প্রবাসী কোটা নিয়ে বিপাকে ভর্তিচ্ছুরা
দ্বিতীয়বারের মতো কৃষি গুচ্ছের অধীনে সাত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২৯ নভেম্বর। এতে ৩ হাজার ৪১৯টি আসনে ভর্তির জন্য পরীক্ষা দেয় শিক্ষার্থীরা।
এবারের পরীক্ষায় বেশ কয়েকজন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী মেধা তালিকায় সামনের দিকে থাকলেও ভর্তি পরীক্ষায় আবেদনের সময় প্রবাসী কোটায় টিক দিয়ে বিপাকে পড়েছে। আর এতে কর্তৃপক্ষের বেঁধে দেয়া পবিপ্রবিতে ভর্তি হতে বাধ্য করা হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। ওই শিক্ষার্থীদের সাধারণ মেধা তালিকার অবস্থান দিয়েই গুচ্ছের অন্তভুক্ত যেকোনো সাত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার কথা।
আরও পড়ুন: নতুন বছরে শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছানো নিয়ে শঙ্কা
এদিকে আয়োজকরা বলছেন গুচ্ছের সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শুধু পবিপ্রবিতে প্রবাসী কোটা থাকায় এ কোটায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হচ্ছে । অন্যান্য কোটার ক্ষেত্রেও একই সমস্যায় পড়েছে শিক্ষার্থীরা। কৃষি গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষার নির্দেশিকায় বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে মুক্তিযোদ্ধা, উপজাতি, পোষ্য, দলিত, হরিজন, বিকেএসপি ও প্রবাসী এমন বিভিন্ন কোটায় আবেদনের সুযোগ রাখা হয়।
প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, মেধা তালিকায় এগিয়ে থাকলেও কোটার সুবিধা না নিয়েই শিক্ষার্থীরা নিজেদের পছন্দের বিষয় বা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পায়। আর কোটার সুযোগ নিতে চাইলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে সেটিও নিতে পারে। অর্থাৎ সাধারণ মেধা তালিকায় এগিয়ে থাকলে দুই উপায়েই ভর্তির সুযোগ পায় শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন: নোবিপ্রবিতে আবেদন করেছে ৫২ হাজার ২৮৫ জন
এদিকে জটিলতা কাটিয়ে সাধারণ মেধা তালিকায় অবস্থানের ভিত্তির সুযোগ চেয়ে সম্প্রতি ভর্তি কমিটির কাছে লিখিত আবেদন করেছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। আবেদনে তারা বলেছেন, প্রবাসী সংক্রান্ত যথেষ্ট তথ্য ও সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা না থাকার কারণে আমরা সাধারণ মেধা তালিকায় থেকেও ভর্তির বিষয় নির্ধারণ ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারণে বাধার সম্মুখীন হচ্ছি। আমরা প্রবাসী কোটাসংক্রান্ত জটিলতা থেকে মুক্ত করে সাধারণ মেধাক্রমের ভিত্তিতে ভর্তি হওয়ার জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। যদিও ভর্তিচ্ছুদের আবেদন আমলে নেয়ার সুযোগ নেই বলছে ভর্তি কমিটি।
এ বিষয়ে ভর্তি কমিটির সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. গিয়াসউদ্দিন মিয়া বলেন, যেহেতু শিক্ষার্থীরা ভর্তি আবেদনের সময় প্রবাসী কোটায় আবেদন করেছে। এজন্য তাদের আবেদন কোটার আবেদন হিসেবেই গৃহীত হয়েছে। যেহেতু প্রবাসী কোটা একটি মাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে। তাহলে তাদের সেখানেই ভর্তি হতে হবে।
আরও পড়ুন: ৫০ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ২৫ গুণ বাড়লেও শিক্ষার মান বাড়েনি
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, ভর্তি কমিটির এই এ সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই ন্যায়সংগত নয়। তিনি বলেন, একজন শিক্ষার্থী যদি মেধা তালিকায় এগিয়ে থাকে ও মেধার ভিত্তিতে ভর্তি হতে চায়, তাহলে তাকে অবশ্যই মেধার ভিত্তিতে ভর্তির সুযোগ দিতে হবে। সেটি না করে কর্তৃপক্ষের চাপিয়ে দেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে বাধ্য করা অন্যায়। সব ধরনের বিবেচনায় এখানে শিক্ষার্থীর অধিকার খর্ব করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গুচ্ছের অন্তর্ভুক্ত কৃষিবিজ্ঞান বিষয়ে ডিগ্রি প্রদানকারী সাতটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি), শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি), চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু), সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি), খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (খুকৃবি), পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।