বাকৃবিতে কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে প্রশাসনিক ভবনে তালা
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কম্বাইন্ড ডিগ্রির (বিএসসি ইন ভেটেরিনারি সায়েন্স অ্যান্ড অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি) দাবিতে প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা। এতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া প্রশাসনিক ভবনের ভেতরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
বুধবার (৬ আগস্ট) বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগান।
কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে টানা সাত দিন ধরে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন বাকৃবির পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা। পশুপালন অনুষদের ৫০১ শিক্ষার্থী কম্বাইন্ড ডিগ্রির পক্ষে স্বাক্ষরসংবলিত একটি তালিকা উপাচার্যের কাছে জমা দেন।
আন্দোলনের অংশ হিসেবে বুধবার দুপুর সাড়ে তিনটায় পশুপালন অনুষদের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে শিক্ষার্থীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
এ সময় তারা স্লোগান দেন ‘আমার সোনার বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘দাবি একটাই, কম্বাইন্ড ডিগ্রি চাই’, ‘এক পেশা, এক ডিগ্রি, এক দাবি’, ‘কম্বাইন্ড! কম্বাইন্ড!’
একই দাবিতে পৃথকভাবে মিছিল করেছে ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীরাও। পরবর্তী সময়ে দুই অনুষদের শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে একত্র হয়ে একযোগে স্লোগান দিতে থাকেন। পরে ভেটেরিনারি অনুষদের পক্ষ থেকে অনুষদের ডিন বরাবর লিখিত স্মারকলিপিও জমা দেওয়া হয়।
বিকেল ৪টায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ১৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসে। আলোচনায় উপাচার্য বলেন, ‘আমি এককভাবে সম্মিলিত ডিগ্রি চালুর সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। এ বিষয়ে একাডেমিক কাউন্সিলসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে নিরপেক্ষভাবে বিবেচনা করে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
আরও পড়ুন: বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটির বাস দুর্ঘটনার কবলে, ২৮ শিক্ষার্থী আহত
তবে আলোচনায় আশানুরূপ অগ্রগতি না থাকায় বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনে তালা দেন। এ সময় উপাচার্যের কার্যালয়ে শিক্ষক সমিতির নেতাদের সঙ্গে একটি বৈঠক চলছিল। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে শিক্ষার্থীরা তালা খুলে দেন।
আন্দোলনকারী এক তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমাদের এই যৌক্তিক আন্দোলনের সঙ্গে ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীরাও যুক্ত হয়েছেন। আমাদের ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা এবং পেশাগত মর্যাদার স্বার্থেই আমরা এক হয়েছি। শিক্ষকরা আমাদের দাবি শুনেছেন, আগামীকাল আলোচনা হবে—সেখানে আশানুরূপ সিদ্ধান্ত না এলে আন্দোলন আরও বেগবান হবে।’
এ বিষয়ে বাকৃবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান সরকার বলেন, পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীদের কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় ফ্যাকাল্টি মিটিং অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আলোচনায় বসবেন এবং দাবিগুলো উপস্থাপন করা হবে। সবদিক বিবেচনায় রেখে একটি যৌক্তিক সিদ্ধান্তে পৌঁছানো হবে।