ঢাবির স্নাতক আহামেদউল্যাহ এখন মাছ ব্যবসায়ী
করোনার সময়টা ঘরবন্দী কাটছিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তরে পড়ার চাপ না থাকায় শুরুতে কিছুটা স্বস্তি পেলেও পরে অস্থির হয়ে ওঠেন আহামেদউল্যাহ। ক্যাম্পাসে সিয়াম নামে চেনে সবাই। বিএনসিসির ক্যাডেট সার্জেন্ট তিনি। এছাড়া স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বাঁধনের একনিষ্ঠ কর্মী৷ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির স্বেচ্ছাসেবকও।
এত কিছুতে যুক্ত থেকে ঘরে বন্দী সময় কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না। একপর্যায়ে ইলিশের দেশ চাঁদপুরে বাড়ি হওয়ায় আহামেদউল্যাহ ভাবলেন, ইলিশ নিয়ে কিছু করা যায় কি না। তখনই পরিকল্পনা শুরু। এলাকার ইলিশ ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও পরিচয় আছে, তাঁদের সঙ্গে কথা বললেন। কীভাবে কুরিয়ারের মাধ্যমে ঢাকাসহ অন্যান্য এলাকায় ইলিশ পাঠানো যায়। শেষে নেমে পড়লেন ব্যবসায়।
তাঁর বাবা মো. শামছুদ্দিন পাটওয়ারী হাজীগঞ্জ উপজেলার উত্তর-পূর্ব রাজারগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। ছেলের সঙ্গে তিনি যুক্তিতে পেরে উঠছিলেন না। লোকে কী বলবে ভেবে মানতেও পারছিলেন না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) থেকে স্নাতক পাস করে ছেলে মাছ ব্যবসা করবে?
শেষে আহামেদউল্যাহকে বলেছিলেন, ‘অন্য কিছু করা যায় না? আরও কত কাজ আছে।’ আহামেদউল্যাহ অবশ্য তাঁর সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন—তিনি মাছের ব্যবসাই করবেন। গত জুনের মাঝামাঝি তিনি ফেসবুকে একটা পেজ খোলেন, নাম দেন ‘ইলিশের বাড়ি’। এই পেজ থেকেই মধ্যে প্রায় ১০০ কেজি মাছ বিক্রি করেছেন তিনি।
শুরুতে অনেকে কটু কথা বলেছেন, এখনো বলছেন। তবে আহামেদউল্যাহ তাদের কথায় কান দেননি। তিনি বলেন, ‘যদি ব্যবসা করে সফল হতে পারি, যাঁরা বাঁকা কথা বলছেন তাঁরাই প্রশংসা করবেন।’
তিনি জানান, ‘ইলিশের বাড়ি’কে একটি ব্র্যান্ড বানাতে চান। আপাতত ইলিশ চেনার পাশাপাশি মানুষ চেনার সুযোগও হচ্ছে। কাজ করতে গিয়ে নতুন অভিজ্ঞতা হচ্ছে। এ অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ‘ইলিশের বাড়ি’ দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে চান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালেয়ের স্নাতক আহামেদউল্যাহ।