নতুন দুই দাবি যুক্ত করে কঠোর আন্দোলনের প্রস্তুতি চাকরিপ্রার্থীদের

  © ফাইল ফটো

সব ধরনের চাকরিতে প্রবেশের বয়সসমী ৩৫ বছর করতে সরকারকে ২৮ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছিল বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ। তবে সে দাবি পূরণ হয়নি। ফলে আগের দাবির সাথে আরও দুই দাবি যোগ করে কঠোর আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন চাকরিপ্রার্থীরা। এরমধ্যে বেসরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৪০ বছর এবং শিক্ষক নিবন্ধনের বয়স ৪৫ বছর করার দাবি রয়েছে।

গত ২০ জুলাই রাজধানীর বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে এক সাংবাদিক সম্মেলন করে আল্টিমেটাম দেন চাকরিপ্রার্থীরা। সেদিন বলা হয়, ২৮ দিনের মধ্যে দাবির বিষয়ে সরকার কোনও ঘোষণা না দিলে দেশের ৬৪ জেলার নেতাকর্মীদেরকে নিয়ে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হবে। তখন তারা প্রয়োজনে মরবেন তবুও রাজপথ ছাড়বেন না বলে ঘোষণা দেন।

জানা গেছে, সেই দাবি না মানায় এখন জেলা পর্যায়ে প্রস্তুতি নিচ্ছেন আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীরা। প্রস্তুতি শেষে রাজধানীর শাহবাগে বড় আকারে কর্মসূচি পালন করবেন তারা। তবে তার আগে আনুষ্ঠানিকভাবে তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে। সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করাসহ আরও দুটি দাবি তারা নতুন করে যুক্ত করছেন।

বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদের সভাপতি ইমতিয়াজ হোসেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘বেকার সমাজ ধাপে ধাপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আসছে। এসব সমস্যা সমাধানে আমরা সরকারকে আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম। কিন্তু মঙ্গলবার সে সময় শেষ হলেও দাবি মানা হয়নি। এ কারণে আমরা বড় কর্মসূচি পালনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। শাহবাগে বড় আকারে সবাইকে নিয়ে কর্মসূচি পালন করা হবে।’

নতুন দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এখন আমরা বেসরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৪০ বছর এবং শিক্ষক নিবন্ধনের বয়স ৪৫ বছর করার দাবিও যোগ করছি। তারা আমাদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন। বেকার সমাজ যদি বঞ্চিত হয়, তাহলে আর হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না।’ দাবি আদায় না করে ঘরে ফেরা হবে না বলেও জানিয়ে দেন তিনি।

প্রসঙ্গত, টানা কয়েক বছর ধরে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে আন্দোলন করছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ। তবে জাতীয় সংসদে কণ্ঠভোটে নাকচ হয়েছে ৩৫-এর সব চাওয়া-পাওয়া। তারপরও আন্দোলন থেকে সরে আসেননি আন্দোলনকারীরা। সাংগঠনিকভাবে কিছুটা গুছিয়ে উঠে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা।

২০১৯ সালে কয়েক দফা কর্মসূচি পালন ও পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ঘটেছে গ্রেফতারের ঘটনাও। এরইমধ্যে তাদের মধ্যে নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব ও মতবিরোধ দেখা দেওয়ায় আন্দোলন কিছুটা ঝিমিয়ে পড়েছিল। এরমধ্যে গত বছরের ২৫ এপ্রিল চাকরি প্রত্যাশীদের বহুল কাঙ্ক্ষিত চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার প্রস্তাব জাতীয় সংসদে ওঠে।

তবে তা নাকচ করে দিয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছিলেন, পড়াশোনা শেষ করার পর একজন ছাত্র অন্তত সাত বছর সময় পেয়েছে। এটা অনেক সময়। তাছাড়া এর আগে চাকরির বয়স ২৫ বছর ছিল, সেখান থেকে ২৭ ও পরবর্তীতে ৩০ বছর করা হয়। সে হিসেবে এখন বাড়ানোর যৌক্তিকতা নেই।

যদিও করোনার কারণে সুর কিছুটা নরম করেছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। তিনি জানিয়েছেন, করোনার মধ্যে চাকরিপ্রার্থীদের ক্ষতি কীভাবে পুষিয়ে দেওয়া যায়, সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলাপ করবেন তিনি। তবে পরে আর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে দেখা যায়নি।


সর্বশেষ সংবাদ