১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২২:০৮

বন্ধ চাঁদাবাজি: স্বস্তি ফিরেছে ভর্তি কোচিং সেন্টারগুলোতে

ফার্মগেটে কোচিং সেন্টার  © টিডিসি ফটো

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চাঁদাবাজি বন্ধ হওয়ার রাজধানীর কোচিং সেন্টারগুলোয় স্বস্তি ফিরেছে। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির প্রস্তুতি নিতে শিক্ষার্থীদের সহায়তা করা এ কোচিংগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতাদের পরিচয়ে নানা ফরমেটে চলতো চাঁদাবাজি। কখনো নগদ টাকা দাবি, কখনো বিনা খরচ বা নূন্যতম খরচে শিক্ষার্থী ভর্তির চাপ দেয়া হতো কোচিংগুলোয়। তবে ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর সে প্রবণতা কমেছে। যদিও আগের চাঁদাবাজরা নতুন পরিচয়ে ফের চাপ দিচ্ছেন বলেওকয়েকটি কোচিং সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। কোচিং সেন্টার পরিচালনার সঙ্গে জড়িতদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। 

অভিযোগ, কোচিং সেন্টারগুলোতে বিগত সরকারের আমলে ছাত্রলীগ, যুবলীগ বা আওয়ামী লীগ পরিচয়ে চলতো চাঁদাবাজি। নগদ টাকা ছাড়াও শিক্ষার্থী ভর্তি নিয়ে অভিনব চাঁদাবাজির পন্থা হাজির করা হয়েছিল। সেক্ষেত্রে কোন কোন শিক্ষার্থীকে নিয়ে এসে কোচিংগুলোতে ভর্তি করাতেন নেতারা। কখন নামমাত্র ফি দিয়ে, কখনো ফি ছাড়াই ভর্তি করা হতো তাদের। তবে ওই শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ফি নিতেন দলীয় পরিচয়ধারী নেতারা। এমন পরিস্থিতিতে ওই শিক্ষার্থীরা কোচিং সেন্টারগুলোর জন্য ‘গলার কাঁটায়’ পরিণত হতো। 

রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় কোচিংয়ের আধিক্য দেখা যায়। কোচিং সেন্টার সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, এ এলাকায় অবস্থিত কোচিং সেন্টারগুলোতে বিগত সরকারের আমলে ছাত্রলীগ, যুবলীগ বা আওয়ামী লীগ পরিচয়ে চলতো চাঁদাবাজি। নগদ টাকা ছাড়াও শিক্ষার্থী ভর্তি নিয়ে অভিনব চাঁদাবাজির পন্থা হাজির করা হয়েছিল। সেক্ষেত্রে কোন কোন শিক্ষার্থীকে নিয়ে এসে কোচিংগুলোতে ভর্তি করতেন নেতারা। কখন নামমাত্র ফি দিয়ে, কখনো ফি ছাড়াই ভর্তি করা হতো তাদের। তবে ওই শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ফি নিতেন দলীয় পরিচয়ধারী নেতারা। এমন পরিস্থিতিতে ওই শিক্ষার্থীরা কোচিং সেন্টারগুলোর জন্য ‘গলার কাঁটায়’ পরিণত হতো। 

আরও পড়ুন : প্রতিবছর ৫ অক্টোবর উদযাপন হবে বিশ্ব শিক্ষক দিবস, নীতিমালা প্রকাশ

ফোকাস কোচিং সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, বিগত সরকারের আমলে তাদের অর্ধেকের বেশি শিক্ষার্থী ছিল নানা চাঁদাবাজির কোটায় ভর্তি হওয়া। অর্ধেক না হলেও উল্লে যোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী চাঁদাবাজির কোটায় ভর্তি করা হতো বলে অভিযোগ করেছেন ইউসিসি-মেরিন গাইডসহ বেশ কয়েকটি কোচিং সেন্টার। কোচিং সেন্টারগুলো সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তেজাগাঁও কলেজের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পরিচয়ে সবচেয়ে বেশি চলতো চাঁদাবাজি। 

ফোকাস কোচিং সংশ্লিষ্টরা জানান, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগের পরও আগে যারা সরকার দলীয় নেতা-কর্মী পরিচয়ে চাঁদাবাজি করতে তারাই ফিরে এসে ছাত্রদল, যুবদল পরিচয়ে চাঁদাবাজির চেষ্টা করেন। তবে কোচিং কর্তৃপক্ষের শক্ত অবস্থানের কারণে তারা আর বেগ পেতে পারেননি। 

ফোকাস কোচিং সংশ্লিষ্টরা জানান, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগের পরও আগে যারা সরকার দলীয় নেতা-কর্মী পরিচয়ে চাঁদাবাজি করতে তারাই ফিরে এসে ছাত্রদল, যুবদল পরিচয়ে চাঁদাবাজির চেষ্টা করেন। তবে কোচিং কর্তৃপক্ষের শক্ত অবস্থানের কারণে তারা আর বেগ পেতে পারেননি। 

আরও পড়ুন : পাঠ্যবইয়ে থাকছে বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস, বাদ যাচ্ছে হাসিনার গুণগান

তবে কোচিং সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগের তুলনায় ৫ আগস্টের পর চাঁদাবাজি ঘটনার সংখ্যা নেমে এসেছে শূন্যের কোটায়। তাই এখন স্বস্তি ফিরেছে। তবে কতদিন তা থাকবে?-সে প্রশ্ন শঙ্কা বাড়াচ্ছে কোচিং সেন্টারগুলো সংশ্লিষ্টদের। 

জানতে চাইলে ইউসিসি কোচিংয়ের এক্সিকিউটিভ মো. আবুল কাসেম পাটোয়ারী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আগে তো দলীয় পরিচয়ে ওই ধরনের ঘটনা চললেও ৫ আগস্টের পর বড় পরিবর্তন এসেছে। এখন আগের মত পরিস্থিতি নেই। 

কোন রাজনৈতিক সরকার গঠন হলে ফের কোচিংগুলোতে চাঁদাবাজি শুরু হতে পারে শঙ্কা প্রকাশ করে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, সে শঙ্কাতো থেকেই যায়। তবে সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্তরা যদি দায়িত্বশীল হন তবে সে শঙ্কা নেই।

কোন রাজনৈতিক সরকার গঠন হলে ফের কোচিংগুলোতে চাঁদাবাজি শুরু হতে পারে শঙ্কা প্রকাশ করে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, সে শঙ্কাতো থেকেই যায়। তবে সরকারের  দায়িত্বপ্রাপ্তরা যদি দায়িত্বশীল হন তবে সে শঙ্কা নেই।

এদিকে ফোকাস কোচিং সেন্টারের একজন এক্সিকিউটিভ অফিসার দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমাদের ভর্তি কার্যক্রম ৫ আগস্টের আগেই শুরু হয়েছিল। তাই কিছু শিক্ষার্থী চাঁদাবাজি পন্থায় ভর্তি হয়েছেন। ৫ আগস্টের পরও আমরা এ ধরণের কিছু সমস্যা ফেস করেছি। তবে আমাদের কর্তৃপক্ষ শক্ত অবস্থান নেয়ায় সে বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করতে পারেনি। 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক সরকার গঠন হলে আগের পরিস্থিতি ফিরতে পারে সে শঙ্কা আছেই। তবে জনমানুষের প্রত্যাশা থাকবে আগামী সরকার যেন এ ধরণের অপরাধ প্রশ্রয় না দেয়।

জানতে চাইলে মেরিন গাইড কোচিংয়ের দায়িত্বরত এক্সিকিউটিভ নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, ‘আমরা ৫ আগস্টের পর এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হইনি। যদিও আশপাশের কিছু কোচিংয়ে এ ধরনের ঘটনা হয়েছে বলে জেনেছি।’