ভর্তিযুদ্ধে জয়ী হতে ঢাবি ছাত্র সিফাতের গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরামর্শ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:৪৯ PM , আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:৪৯ PM
দরজায় কড়া নাড়ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষা। ইতিমধ্যে ভর্তিচ্ছুদের সকল প্রস্তুতি সমাপ্তির পথে। শেষ সময়ে সবকিছু গুছিয়ে কীভাবে পরীক্ষা শেষ করা যেতে পারে এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন ঢাবির রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী সিফাত ইসলাম।
ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণকালে শিক্ষার্থীদের করা ভুলগুলো নিয়ে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা এ সময়ে অনেক বেশি চিন্তা করে এটি তাদের অনেক সময় নষ্ট করে। ফলে তাদের অন্যদের থেকে পিছিয়ে পড়ার একটি সম্ভাবনা থাকে। আমি মনে করি পরীক্ষার আগের এ সময়ে মাথায় কোনো চিন্তা রাখা যাবে না। যতটুকু প্রস্তুতি নিয়েছি এর মধ্যেই ভালো পরীক্ষা দেওয়ার মানসিকতা রাখতে হবে।’
‘যে টপিকগুলো গুরুত্বপূর্ণ যেগুলো যদি পড়া না থাকে তাহলে একবার করে পড়ে নেওয়া উচিত এবং এই পর্যন্ত যতটুকু পড়া হয়েছে এগুলোই বার বার রিভিশন দেওয়া এই সময়ের জন্য উপযুক্ত হবে বলে আমি মনে করছি।’
‘ওই সময়ে চিন্তা ছিল আমার যত বন্ধু আছে তাদের চাইতে বেশি পড়বো। আমার চেষ্টায় যেন কোনো ধরনের ঘাটতি না থাকে। ঘুম এবং অন্যান্য দৈনন্দিন যে বিষয়গুলো রয়েছে সেগুলো কমিয়ে নিয়ে এসে আমি পড়ায় মনোযোগ দিয়েছি। একটা কথাই বলবো এ সময় চেষ্টার কোনো কমতি রাখা যাবে না।’
পরীক্ষার হলে কী কী সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত এমন প্রশ্নে সিফাত বলেন, ‘পরীক্ষা চলাকালে কোনোভাবেই প্যানিক (ঘাবড়ে যাওয়া) হওয়া যাবে না। প্রথমে প্রশ্নটা হাতে নিয়ে যে বিষয়ে সবচেয়ে ভালো জানা আছে সেটা উত্তর করতে হবে। এছাড়াও প্রত্যেকটা প্রশ্ন ভালো করে পড়তে হবে। শুধুমাত্র টপিক কমন পড়েছে বলে অর্ধেক পড়েই অনুমান করে উত্তর দিয়ে দিবো এমনটা করা যাবে না। যে প্রশ্নগুলো পড়ে মনে হবে যে এটা একটু ভেবে উত্তর করতে হবে সেটা পরবর্তী সময়ের জন্য রেখে দিয়ে অন্য প্রশ্নে আগাতে হবে। অনেকে প্রশ্ন দেখে মনে করে আমি অনেক কম উত্তর করেছি; আরও বেশি উত্তর করতে হবে তবে এখানে যে বিষয়টি খেয়াল করতে হবে এভাবে ভুল উত্তর করার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ভুল উত্তরগুলোর জন্য কিন্তু সঠিক উত্তর থেকে নম্বর কাটা হয় ফলে চান্স পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে। পরীক্ষার সময় আমি যতটুকু পারি ততটুকুই উত্তর করবো এরকম একটা চিন্তা নিয়ে আসতে হবে। আন্দাজে দাগানো যাবে না কোনোভাবেই।’
ভর্তিচ্ছুদের মানসিক চাপ সামলানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষা জীবনের একটি অংশ এ ছাড়াও আরও অনেক কিছুই রয়েছে। এসময় অনেক হতাশা কাজ করে কিন্তু এটাকেই জীবনের উদ্দেশ্য করা বা জীবনের অর্থ বানানো মোটেও উচিত নয়। মনে রাখতে হবে এটি আমার জীবনের একটি অংশ। চান্স পাইনি বলে যে আমরা জীবনের কোনো অর্থ নেই এটা কোনোভাবেই চিন্তা করা যাবে না। জীবনের অনেক লক্ষ্য থাকে সেটা আমরা একভাবে না হলেও অন্যভাবে ঠিকই পূরণ করতে পারবো।’
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স না পাওয়াদের উদ্দেশ্যে সিফাত বলেন, ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়াকে সমাজ এমনভাবে দেখায় যে মনে হয় এখানে চান্স না পেলে আমার জীবন শেষ। এই চিন্তাটি ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের মধ্যে দেওয়ার ফলে তারা হতাশায় ভোগে। এ হতাশা থেকেই অনেকে আত্মহত্যার মতো পথ বেছে নেয়। সমাজের মানুষের কাছে আমার একটা আবেদন থাকবে ভর্তি পরীক্ষাকে আপনারা জীবনের একমাত্র অর্থ না দেখিয়ে এটাকে সহজভাবে নিন।’
একাধিক ইউনিটের প্রস্তুতির বিষয়ে রসায়নের এ ছাত্র বলেন, ‘আমি শুধু বিজ্ঞান ইউনিটের প্রিপারেশন নিয়েছিলাম। আমার মতে যার যে ইউনিটে দক্ষতা সবচেয়ে বেশি তার সেখানেই পরীক্ষা দেওয়া উচিত। যারা অসাধারণ রকমের শিক্ষার্থী রয়েছেন এরকম গুটিকয়েকজন নিজের সক্ষমতা অনুযায়ী চাইলে একাধিক ইউনিটের প্রস্তুতি নিতে পারেন।’
সবশেষ তিনি বলেন, ‘এই সময়ে বলবো তোমাদের যার কাছে যতটুকু সময় আছে এতোদিন যা পড়েছো তা ভালো করে রিভিশন দাও। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে বারবার চোখ বুলিয়ে নাও আশাকরি ভালো একটা ফলাফল করতে পারবে।’