সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপে পিরোজপুরের কয়েকটি অঞ্চল প্লাবিত, বিপাকে জনজীবন
উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে পিরোজপুরে টানা বৃষ্টি ও নদ-নদীর জোয়ারে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে জেলার বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে, শহরের বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে যাতায়াত এবং দৈনন্দিন কাজে চরম অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন। শহর ও গ্রামীণ এলাকায় পানি ঢুকে পড়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
জেলা আবহাওয়া কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার (২৮ মে) সকাল ১০টা থেকে শুক্রবার (৩০ মে) রাত ৩টা পর্যন্ত পিরোজপুরে প্রায় ১৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বুধবার থেকে শুরু হওয়া থেমে থেমে বৃষ্টি বৃহস্পতিবার থেকে টানা বর্ষণে পরিণত হয়। এতে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় হাঁটু পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। বলাকা ক্লাব এলাকার বাসিন্দা সাদি মো. হিমেল জানান, রাস্তায় পানি জমে যাওয়ায় চলাচলে চরম সমস্যা হচ্ছে। বিশেষ করে যানবাহন চলাচলে বিপত্তি ঘটছে, দুর্ঘটনার আশঙ্কাও বাড়ছে।
এদিকে, সদর উপজেলার বলেশ্বর নদীর পাড়ঘেঁষা গ্রামগুলোতে পানি ঢুকে পড়েছে। নদীর জোয়ারের সঙ্গে বৃষ্টির পানি মিশে প্লাবনের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বলেশ্বর নদীর পাড়ের বাসিন্দা মুর্শিদ শেখ বলেন, জোয়ারের পানি এমনভাবে উঠেছে যে ঘর থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না। পুরো এলাকাই পানিতে তলিয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত টেলিযোগাযোগ, ৫৯০৪ সাইট বন্ধ
জেলার মঠবাড়িয়া, ভাণ্ডারিয়া, ইন্দুরকানি ও কাউখালী উপজেলার একাধিক গ্রামে পানি দেড় থেকে দুই ফুট পর্যন্ত বেড়েছে। মঠবাড়িয়ার মাঝেরচর, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, শাপলেজা, ভাণ্ডারিয়ার চরখালি, তেলিখালী, ইন্দুরকানির সাউথখালী চর ও কাউখালীর সোনাকুর এলাকায় জোয়ারের পানি ঢুকে পড়েছে। স্থানীয়রা জানান, জোয়ারের পানি আরও বাড়তে পারে বলে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় পিরোজপুর জেলা প্রশাসন এবং রেড ক্রিসেন্ট তৎপর রয়েছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খান জানান, জেলায় ২৯৫টি সাইক্লোন শেল্টার এবং ৬৫টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে শুকনো খাবার এবং অন্যান্য জরুরি সহায়তা সরবরাহের জন্য প্রশাসনের নিজস্ব তহবিল থেকে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখছি এবং যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুত আছি।