করোনায় ঢাবি ছাত্রীর উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প

মোবাশশিরা দিদার আদিবা
মোবাশশিরা দিদার আদিবা  © টিডিসি ফটো

বৈশ্বিক মহামারি করোনায় থমকে গেছে বিশ্ব। অর্থনৈতিক ব্যবস্থাও ভঙ্গুর। মহামারি এই ভাইরাসের প্রকোপ দেশে ছড়িয়ে পড়ায় গত মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বসে বসে অলস সময় পার করতে হচ্ছে কয়েক কোটি শিক্ষার্থীকে।

কিন্তু এই বিরূপ পরিস্থিতিতেও থেমে থাকেননি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া কিছু শিক্ষার্থী। যাঁরা নানা প্রতিকূলতাকে জয় করে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার ভূমিকায় নিজেদের দাঁড় করিয়েছেন। এমন একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী মোবাশশিরা দিদার আদিবা।

উদ্যোক্তা হওয়ার আগ্রহ কিভাবে তৈরি হলো— এই প্রশ্নের জবাবে আদিবা জানান, করোনার লকডাউনে দীর্ঘদিন টিউশন না থাকায় এবং হাতে অনেক অবসর সময় থাকায় ঘরে থাকা কিছু জিনিসকে মূলধন হিসেবে কাজে লাগিয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার পথে যাত্রা শুরু করি। আর তখন থেকে তার উদ্যোক্তা হিসেবে যাত্রা।

জানা গেছে, করোনার প্রদুর্ভাব শুরু পর The Sterling Zone নামক ফেসবুক পেজ থেকে শুরু করেন ই-কমার্স প্লাটফর্ম। এখান থেকে আপেল সিডার ভিনেগার উইথ মাদার, ঘি, মজারেলা চিজ, পেয়ারার জেলি, বিভিন্ন ধরনের মধু, সরিষার তেল, নারিকেল তেল, এ্যালোভেরা অয়েল, হেয়ার রিকভারি অয়েল, পিংক সল্ট, চিয়া সিড, মেথি, কিশমিশ, বিভিন্ন ধরনের বাদাম ঘরে বসেই কিনতে পারবেন ক্রেতারা। পাশাপাশি জুম শাড়িও কিনতে পারবেন ক্রেতারা।

নিজের ছোটবোনকে নিয়ে মাত্র ১ হাজার টাকা দিয়ে ব্যবসা শুরু করেন আদিবা। এখন প্রতিমাসে ২৫-৩০ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি হয়। শুরুর দিকে পণ্য ডেলিভারি নিয়ে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়েছে তার। তবে আস্তে আস্তে এ সমস্যাটি কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। উদ্যোক্তা হিসেবে মাঠে নেমে এই ছাত্রীর বেশ চ্যালেঞ্জের মুখেও পড়তে হয়েছে।

তিনি জানান, প্রথমে ডেলিভারি নিয়ে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়েছে। তখন অনেকগুলো ডেলিভারি কোম্পানির মাধ্যমে পার্সেল পাঠাতাম। তবে এখন পার্সেল ডেলিভারির জন্য দুটি কোম্পানি ফাইনাল করেছি। সবগুলো চ্যালেঞ্জ এখনো মোকাবেলা করতে পারিনি।

তিনি আরও বলেন, শুরুতে মাত্র ১ হাজার টাকার পুঁজি ছিল। আর এখন পুঁজি আছে ৩৫ হাজারের মত। সবই ইনভেস্টেড আছে এখন। যেহেতু এখনো স্টুডেন্ট তাই মূলধনের পরিমাণ নেই বললেই চলে।  তবে এটাকে ভবিষ্যৎ অনলাইন সুপার শপ হিসেবে ব্র্যান্ড তৈরি করতে চান এই ছাত্রী।

করোনাকালে নানা প্রতিকূলতাকে জয় করে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার ভূমিকায় নিজেদের দাঁড় করিয়েছেন অনেক শিক্ষার্থী। তাদের উদ্দেশ্যে মোবাশশিরা দিদার আদিবা বলেন, করোনায় অনেকেই ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ খুলে বিজনেস শুরু করেছে। এটা একটা পজিটিভ দিক। কিন্তু আমরা যেন হুজুগে ব্যবসায়ী না হয়। কারণ এতে নিজেরা যেমন টিকতে পারবে না, তেমনি অন্য ব্যবসায়ীদেরও ক্ষতি হবে।

তিনি বলেন, একজন লাখপতি হয়েছে দেখে আসলে ব্যবসা শুরু করা উচিত না। যা করব তা সম্পর্কে পুরোপুরি জেনে বুঝে শুরু করা উচিত।


সর্বশেষ সংবাদ