরুদাসপুর থানার এসআই আবু জাফর মৃধা আমার ম্যানেজার রাব্বিকে ফোন দিয়ে মামলায় নাম কাটার শর্তে আমার কাছে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেছেন। একজন পুলিশ কর্মকর্তার মুখে সরাসরি এমন কথা শুনে আমি হতবাক, ব্যথিত ও আতঙ্কিত।’

অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে উপপরিদর্শক (এসআই) আবু জাফর মৃধা মোবাইল ফোনে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘টাকা চাওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। এসব অভিযোগ সত্য নয়। আমি কারও কাছ থেকে কোনো টাকা দাবি করিনি।’

নাটোর জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন জানান, এ-সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।