‘শরীফ’ থেকে ‘শরীফা’ হওয়ার গল্প পাঠ্যবই থেকে ছিঁড়ে প্রতিবাদ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের

ট্রান্সজেন্ডার বির্তক

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলোসফির খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাব
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলোসফির খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাব  © সংগৃহীত

বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে ট্রান্সজেন্ডারের গল্প ঢুকিয়ে তাদের মগজধোলাই করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলোসফির খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাব। এর প্রতিবাদে এই পাঠ্যবই থেকে ‘শরীফ’ থেকে ‘শরীফা’ হওয়ার গল্পের পাতা ছিঁড়ে প্রতিবাদ করেছেন তরুণ এই শিক্ষক।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে ‘বর্তমান কারিকুলামে নতুন পাঠ্যপুস্তক: বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ প্রতিবাদ জানান। জাতীয় শিক্ষক ফোরাম এই সেমিনারের আয়োজন করে।

আরও পড়ুন: পাঠ্যবইয়ে হিজড়া: ‘শরীফ’ থেকে ‘শরীফা’ হওয়ার গল্পে তুলকালাম

এই সেমিনারে আসিফ মাহতাব নতুন কারিকুলামের সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান পাঠ্যবইটি নিয়ে আসেন। পরে আলোচনার এক পর্যায়ে তিনি বলেন, সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান পাঠ্যবই ‘শরীফ’ থেকে ‘শরীফা’ হওয়ার গল্প আছে। আমি বইটি বাজার থেকে কিনে নিয়ে এসেছি। এখানে লেখা আছে ছোটবেলা সবাই আমাকে ছেলে বলতো। কিন্তু আমি নিজেই একসময় বুঝলাম আমার শরীরটা ছেলের মতো হলেও আমি মনে মনে একজন মেয়ে। 

“সে (ছেলে) যদি মেয়ে হয় তাহলে তার বিয়ে হবে কার সঙ্গে? অবশ্যই ছেলের সঙ্গে। তার মানে এটা সমকামী, যা আমাদের দেশে অবৈধ। কিন্তু সেটাকে বৈধতা দেওয়া হচ্ছে এই গল্পের মাধ্যমে। এটাতো স্কুলে ছেলেমেয়ের এক প্রকার ব্রেনওয়াশের মতো করা হচ্ছে, যেটা ইউরোপ-আমেরিকাতে করা হয়।”

এরপর সেমিনারে সবার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের যাদের সামর্থ্য রয়েছে তারা এই বইটি বইয়ের দোকান থেকে ৮০ টাকা দিয়ে কিনে গল্পটির পাতা দুটি ছিঁড়বেন। পরে দোকানে আবার দিয়ে দিবেন। দিয়ে বলবেন, সেটি অর্ধেক দামে বিক্রি করতে। যাতে মানুষের সতর্ক হয়। 

আরও পড়ুন: নতুন কারিকুলাম শিক্ষক-অভিভাবকরা প্রত্যাখ্যান করেছেন: চরমোনাই পীর

“প্রতিবাদটা এমন হতে পারে ‘শরীফ’ থেকে ‘শরীফা’ হওয়া পাতা দুটি ছিড়ে আবার তাদের (দোকানদার) কাছে দিয়ে দিবো। আমার টাকা দিয়ে আমি ছিঁড়বো।”

জানা গেছে, ২০১৩ সালের নভেম্বরে সমাজের মূলধারায় সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে হিজড়া জনগোষ্ঠীকে তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় সরকার। ২০১৪ সালের ২৬ জানুয়ারি হিজড়াদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে গেজেট প্রকাশ করা হয়।

মূলত সপ্তম শ্রেণির এই পাঠ্যবইয়ে হিজড়া জনগোষ্ঠীর প্রতিবন্ধকতা থাকলে সমাজে এগিয়ে যাচ্ছে বলে আলোচনা করা হয়েছে। যদিও সেখানে তাদের বেড়ে উঠা, সামাজিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত, শিক্ষাগ্রহণের সুযোগ না থাকা ইত্যাদি উঠে এসেছে এই অধ্যায়ে।


সর্বশেষ সংবাদ