চবির ভর্তি পরীক্ষায় কোটাধারীদের পাস নম্বর বেড়েছে, জেনে নিন খুঁটিনাটি
- সুমন বাইজিদ, চবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২০ PM , আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২৪ PM
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রথমবর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি আবেদন অনলাইনে শুরু হচ্ছে আগামী বুধবার (১ জানুয়ারি)। এদিন বেলা ১১টা থেকে শুরু হয়ে আবেদন প্রক্রিয়া চলবে ১৫ জানুয়ারি রাত ১১টা ৫৯মিনিট পর্যন্ত। তবে ১৮ জানুয়ারি রাত ১১টা ৫৯ পর্যন্ত ভর্তির আবেদন ফি জমা দেওয়া যাবে। শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. শামীম উদ্দিন খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ভর্তি কমিটির সচিব ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার (একাডেমিক) এস এম আকবর হোছাইন স্বাক্ষরিত ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এবার কোটাধারীদের পাস নম্বর বাড়িয়ে ৪০ করা হয়েছে। গত বছর ছিল ৩৫।
ভর্তির যোগ্যতা: যে সব আবেদনকারীর বাংলাদেশের যে কোনো শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২০২১ বা ২০২২ সালের মাধ্যমিক বা দাখিল বা সমমান পরীক্ষা এবং ২০২৩ বা ২০২৪ সালের উচ্চ মাধ্যমিক বা আলিম বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সাপেক্ষে ভর্তি নির্দেশিকায় উল্লিখিত সংশ্লিষ্ট ইউনিট বা উপ-ইউনিট/অনুষদ/বিভাগ/ ইনস্টিটিউট এ ভর্তির যোগ্যতা আছে, তারা ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য যোগ্য বিবেচিত হবেন। অর্থাৎ এবারও সেকেন্ড টাইম রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এছাড়া জিসিই (‘ও’ লেভেল অ্যান্ড ‘এ’ লেভেল) ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং সমমানের বিদেশী সার্টিফিকেটধারীদের ক্ষেত্রে যে সকল আবেদনকারী ২০২১ বা ২০২২ সালের জিসিই ‘ও’ লেভেল পরীক্ষায় এবং ২০২৩ বা ২০২৪ সালের জিসিই ‘এ’ লেভেল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে এবং যাদের ভর্তি নির্দেশিকায় উল্লিখিত ন্যূনতম যোগ্যতা রয়েছে, তারা সংশ্লিষ্ট ইউনিট/উপ-ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য যোগ্য বিবেচিত হবে।
এ ক্ষেত্রে সমতা নিরূপণ ফি বাবদ ১ হাজার টাকা পরিশোধ করে সমতা সনদ গ্রহণের প্রক্রিয়া ১ জানুয়ারি থেকে ১২ জানুয়ারি তারিখের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। সমতা নির্ধারণ সম্পন্ন হয়ে যোগ্য বিবেচিত হলে নির্ধারিত আবেদন ফি পরিশোধ করে যথানিয়মে নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে আবেদন করতে হবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির ওয়েবসাইট https://admission.cu.ac.bd-এ পাওয়া যাবে।
আবেদন প্রক্রিয়া: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে (https://admission.cu.ac.bd)-এ অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ভর্তিচ্ছুদের আবেদন সম্পন্ন করতে হবে।
আবেদন ফি: গতবারের মতো এবারও প্রতি ইউনিট/উপ-ইউনিটের আবেদন ফি ৯০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর সাথে প্রসেসিং ফি বাবদ ১০০ টাকা কাটা হবে। সুতরাং প্রতি ইউনিটে আবেদন ফি ১ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। নির্ধারিত আবেদন ফি মোবাইল ব্যাংকিং ‘রকেট’ বা ‘বিকাশ’-এর মাধ্যমে জমা দেওয়া যাবে।
নম্বর বন্টন: প্রতি সংশ্লিষ্ট ইউনিট/উপ-ইউনিটে ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ব্যবহারিক পরীক্ষায় (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) অংশগ্রহণ করতে হবে। ভর্তি পরীক্ষায় মোট প্রাপ্ত নম্বর থেকে প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কর্তন করা হবে। তবে এবার ‘সি’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষায় মোট প্রাপ্ত নম্বর থেকে প্রতিটি ১ নম্বরের প্রশ্নের ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ এবং প্রতিটি ২ নম্বরের প্রশ্নের ভুল উত্তরের জন্য ০.৫০ কর্তন করা হবে।
২০২২ সালের মাধ্যমিক বা দাখিল বা সমমান পরীক্ষা এবং ২০২৪ সালের উচ্চ মাধ্যমিক বা আলিম বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী ব্যতীত অন্য শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিক বা দাখিল বা সমমান এবং উচ্চ মাধ্যমিক বা আলিম বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে তাদের নিজ নিজ সর্বমোট (MCQ+SSC & HSC/সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএর গুণিতক + ব্যবহারিক (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) প্রাপ্ত নম্বর থেকে ৩ (পাঁচ) নম্বর কর্তন করে মেধা তালিকা প্রস্তুত করা হবে। এবারের ভর্তি পরীক্ষায় কোটা ধারী শিক্ষার্থীদেরও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সমান অর্থাৎ সর্বনিম্ন ৪০ নম্বর পেয়ে পাস করতে হবে, যা গত বছর ৩৫ নম্বর ছিল।
কেন্দ্র নির্বাচনের ক্ষেত্রে: এবারও প্রথমবর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও আরও দুটি বিভাগীয় শহরে অনুষ্ঠিত হবে। সেগুলো হলো- ঢাকা বিভাগে (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস) এবং রাজশাহী বিভাগীয় শহরে (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস)। একই সময় ও তারিখে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তবে বি-১, বি-২ ও ডি-১ উপ-ইউনিটের পরীক্ষা শুধুমাত্র চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হবে।
আবেদনকারী শিক্ষার্থী কোন বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা দিতে ইচ্ছুক আবেদনের সময় ইউনিট/উপ-ইউনিটে ১ম, ২য় ও ৩য় পছন্দের অপশন অর্থাৎ ৩টি কেন্দ্রের সবগুলো পছন্দ অনুযায়ী সঠিকভাবে নির্বাচন করতে হবে।
দ্বিতীয়বার আবেদনের সুযোগ: ২০২১ সালের মাধ্যমিক বা দাখিল বা সমমান পরীক্ষা এবং ২০২৩ সালের উচ্চমাধ্যমিক বা আলিম বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবে। তবে মাধ্যমিক বা দাখিল বা সমমান এবং উচ্চ মাধ্যমিক বা আলিম বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর থেকে ৩ নম্বর কর্তন করে মেধাতালিকা প্রস্তুত করা হবে। এটি গত বছর ৫ নম্বর কর্তন করে মেধাতালিকা প্রস্তুত করা হয়েছিল।
আরো পড়ুন: জবি ভর্তি পরীক্ষার জন্য চূড়ান্ত আবেদনের সময় আর তিনদিন
ইউনিটভিত্তিক তথ্য: এবারের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’ ও ‘ডি’ এ চারটি ইউনিট এবং তিনটি উপ-ইউনিট ’বি-১’, ’বি-২’ ও ‘ডি-১’ রয়েছে। এর মধ্যে ‘এ’ ইউনিটের অধীনে সকল বিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেরিন সায়েন্সেস অ্যান্ড ফিশারিজ অনুষদ/ইন্সটিটিউট, ‘বি’ ইউনিটের অধীনে কলা ও মানবিদ্যা অনুষদভুক্ত ৯টি বিষয় এবং শিক্ষা অনুষদভুক্ত শিক্ষা, ‘বি-১‘ উপ-ইউনিটের অধীনে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদভুক্ত নাট্যকলা, চারুকলা ও সংগীত বিভাগ, ‘বি-২‘ উপ-ইউনিটের অধীনে আরবি, ইসলামিক স্টাডিজ ও পালি বিভাগ, ‘সি’ ইউনিটের অধীনে ব্যবসায় অনুষদভুক্ত সকল বিভাগ, ‘ডি’ ইউনিটের অধীনে সমাজবিজ্ঞান অনুষদভুক্ত সকল বিষয়; আইন অনুষদভুক্ত আইন; উচ্চ মাধ্যমিক মানবিক শাখার শিক্ষার্থীর জন্য জীববিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা; মনোবিজ্ঞান বিভাগ। এছাড়া ‘ডি-১’ উপ-ইউনিটের অধীনে শিক্ষা অনুষদভুক্ত ফিজিক্যাল এডুকেশন এন্ড স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগ রয়েছে।
কোন ইউনিটের পরীক্ষা কবে: আগামী ১ মার্চ ‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষা দিয়ে শুরু হবে ভর্তি পরীক্ষা। ৮ মার্চ ‘বি’ ইউনিট, ১৫ মার্চ ‘সি’ ইউনিট এবং ২২ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে ‘ডি’ ইউনিটের পরীক্ষা।
আবেদন সংশোধনের সময়: ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়ার নিয়মাবলি চবির ভর্তির ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। আবেদনপত্রে যেকোনো প্রকার সংশোধনী বা ভর্তি পরীক্ষাসংক্রান্ত যেকোনো ডকুমেন্টের ডুপ্লিকেট কপি নেওয়ার জন্য (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) ৩০০ টাকা সার্ভিস চার্জ প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ আবেদন সংক্রান্ত সকল সংশোধনী ১ জানুয়ারি থেকে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত সংশোধন করা যাবে। ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।