বইমেলার পঞ্চম দিনে ১৪৩ বই, দেখে নিন পছন্দের বইগুলো
অমর একুশে বইমেলার পঞ্চম দিনে নতুন বই এসেছে ১৪৩টি। আজ শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বাংলা একাডেমি থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৪৩টি নতুন বইয়ের মধ্যে গল্প ২০টি, উপন্যাস ১৮টি, প্রবন্ধ ৯টি, কবিতা ২৮টি, গবেষণা ২টি, ছড়া ৩টি, শিশুসাহিত্য ৫টি, জীবনী ৫টি, রচনাবলি ১টি, মুক্তিযুদ্ধ ৭টি, বিজ্ঞান ৪টি, ভ্রমণ ৩টি, ইতিহাস ৩টি, রাজনীতি ১টি, বঙ্গবন্ধু ৬টি, ধর্মীয় ১টি, অনুবাদ ১টি, সায়েন্স ফিকশন ৪টি ও অন্যান্য ২২টি।
বাংলা একাডেমি জানায়, এদিন সকাল ১১টায় মেলা শুরু হয়। রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলে। বিকেল ৩টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী: উন্নয়নের নারী শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জোবাইদা নাসরীন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন ফওজিয়া মোসলেন এবং তাসমিমা হোসেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নাছিমা বেগম এনডিসি।
প্রাবন্ধিক বলেন, মুক্তিযুদ্ধে নারীদের শুধু বীরের স্বীকৃতি প্রদানই নয়; যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বাধীন দেশে এই বীর—নারীদের পুনর্বাসন করার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল নারী পুনর্বাসন কেন্দ্র। শুধু বীর নারীর মর্যাদার মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে যায়নি নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের নারীর মনবাধিকার নিশ্চিতের বিষয়টি; ১৯৭২ সালে রচিত সংবিধানে নারীর মানবাধিকার ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে কর্মক্ষেত্রে নারীর ইতিবাচক অগ্রগতি আমাদের অনেকটাই আশার জায়গা তৈরি করেছে। এর বিপরীতে নারীর নিপীড়ন এবং নির্যাতনের চিত্রটিও কম ভয়াবহ নয়। নারীর জন্য নিরাপদ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে পারলে তা বাংলাদেশের টেকসই অগ্রগতিকে সুনিশ্চিত করবে।
আরও পড়ুন: সময় বাড়ছে বইমেলার, শেষ হবে ১৭ মার্চ
আলোচকবৃন্দ বলেন, যেকোনো দেশের জাতীয় বিকাশে নারীর যেমন ভূমিকা থাকে আবার এই বিকাশের মাধ্যমে নারীরও উন্নয়ন ঘটে। নারী আন্দোলন একরৈখিক আন্দোলন নয়। নারী আন্দোলনের কেন্দ্রেই আছে লৈঙ্গিক সমতা অর্জন। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পরও নারীকে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক মনে করার প্রবণতা দেখা যায়। টেকসই উন্নয়নের একটি শর্ত হলো সকল ক্ষেত্রে নারীর প্রতি বৈষম্য ও সহিংসতা দূর করা। সুযোগ পেলে ঘরে ও বাইরে নারী তার যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখতে পারে। নারীর উন্নয়নের জন্য পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা দূর করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে নাছিমা বেগম এনডিসি বলেন, নারী ও পুরুষকে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে না দেখে যেদিন মানুষ হিসেবে দেখা হবে সেদিনই বাংলাদেশ তার কাক্সিক্ষত সমতার সমাজ তৈরি করতে সক্ষম হবে। নারীকে তার অধিকার আদায়ে সোচ্চার হতে হবে। পাশাপাশি পরিবার থেকেই শিশুকে নৈতিক মূল্যবোধের শিক্ষা দিতে হবে এবং নারীর প্রতি সম্মানজনক দৃষ্টিভঙ্গি লালনের মনোভাব গড়ে তুলতে হবে।
আরও পড়ুন: ঢাকাকে নতুনভাবে জানাবে এম মামুনের ‘আদি অন্তে ঢাকা’
আজ লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের বই নিয়ে আলোচনা করেন কবি অসীম সাহা এবং অনুবাদক রফিক—উম—মুনীর চৌধুরী। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন কবি মতিন বৈরাগী এবং মারুফ রায়হান। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী মাসকুর—এ—সাত্তার কল্লোল, মাহিদুল ইসলাম এবং নায়লা তারান্নুম চৌধুরী কাকলী। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন ‘বেণুকা ললিতাকলা কেন্দ্র’—এর নৃত্যশিল্পীবৃন্দ।
আগামীকালের অনুষ্ঠানসূচি
আগামীকাল রবিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) অমর একুশে বইমেলার ষষ্ঠ দিন। মেলা চলবে বেলা ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী: বিশ্বশান্তি শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন জিয়া রহমান। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন জালাল ফিরোজ এবং খান মাহবুব। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন শ্যামসুন্দর সিকদার।
আরও পড়ুন: বইমেলায় আরাফাত শাহরিয়ারের ‘খুদে গোয়েন্দাদের সফল অভিযান’