কর্মসংস্থান ও বেকার ভাতার দাবিতে যুব সমাবেশ

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়  © টিডিসি ফটো্

করোনার মহামারিতে বিভিন্ন সেক্টরে চাকরি হারিয়ে বেকার হয়ে যাওয়া হতাশ যুবকদের জন্য কর্মসংস্থান ও বেকার ভাতার দাবিতে যুব সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ যুব শক্তি। শুক্রবার (২০ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে যুব শক্তি প্রধান উপদেষ্টা হানিফ বাংলাদেশী বলেন, গত ১২ বছরে ক্রমাগত আমাদের জিডিপি বেড়েছে। আমদের বাজেটের আকার দিনকে দিন বড় হয়েছে কিন্তু সে অনুপাতে গত ১২ বছরে দেশে উৎপাদনমুখী বা কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার মতো বিনিয়োগ হয়নি, যৎসামান্য বিনিয়োগ যা হয়েছে, তাও হয়েছে সেবা খাতে। প্রকৃতপক্ষে দেশের জিডিপি বৃদ্ধি কিংবা দেশের বাজেটের আকার আয়তন বাড়ার তুলনায় দেশে বিনিয়োগ বাড়েনি বরং কমেছে। তাহলে আমাদের এইসব টাকা গেলো কোথায়?

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে বেকার সমস্যা একটা মহামারি আকার ধারন করেছে করোনার মহামারিতে সে সমস্যা আরো প্রকট আকার ধারণ করেছে। দেশে বর্তমানে শুধু শিক্ষিত বেকার ৭৪ লাখ। এছাড়াও প্রশিক্ষিত চাকুরিচ্যুত, বিদেশ ফেরত সব মিলিয়ে প্রায় ৪ কোটি যুবক বেকার জীবনযাপন করছে। আমাদের ৪ দফা দাবিপূরণ হলে দেশের যুবকদের সমস্যা অনেকটাই লাঘব হবে।

সমাবেশ থেকে বাংলাদেশ যুব শক্তির ৪ দফা দাবি ঘোষণা করা হয়। এসব হচ্ছে-

১) শিক্ষিত-প্রশিক্ষিত করোনাকালীন চাকুরিচ্যুত ও বিদেশ ফেরত বেকার যুবকদের মধ্যে যারা আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চায় তাদেরকে সহজ শর্তে সহজ কিস্তিতে বিনা সুদে ঋণ প্রদান করতে হবে। 

২) বিদেশে যেতে ইচ্ছুক যুবকদের সরকারি খরচে বিদেশ পাঠাতে হবে, যাওয়ার পর কিস্তিতে অর্থ পরিশোধের ব্যবস্থা রাখতে হবে।

৩) চাকুরি করতে ইচ্ছুক বেকার যুবকদের জন্য সরকারি, আধা সরকারি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে শূন্য পদে তড়িৎ নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে। করোনাকালীন চাকুরিচ্যুতদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। 

৪) চাকুরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ করতে হবে, আবেদন ফি মওকুফ করতে হবে ও চাকুরি না পাওয়া পর্যন্ত বেকার ভাতা দিতে হবে।

মানবনবন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ যুব শক্তির সভাপতি জিয়াউর রহমান বলেন, গত ১২ বছরে শুধুমাত্র পাচার হয়েছে প্রায় ১০ লক্ষ কোটি টাকা। এই টাকাকে যদি বাংলাদেশের ৮৭ হাজার গ্রামে ভাগ করেন তাহলে গ্রাম প্রতি এর পরিমান দাড়ায় ১০ কোটি টাকারও বেশি, ৪৫৫৪টি ইউনিয়নে ভাগ করলে প্রতি ইউনিয়নের পাচার হয়েছে প্রায় ২২০ কোটি টাকা বা ৫০৭টি উপজেলা ভাগ করলে উপজেলা প্রতি পাচার হয়েছে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা। এই টাকা প্রতি উপজেলায় বিনিয়োগ করা গেলে, আমাদের যুব সমাজের কর্মসংস্থানের সংকট অনেকাংশে কমে আসতো এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতির স্বাভাবিক নিয়মে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের পথ সৃষ্টি করতো।

তিনি আরও বলেন, করোনাকালে সরকার দেশের বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ীদের জন্য বিশেষ প্রণোদনা ঘোষণা করলেও অসহায় বেকার যুবকদের জন্য কোন ধরণের প্রণোদনা ঘোষণা করা হয়নি। আমরা অবিলম্বে বিশেষ প্রণোদনা ঘোষণা করে হতাশাগ্রস্ত যুবকদের জন্য বেকার ভাতা ও নতুন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে সমাজের মূল স্রোতধারায় তাদেরকে অন্তর্ভুক্ত করা দাবি জানাচ্ছি।

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, ইকবাল আমিন, ডা. আব্দুর রাজ্জাক, শেখ নাসির উদ্দিন, আলম চৌধুরী, মীর মোজাম্মেল হোসেন মিলন, নয়ন আহম্মেদ, মো. শামছুদ্দিন, আব্দুল মোমিন, মো. কাউছার প্রমুখ।


সর্বশেষ সংবাদ