বইমেলায় এসেছে ব্রিটিশ নাগরিকের বাংলায় লিখা বই
ব্রিটিশ নাগরিকদের জীবনধারা তুলে ধরে বাংলা ভাষায় বই প্রকাশ করেছেন মাইক শেরিফ। মাইক শেরিফের লেখা 'এইমস শেরিফের জীবন' বইটি ঢাকার একুশে বইমেলায় নাগরী প্রকাশনীর ৪৮০ ও ৪৮১ স্টলে পাওয়া যাচ্ছে। এর আগেও তিনি বাংলায় আরেকটি বই লিখেন।
ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষেরা ব্রিটিশ শাসনকালীন শাসকদের সম্পর্কে জানলেও সেসময়কার সাধারণ ব্রিটিশ নাগরিকদের জীবনযাত্রা সম্পর্কে খুব কমই জানে। তাদের জীবন সম্পর্কে জানানোর জন্যই তার এ বই।
১৯৮৭ সালে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার হয়ে শিশুদের নিয়ে কাজ করতে প্রথম বাংলাদেশে আসেন মাইক। বাংলাদেশে তার প্রথম ঠিকানা হয় কুড়িগ্রাম। সেই থেকে তিনি বাংলাদেশে আসা-যাওয়ার মধ্যে আছেন। শিশুদের নিয়ে কাজ করতে গিয়ে তার প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় ভাষা। এছাড়া এ দেশে থাকতে থাকতে এখানকার ভাষার প্রতিও ভালবাসা জন্মে যায় তার। ২০০৬ সাল থেকে বাংলা শিখতে শুরু করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ১৯৫২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পত্রিকায় যা ছাপানো হয়েছিলো?
মাইকের বই ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের যুগ সম্পর্কে। তার প্রপিতামহের চাচাতো ভাইয়ের জীবন এবং ভারতের সরাসরি ব্রিটিশ শাসন প্রায় একই সময়। অনেকে ব্রিটিশ শাসকদের সম্পর্কে জানে এবং এসময়কার এইমস শেরিফ একজন সাধারন মানুষ ছিলেন। এ যুগের ব্রিটিশ সাধারণ মানুষের অবস্থা এখন পর্যন্ত খুব অল্প লেখা হয়েছে বাংলায়।
বাইশ বছর পর্যন্ত এইমস শেরিফ লিখতে পড়তে পারেননি। তিনি স্কুলে যেতেন না। তার পরিবারের দারিদ্র্য অবস্থার কারণে ছয় বছর বয়স থেকে তিনি একটা খোলা ইটভাটায় কাজ করতেন। তার লেখা পড়া শুরু করেছিলেন খ্রিস্টান মিশনারির মাধ্যমে। পরে তিনি একজন সমাজতন্ত্রী ও শ্রমিকদের নেতা হয়েছিলেন।
এইমস শেরিফ একজন বেকার মানুষের আন্দোলনের নেতা ছিলেন। তিনি বিশেষ করে মানুষের ভোটাধিকার গুরুত্ব দিয়েছিলেন।
আন্দোলনে তার নেতৃত্ব এবং স্থানীয় সরকার কাউন্সিলে কাজ করার কারণে এইমস শেরিফের জীবন সম্পর্কে নথিপত্র ও ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। তাই অন্যসব সাধারণ মানুষের চেয়ে তার জীবনের বেশি তথ্য আছে। বই লেখার জন্য মাইক এ তথ্য ব্যবহার করেছেন।
এইমস শেরিফের জীবনের দর্শন তার বক্তৃতায় খুঁজে পাওয়া যায়। তার স্বপ্ন ছিলো এমন একটা পৃথিবী 'যেখানে এ জাতি বা সে জাতি থাকবে না বরং মানবজাতি একটি পরিবার হবে, একটি আইন দিয়েঃ শান্তি; এক প্রয়োজনে ভ্রাতৃত্ব সম্পর্কঃ এক উপায়ে শ্রমঃ এবং এক প্রভুঃ ঈশ্বর। এ দর্শন মাইকের জন্য একটি প্রেরণা ছিলো।
এর আগেও বাংলা ভাষায় বই লিখেছেন মাইক। ২০১৮ সালে একুশে বইমেলায় মাইকের প্রথম বাংলা বই ‘আমার জীবন এবং বাংলাদেশ’ প্রকাশ হয়। শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অসিম চৌধুরীর সহযোগিতায় তিনি বাংলা শিখেন। এরপর ২০১০ ও ২০১৩ সালে তিনি বাংলা ভাষায় মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের পড়াশোনা সম্পন্ন করেন। এরপর বাংলায় একটি বই লেখার আগ্রহ জাগে তার।
মাইক বলেন, তার এবারের বইটি ব্রিটিশ সাম্রাজ্য সম্পর্কে। তার প্রপিতামহের চাচাতো ভাই এইমস শেরিফের জীবন এবং ভারতের সরাসরি ব্রিটিশ শাসন প্রায় একই সময়ে ছিল। সে যুগের ব্রিটিশ সাধারণ মানুষের অবস্থা নিয়ে বাংলায় এখনো খুব বেশি লেখা হয়নি।
আরও পড়ুন: প্রমিত ভাষা ব্যবহার জরুরি: ঢাবি উপাচার্য
এইমস শেরিফ সম্পর্কে মাইক শেরিফ বলেন, বাইশ বছর পর্যন্ত এইমস শেরিফ পড়ালেখা করেননি। তিনি স্কুলে যেতেন না। তার পরিবারের দারিদ্র্যের কারণে তিনি খোলা ইটভাটায় কাজ করতেন। লেখাপড়া শুরু করেছিলেন খ্রিস্টান মিশনারির মাধ্যমে। পরে তিনি একজন সমাজতন্ত্রী ও শ্রমিকনেতা হয়েছিলেন। বেকার মানুষের আন্দোলনের নেতা ছিলেন তিনি। বিশেষ করে মানুষের ভোটাধিকারের ব্যাপারে গুরুত্ব দিয়েছিলেন।
আন্দোলনে নেতৃত্ব এবং স্থানীয় সরকার কাউন্সিলে কাজ করার কারণে এইমস শেরিফের জীবন সম্পর্কে নথিপত্র ও ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। তাই অন্যসব সাধারণ মানুষের চেয়ে তার জীবনের বেশি তথ্য আছে। বই লেখার জন্য মাইক এসব তথ্য ব্যবহার করেছেন।