১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪৯

অদম্য প্রতিবন্ধী জয়ন্তীর গাছতলার পাঠশালায় উঠল ঘর

জয়ন্তী রায়ের পাঠশালা  © টিডিসি ফটো

শারীরিক প্রতিবন্ধী জয়ন্তী রায় (৪০)। নিজের উঠানের গাছতলায় শিশুদের পাঠদান শুরু করেন। অভাব-অনটনের মাঝেও তার অদম্য যাত্রা থেমে থাকেনি। এর সরকারি স্বীকৃতিও পেয়েছেন। এখন তার সেই পাঠশালা চলছে টিনশেড ঘরে। মাসিক ৫ হাজার টাকা বেতনও পাচ্ছেন।

শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রতিমাসে ৩০০ টাকা করে নিতেন। ২০২৪ সালের শুরুতে একটি উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শনে এসে জয়ন্তীর পাঠশালা দেখে অভিভূত হন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মঈনুল হক। এরপরই পাঠশালার শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার জন্য অর্থ নেওয়া বন্ধ করতে বলেন তিনি। ইউএনও নিজে তাকে প্রতি মাসে সম্মানী দিতে শুরু করেন।

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বন্যাবাড়ি গ্রামে বাড়ি জয়ন্তীর। এসএসসি পাস করেও অর্থাভাবে কলেজে ভর্তি হতে পারেননি তিনি। কৃষক স্বামী হরিচাঁন রায় ও এক ছেলেকে নিয়ে ছিল তার সংগ্রামী জীবন। জীবিকার তাগিদে ২০২৩ সালে স্থানীয় ১০ শিশুকে নিয়ে গাছতলায় শুরু করেন ছোট্ট একটি পাঠশালা। 

শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রতিমাসে ৩০০ টাকা করে নিতেন। ২০২৪ সালের শুরুতে একটি উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শনে এসে জয়ন্তীর পাঠশালা দেখে অভিভূত হন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মঈনুল হক। এরপরই পাঠশালার শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার জন্য অর্থ নেওয়া বন্ধ করতে বলেন তিনি। ইউএনও নিজে তাকে প্রতি মাসে সম্মানী দিতে শুরু করেন।

বর্তমানে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ‘মন্দির ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমে’ জয়ন্তীর পাঠশালাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এখন তার পাঠশালায় ৩০ জন শিশু পড়াশোনা করছে। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নির্মিত হয়েছে এক লাখ ১৪ হাজার টাকা ব্যয়ে টিনশেড ঘর, রয়েছে বৈদ্যুতিক সংযোগ ও ৩টি ফ্যানও।

আরো পড়ুন: এপ্রিলের বেতন নিয়ে আগাম প্রস্তুতি ইএমআইএস সেলের

জয়ন্তী বলেন, ‘সরকারি স্বীকৃতি ও সহায়তায় আমার মতো একজন প্রতিবন্ধী নারী আজ আত্মমর্যাদাশীল হয়ে উঠেছি। এই ভালোবাসার ঋণ কখনও শোধ হবে না।’

প্রতিবন্ধী হয়েও জয়ন্তীর এমন মানবিক উদ্যোগ সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক বলে মত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মঈনুল হকের। তিনি বলেন, উপজেলা প্রশাসন সবসময় এমন জনকল্যাণমূলক উদ্যোগে পাশে থাকবে।’