সরকারি চাকরি: শিগগির পুরোদমে শুরু হচ্ছে নিয়োগ প্রক্রিয়া
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৬ জুন ২০২১, ১২:২৭ PM , আপডেট: ০৬ জুন ২০২১, ০১:০৩ PM
করোনার প্রাদুর্ভাবে আটকে ছিল সব ধরণের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ প্রক্রিয়া। প্রায় এক বছর বন্ধ থাকার পর আবারও পুরোদমে এসব নিয়োগের প্রক্রিয়া শিগগির শুরু হচ্ছে। সরকারি দফতরগুলোতে অর্ধ লক্ষাধিক পদে নিয়োগের জন্য অপেক্ষায় রয়েছে প্রায় এক কোটি প্রার্থী। আগামী অর্থবছরই এসব নিয়োগ সম্পন্ন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর সরকারি চাকরির নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করেছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগ কার্যক্রম মন্ত্রণালয়, সরকারি দফতর-সংস্থার মাধ্যমে দেয়া হলেও তা এখনও স্থগিত রয়েছে বলে জানা গেছে।
পিএসসি সূত্রে জানা গেছে, দুই হাজার সহকারী সার্জন নিয়োগের ৪২তম (বিশেষ) বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মৌখিক পরীক্ষা (ভাইভা) শুরু হয়েছে আজ রবিবার (৬ জুন)। তাছাড়া ৪১তম প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশের অপেক্ষায় আছে। আর ৪৩ এর আবেদন গ্রহণ চলছে।
জানা গেছে, গত বছরের মার্চে দেশে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পর বিভিন্ন ধাপে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়। ধাপে ধাপে লকডাউন ও সরকারি বিধিনিষেধ জারি করা হয়। মাঝে বিধিনিষেধ তুলে নেয়া হলেও এ বছর নতুন করে দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণ বৃদ্ধির ফলে এই বিধিনিষেধ আবারও জারি করা হয়। তা এখনও বহাল থাকায় তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর সরকারি নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠানেই লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা হওয়ার পরও নিয়োগ কার্যক্রম ঝুলে আছে। কোন কোন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর কয়েক বছর পেরিয়ে গেলেও নেয়া হচ্ছে না পরীক্ষা।
দেখা গেছে, নিয়োগ বিধি এবং মামলা জটিলতার কারণেও অনেক শূন্য পদে নিয়োগ দেয়া যাচ্ছে না। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের এসব নিয়োগ বিধি সংশোধন ও মামলা নিষ্পত্তির প্রাথমিক কাজ শেষ করতেই কেটে যাচ্ছে বছরের পর বছর। এদিকে ফি দিয়ে আবেদন করেও পরীক্ষা না দিয়েই চাকরির বয়স শেষ হচ্ছে অসংখ্য প্রার্থীর। ফলে তাদের মধ্যে বাড়ছে ক্ষোভ ও হতাশা। তার ওপরে করোনা পরিস্থিতি যুক্ত হওয়ায় এ সঙ্কট আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে।
এদিকে গত বছরের মার্চে করোনা পরিস্থিতি শুরু হলেও তার আগে ফেব্রুয়ারিতে প্রথম-দ্বিতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে ২০টি মন্ত্রণালয়, দফতর ও সংস্থায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। পরে মার্চে ১৫টি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলেও সে বছরে নার্স ছাড়া আর তেমন উল্লেখযোগ্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়নি।
চলতি বছরের শুরুতে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে জানুয়ারি থেকে আবারও নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করে পিএসসি। কিন্তু দুই মাস ধরে করোনার প্রকোপ আবারও বেড়ে যাওয়ায় নিয়োগ কার্যক্রমে অনেকটা স্থবিরতা তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে নিয়োগ পরীক্ষার অপেক্ষায় রয়েছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৩৫ হাজার পদে ১৭ লাখ প্রার্থী। খাদ্য অধিদফতরের অধীনে সাড়ে ১১শ’ পদের বিপরীতে নিয়োগের অপেক্ষায় রয়েছেন ১৪ লাখ প্রার্থী। এছাড়া বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দেশের বিভিন্ন বিভাগে সাড়ে ১৯ হাজার পদের বিপরীতে অবেদন করেছেন প্রায় ৫৪ লাখ প্রার্থী। শিগগির এদের পরীক্ষা শুরু হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
তবে চাহিদা মোতাবেক সরকারি জনবল নিয়োগে পরীক্ষার আয়োজন করা হচ্ছে বলে জাননা পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (নন ক্যাডার) নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে সরকারি নিয়োগের চাহিদা কমে গেছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে যে চাহিদা পাঠানো হয়েছে তার ভিত্তিতে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করে যোগ্যদের তালিকা তৈরি করে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে নতুন করে কয়েকটি সরকারি দফতর-সংস্থায় জনবল নিয়োগের চাহিদা এসেছে। আমরা ইতোমধ্যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষ করে চূড়ান্তভাবে পাস করা প্রার্থীদের তালিকা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হবে।