২২ আগস্ট ২০২২, ১৩:৪২

ম্যাথ না দাগিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং নয়: বেরোবি উপাচার্যকে স্মারকলিপি

ভর্তি পরীক্ষা   © সংগৃহীত

ম্যাথ না দাগিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিষয় না দেওয়ার দাবি জানিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (২২ আগস্ট) দুপুরে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের পক্ষে এ স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়।

স্মারকলিপিতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা জানান, ‘গত ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছ পরীক্ষায় ফলাফলের ভিত্তিতে বিভাগ নির্বাচন সংক্রান্ত-জটিলতা দেখা গিয়েছিল। কর্তৃপক্ষকে সেই ব্যাপারে জানানো হলে ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে অনুষ্ঠিত গুচ্ছ পরীক্ষায় পূর্বের ভুল ত্রুটি নির্মূল এবং কোনো ধরনের জটিলতা না থাকার বিষয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদেরকে আশ্বস্ত করা হয়। কিন্তু এ বছরের ভর্তি পরীক্ষায় অনেকে শর্ত সাপেক্ষে মূল বিষয় উত্তর না করা সত্ত্বেও তাদের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ায় আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন অনিয়মের আশংকায় শঙ্কিত।’

ভর্তিচ্ছুরা জানান, ‘স্বাভাবিকভাবেই ঢাবি, রাবি, জাবির মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিষয়ে উত্তর না করলে কোনো শিক্ষার্থী ইঞ্জিনিয়ারিং এবং গাণিতিক অনুষদের কোনো বিভাগের জন্য যোগ্য হিসেবে মনোনীত হয় না। তবুও বিগত বছরে গুচ্ছে এর ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা গেছে। অনেকেই গণিতের উত্তর না করেও ইঞ্জিনিয়ারিং ও গাণিতিক অনুষদের সকল বিষয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। এতে করে গণিতে উত্তর করার পরেও অনেক শিক্ষার্থী ইঞ্জিনিয়ারিং এবং গাণিতিক অনুষদে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়।

সম্প্রতি ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। গণিতের প্রশ্ন তুলনামূলক কঠিন এবং কিছু প্রশ্ন ২০২১ সালের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার নির্ধারিত শর্ট সিলেবাসের বাহিরে থেকে হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই গণিতে উত্তরকারী শিক্ষার্থীদের প্রাপ্ত মোট নম্বর অন্যদের (যারা গণিত ব্যতীত বাংলা/ইংরেজি উত্তর করেছেন) তুলনায় কম। তাই বিগত বছরের মতো এবারও যদি শুধু প্রাপ্ত গড় নম্বরের ভিত্তিতে প্রকৌশলী এবং গাণিতিক অনুষদে শিক্ষার্থীদেরকে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলে আবারও অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হবে গণিতে উত্তর করা শিক্ষার্থীরা। তাই ইঞ্জিনিয়ারিং এবং গাণিতিক অনুষদের জন্য শুধুমাত্র যারা গণিত বিষয়ের উত্তর করেছেন তাদেরকেই ফলাফলের ভিত্তিতে সুযোগ প্রদান করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।’

আরও পড়ুন : চবি ‘শেষ অপশন’ ছিল ভর্তি পরীক্ষায় তৃতীয় সাদিয়ার

ভর্তিচ্ছুরা আরও জানান, ‘ইঞ্জিনিয়ারিং এবং গাণিতিক অনুষদের প্রাণ এবং চালিকাশক্তি হলো গণিত। তাই গণিত বিষয়ে দক্ষতার পরীক্ষা না দিয়ে কেউ ভর্তির সুযোগ পেলে শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া হবে। গণিতসহ অন্যান্য বিষয়ের উত্তরকারীদের ফলাফলের ভিত্তিতে প্রায় সম্ভাব্য বিভাগসমূহ প্রদানে আমাদের যুগোপযোগী ন্যায্য দাবিসমূহ:

১. পদার্থ, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, গণিত সকল বিভাগের বিষয়সমূহ

২. পদার্থ+রসায়ন+গণিত+বাংলা/ইংরেজি=গাণিতিক অনুষদের বিষয়সমূহ

৩. পদার্থ+রসায়ন+জীববিজ্ঞান+বাংলা/ইংরেজি জীববিজ্ঞান অনুষদের বিষয় সমূহ

সর্বোপরি, ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে গণিত ব্যতীত বাংলা/ইংরেজি উত্তরকারী শিক্ষার্থীদেরকে প্রকৌশল বা গাণিতিক অনুষদের বিষয়গুলোতে ভর্তির সুযোগ দিয়ে আবারো কোনো অনিয়মের পুনরাবৃত্তির সাক্ষী আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা হতে চাই না। আমাদের দাবি একটাই উত্তরকৃত বিষয় অনুযায়ী বিভাগ ন্যায্য বণ্টনের মাধ্যমে শিক্ষার্থী বান্ধব গুচ্ছ চাই।

অতএব, বিনীত আবেদন এই যে শুধু গণিত বিষয়ে উত্তরকারী শিক্ষার্থীদেরকেই ফলাফলের ভিত্তিতে প্রকৌশল এবং গাণিতিক অনুষদে ভর্তির সুযোগ দিয়ে আমাদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে মূর্তি একান্ত কাম্য।

প্রসঙ্গত, একই দাবি এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন ভর্তিচ্ছুরা। পর্যায়ক্রমে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়েও স্মারকলিপি দেবেন তারা।