অনার্স চতুর্থ বর্ষ

৪ ঘণ্টার পরিবর্তে ২ ঘন্টায় পরীক্ষা, ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা

লোগো
লোগো

আগামী ২৫ জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের অনার্স চতুর্থ বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা। দীর্ঘ ছুটির পর হল না খুলেই পরীক্ষার তোড়জোড়ে এমনিতেই চরম ভোগান্তীতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

এরমাঝে হঠাৎ করেই পরীক্ষার কাঠামো পরিবর্তন এবং সময় কমানোর কথা জানান কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ এবং সাত কলেজের সমন্বয়ক অধ্যাপক আইকে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার।

গতকাল বুধবার তিনি জানান, ‘স্থগিত পরীক্ষা ২ ঘণ্টার হবে। সম্পূর্ণ নতুন যেগুলো শুরু হবে, পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ঢাবির একাডেমিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২ ঘণ্টা।’ কোভিডকালীন সময়ে স্বাস্থ্যবিধি বিবেচনায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

অর্থ্যাৎ পূর্বে ৪ ঘণ্টায় যেখানে শিক্ষার্থীরা ৮০ নম্বরের উত্তর প্রদান করতেন সেখানে এই সিদ্ধান্তক্রমে পরীক্ষার্থীরা এখন ২ ঘণ্টায় ৮০ নম্বরের উত্তর প্রদান করবে।

প্রশ্ন কাঠামো হবে-

ক/ A পার্টে ৭টি প্রশ্ন থাকবে ৫ টা প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে প্রতিটি ২ করে ১০ নম্বর।

খ/ B পার্টে ৪টি প্রশ্ন থাকবে ২টা দিতে হবে ১০ নম্বরের করে ২০ নম্বর।

গ/ C পার্টের ৪টি প্রশ্ন থাকবে ২টির উত্তর দিতে হবে। প্রতি প্রশ্নের নম্বর ২৫ নম্বর করে ৫০ নম্বর।

তবে সিলেবাস না কমিয়ে সময় কমানো কোনভাবেই যুক্তিযুক্ত মনে করছেন না সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা। কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রীয়া ব্যক্ত করে এমন সিদ্ধান্ত বাতিল করার অথবা সিলেবাস কমানোর দাবি জানান তারা।

ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী আতিকুল ইসলাম বলেন, যদি প্রশ্নের কাঠামোর পরিবর্তন করতেই হয়, তাহলে অবশ্যই সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করতে হবে। এতো বড় সিলেবাস থেকে কম সময়ে এতো উত্তর নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, আর যদি সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করা সম্ভব না হয় তবে আগের মতোই প্রশ্নের কাঠামো ঠিক রেখে ৪ ঘণ্টায় ৮০ নম্বরের প্রশ্ন করা হোক। সেখান থেকে ২ ঘণ্টায় ৪০ নম্বরের উত্তর (শিক্ষার্থীদের ইচ্ছেমত) দেওয়ার সুযোগ করলে সবচেয়ে ভালো হবে।

আমির হাসান জীম নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, বিশাল সিলেবাসের সাথে সাথে, নম্বর নিয়ে আরো বেশী চিন্তিত। ২ ঘণ্টায় পূর্ণমানে পরীক্ষা কীভাবে দেবো? প্রশ্নের মান যতই বাড়ানো হোক না কেন ২ ঘণ্টায় ৮০ নম্বরের উত্তর দেওয়া কোনভাবেই সম্ভব নয়। করোনায় আমরা ২ ঘণ্টা পরীক্ষা দিতে পারলে সেখানে ৪ ঘণ্টা পরীক্ষাও আমরা দিতে পারবো।

তবে পরীক্ষা সংক্রান্ত এই বিষয়গুলো সম্পূর্ণভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের এখতিয়ার বলে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছেন সাত কলেজের সমন্বয়ক অধ্যাপক আইকে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার।

তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি যেন দ্রুততম সময়ের মধ্যেই আটকে পড়া পরীক্ষা গুলো সম্পন্ন করা যায়। এতে করে সেশনজট কমানো সম্ভব হবে। পরীক্ষা সংক্রান্ত সিদ্ধান্তসমূহ ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলে গৃহীত হয়। আমরা এককভাবে কোন সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি না। সর্বোপরি বিশ্বিবিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।

প্রসঙ্গত, সেশনজট নিরসনে শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৬ ডিসেম্বর ২০২০ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের ডিন ও প্রধান সমন্বয়কারীর সভাপতিত্বে সংশ্লিষ্ট ডিন, সরকারি ৭ কলেজের অধ্যক্ষ ও পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নেয়ার সিন্ধান্ত হয়।

১৪ জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের মাস্টার্স শেষ পর্বের অসমাপ্ত পরীক্ষা ও ২৫ জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের অনার্স চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা গ্রহণের সিন্ধান্ত হয়। এছাড়াও জানানো হয় ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই শুরু হবে অনার্স তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা।


সর্বশেষ সংবাদ