ইহুদিবাদ নিয়ে নতুন বই ‘দ্য কিংডম অব আউটসাইডারস’ বইমেলায়

  © টিডিসি ফটো

অমর একুশে গ্রন্থমেলায় পাওয়া যাচ্ছে তরুণ সাংবাদিক ও মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক গবেষক সোহেল রানার এ বছরের আলোচিত বই ‘দ্য কিংডম অব আউটসাইডারস’। এটি মূলত রাজনৈতিক ইতিহাসের বই। বইটি লেখকের আড়াই বছরের সাধনার ফসল।

লেখক জানিয়েছেন, ফোরাত-দজলা বিধৌত মেসোপটেমিয়াতে ছিল আদি ইহুদিদের বসবাস। এদেরই একটা অংশ এসে পরবর্তীতে ঠাঁই নেয় প্যালেস্টাইনে। প্যালেস্টাইন তখন জনশূন্য কোনো ভূমি ছিল না। মানে ইহুদিরা-ই সেই ভূখন্ডের একমাত্র জাতিগোষ্ঠী নন, আদি বাসিন্দাও নন। এরপর রোমানদের তাড়া খেয়ে তারা ছড়িয়ে পড়ে ভূমধ্যসাগরের আশপাশে।

ইউরোপের খ্রিস্টানদের হাতে কয়েক দফা গণহত্যার পরও নাটকীয়ভাবে ঘুরে দাঁড়ায় ইসরায়েলের সন্তানরা। কয়েক শতাব্দীর ব্যবধানে রাশিয়া এবং সবশেষ পোল্যান্ড ও জার্মানিতে ভয়ংকর গণহত্যা সামলিয়ে আরবদের বিদ্রোহ ও প্রতিরোধের মুখে প্যালেস্টাইনে গড়ে তোলা হয় ‘ইসরায়েল’ রাষ্ট্র।

এই দীর্ঘ পথ-পরিক্রমায় আধুনিক ইউরোপের অর্থনীতির ভিত্তি রচিত হয়েছে তাদের হাতে। তারাই সুদী কারবারের জনক, গড়ে তুলেছেন ব্যাংকিং সিস্টেম। তাদের হাতেই বিকশিত হয়েছে পুঁজিবাজারের ধারণা। উনিশ শতকের শেষভাগে রাশিয়াতে দমন-নিপীড়নের মুখে ইহুদিদের একটা অংশের আশ্রয় হয় প্যালেস্টাইনে।

তবে এই ভূখণ্ড অভিমুখে রীতিমত ইহুদি স্রোত নামে গত শতকের ত্রিশের দশকের পর। ইউরোপ তখন ফুঁসছে ইহুদিবিরোধী চেতনায়। ধর্মযাজক ও রাজনীতিকদের হাতে দফায় দফায় বিকৃতির শিকার বাইবেলের রেফারেন্স দিয়ে নেতৃস্থানীয় ইহু্দীরা সাধারণ ইহুদিদের বুঝিয়েছেন- এটা তাদের প্রমিজ ল্যান্ড!

বিতাড়ন থেকে প্যালেস্টাইনে ফেরা অবধি মাঝখানে কেটে গেছে প্রায় দুই হাজার বছর। এত বছর পরে এসে ইহুদিরা দাবি করছে, প্যালেস্টাইন তাদেরই ভূখন্ড! এই দাবি কতখানি সত্য? কতখানি যৌক্তিক? কতখানি ন্যায়সংগত? এসবের জবাব খুঁজতেই পাঠকরা বিচরণ করবেন ‘দ্য কিংডম অব আউটসাইডারস’-এ।

বইটিতে প্রসঙ্গক্রমে থাকছে ইহুদি ইতিহাস, রাজনীতি, সন্ত্রাসবাদ ও দখলদারিত্ব। সুদপ্রথা, পুঁজিবাজার ও ব্যাংকিং সিস্টেমের উত্থান। মুসলমানদের স্পেন জয়, ক্রুসেড, কলম্বাসের আমেরিকা মিশন, ইসরায়েলের সাইবার যুদ্ধ, অটোমান সাম্রাজ্যের পতন। সৌদি আরব,জর্ডান, ইরাক ও লেবানন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারন ও ফলাফল।

জার্মানিতে নাৎসিদের উত্থান ও হলোকাস্ট, পেট্রোডলার ,বেলফোর ডিক্লারেশন ও ইসরায়েল রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা, চার চারটি আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের কারন ও ফলাফল, বর্তমান আরব শাসকদের ইসরায়েল প্রীতি, বিডিএস মুভমেন্ট, মোসাদের কিলিং মিশন, মিশরে মুসলিম ব্রাদারহুড ও জাতীয়তাবাদের দ্বন্দ্ব, জামাল আবদেল নাসেরের উত্থান, সুয়েজ খাল জাতীয়করণ ও আরবদের তেল অবরোধ, হামাস-ফাতাহর উত্থান ও সংগ্রাম, লেবাননের হিজবুল্লাহ এবং সদ্য ঘোষিত ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি নিয়ে তথ্য-উপাত্ত ও বিশ্লেষণ।

মোট কথা, ইহুদিবাদকে ঘিরে গত দেড়শো বছরের মধ্যপ্রাচ্য ও বৈশ্বিক রাজনীতিক গরুত্ব পেয়েছে বইটিতে। গার্ডিয়ান প্রকাশনীর এই বইটি পাওয়া যাচ্ছে অমর একুশে গ্রন্থমেলার ২০১-২০২ নম্বর স্টলে (মাতৃভাষা প্রকাশ)। এছাড়া, রকমারি, বইপাঠাই ডটকম, পূর্বাশা ডটকম, বইবাজার ডটকমসহ অন্যান্য অনলাইনেও বইটি পাওয়া যাচ্ছে।


সর্বশেষ সংবাদ