গুচ্ছে দ্বিতীয়বার পরীক্ষার সুযোগ দিতে চান অধিকাংশ উপাচার্য
গুচ্ছভুক্ত ২০ বিশ্ববিদ্যালয়ের আগামী বছরের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয়বার সুযোগ দিতে চান অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। করোনার কারণে ছাত্রছাত্রীরা যেন উচ্চশিক্ষা গ্রহণ থেকে বঞ্চিত না হন সেজন্য এই সুযোগ দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন তারা।
উপাচার্যরা বলছেন, করোনার কারণে শিক্ষার্থীরা এবছর নিজেদের সেভাবে প্রস্তুত করতে পারেনি। এইচএসসি পরীক্ষা না হওয়ায় অনেকে ডাবল জিপিএ-৫ পেয়েও কোথাও ভর্তির সুযোগ পাননি। এই অবস্থায় শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ না দেওয়া হলে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের দ্বার বন্ধ হয়ে যাবে। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় শিক্ষার্থীদের এই সুযোগ দেওয়ার পক্ষে তারা।
গুচ্ছে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা সুযোগ দেয়া উচিৎ জানিয়ে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, করোনার কারণে শহরের ছেলে-মেয়েরা ভর্তি পরীক্ষার জন্য ভালো প্রস্তুতি নিতে পারলেও গ্রামের শিক্ষার্থীরা সে সুযোগ পায়নি। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার আগে বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ ছিল। সেই সুযোগ আগামীবারও থাকা উচিৎ। করোনার কারণে আমাদের কোনো শিক্ষার্থী যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় আমাদের সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
আরও পড়ুন: মার্চ-এপ্রিলে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের চিন্তা
আগামী বছরের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয়বার সুযোগ দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রফেসর ড. জালাল উদ্দীন। দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে তিনি বলেন, করোনার কারণে সবকিছুই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক ছেলে-মেয়ে ভালো ফল করেও কোথাও ভর্তির সুযোগ পায়নি। আমরা দেখেছি এসএসসি ও এইচএসসিতে ডাবল জিপিএ-৫ পেয়েও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ হয়নি।
তিনি আরও বলেন, আমার ব্যক্তিগত মত হচ্ছে গুচ্ছে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ রাখা দরকার। যে ছেলে-মেয়েগুলো এবার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে তারা ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে পারেনি। এইচএসসি পরীক্ষা না হওয়ায় তারা সেভাবে পড়ালেখার সুযোগ পায়নি। তারাও কিন্তু মেধাবী। এই মেধাবীদের বঞ্চিত করা ঠিক হবে না।
আরও পড়ুন: গুচ্ছে ‘সেকেন্ড টাইম’ রাখার পক্ষে ইউজিসি সদস্য ড. আলমগীর
এদিকে আগামী বছরের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ‘সেকেন্ড টাইম’ রাখা না রাখার বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছেন গুচ্ছভুক্ত বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। তারা বলছেন, যেহেতু দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা না রাখার বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি, তাই এই বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন তারা।
এ প্রসঙ্গে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, শিক্ষার্থীরা যদি গুচ্ছে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ দাবি করে তাহলে তাদের বিষয়টি নিয়ে ভাবতেই হবে। এখনো ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হয়নি। ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর শিক্ষার্থীদের এই দাবির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবো। সেখানে সব উপাচার্য সেকেন্ড টাইম রাখার বিষয়ে মত দিলে দ্বিতীয়বার সুযোগ রাখা হবে।
আরও পড়ুন: কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ইমদাদুল হক দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আগামী বছর গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয়বার না রাখার বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব। কারো একার পক্ষে এ বিষয়ে বলা কঠিন।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এমরান কবির চৌধুরী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ না দেওয়ার অনেকগুলো কারণ আছে। তবে যেহেতু এরা করোনা পরবর্তী ব্যাচ। তাই তাদের ক্ষেত্রে বিষয়টি ভিন্ন। উপাচার্যদের সভায় আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. দিদার-উল-আলম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের মধ্যে বৈঠক হবে। সেই বৈঠকে আমরা শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে তুলে ধরবো। অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য যদি মনে করে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা সুযোগ দেওয়া দরকার। তাহলে আমরা অবশ্যই আগামী বছর দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ রাখবো।