বন্যায় গুচ্ছে আবেদনের সুযোগ হয়নি, বিশেষ বিবেচনার দাবি ভর্তিচ্ছুদের

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় আবেদনের সুযোগ চেয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ও ভর্তি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হককে স্মারকলিপি দিয়েছেন ভর্তিচ্ছুরা
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় আবেদনের সুযোগ চেয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ও ভর্তি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হককে স্মারকলিপি দিয়েছেন ভর্তিচ্ছুরা  © টিডিসি ফটো

সিলেট-সুনামগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যা পরিস্থিতির কারণে ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভর্তি আবেদন করতে পারেননি এসব অঞ্চলের ভর্তিচ্ছুদের একটি অংশ। তারা বন্যা পরিস্থিতিতে নিজেদের সমস্যার কথা তুলে ধরে বিশেষ বিবেচনায় ভর্তি পরীক্ষায় আবেদনের সুযোগ দাবি করেছেন।

বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার যুগ্ম-আহ্বায়ক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক বরাবর দেয়া স্মারকালিপিতে ভর্তিচ্ছুরা এ দাবি জানান।

স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, আমরা এবারের ভর্তি পরীক্ষার্থী। এই বছর গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় আবেদনের সমসীমা ছিল ১৫-২৫ জুন। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগের (বন্যার) কারণে আমরা অনেক শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় আবেদন সম্পন্ন করতে পারিনি। আমাদের সিলেট-সুনামগঞ্জ-নেত্রকোনা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ আরও অনেক জেলায় বন্যার কারণে আমরা মারাত্মকভাবে গ্রতিগ্রস্থ হয়েছি।

ভর্তিচ্ছুরা বলেন, সিলেট, সুনামগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যায় তাদের অবস্থা খারাপ। এখনও তাদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করতে হচ্ছে। সব কিছু বন্যায় তলিয়ে গেছে। বন্যা কবলিত জেলাগুলোতে অসংখ্য ভর্তিচ্ছু রয়েছেন। বন্যার কারণে তাদের বেঁচে থাকাই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। বিশেষ বিবেচনায় আবেদন বঞ্চিত এসব ভর্তিচ্ছুদের সুযোগ দেয়ার দাবি জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: ওদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্ন

চলতি শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি আবেদন শুরু হয় গত ১৫ জুন। শেষ হয়েছে ২৫ জুন। আবেদন শুরুর সময়ই গুচ্ছ কমিটি জানেয়েছিল চলতি শিক্ষাবর্ষের ভর্তি আবেদনে নির্দিষ্ট তারিখ শেষে আর অতিরিক্ত সময় বাড়ানো হবে না।

ভর্তি আবেদন বঞ্চিত একজন সুমাইয়া খাতুন। তার বাড়ি জামালপুর। বন্যায় বাড়ি-ঘর ভেসে বাস্তুহারা তিনি। সুমাইয়া বলেন, দীর্ঘদিন পানি বন্দী থাকায় আমি সম্পূর্ণভাবে নেটওয়ার্কের বাইরে ছিলাম। সে সময়ে কোথায় কি হচ্ছে না হচ্ছে আমরা কিছুই জানতাম না। বন্যায় প্রায় ২০ দিন পরিবারসহ আমি ঘর ছাড়া। এ পরিস্থিতিতে আমাদের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার আবেদনের সুযোগ হয়নি। আমরা বিশেষ বিবেচনায় আবেদনের সুযোগ চাচ্ছি।

একই দাবি জানান ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী সুমাইয়া সুলতানা (রিয়া)। তার বাড়ি সুনামগঞ্জ। তিনি বলেন, ১৫ দিন পানি বন্দি ছিলাম। কোন যোগাযোগ পদ্ধতি ছিলাম না আমার। জানতামই না কখন আবেদন শুরু হয়েছে আর কখন শেষ হয়েছে। আমাদের অঞ্চলে যারা ত্রান দিতে গিয়েছেন তাদের থেকে জানতে পারি যে আবেদনের সময় শেষ। এরপর থেকে আমরা গুচ্ছ কমিটির ধারে ধারে ঘুরছি।

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার টেকনিক্যাল সাব-কমিটির আহবায়ক এবং চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাছিম আখতার এ বিষয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আবেদনের সময় তো কয়েকদিন আগেই শেষ হয়ে গেছে। এছাড়া কমিটির কেউই এখন পর্যন্ত আমাকে এ বিষয়ে কিছু জানাননি। আমরা বিষয়টি ভেবে দেখবো। এসময় তিনি ভর্তিচ্ছুদের পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।


সর্বশেষ সংবাদ