নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ক্যাডার হয়ে উচ্ছ্বসিত সুশান্ত
‘‘বাংলা বর্ণমালায় আসলে অনেক কম শব্দ বা বর্ণ আছে, আমার অনুভূতি প্রকাশ করার জন্য। ফলাফল পেয়ে আমার যে অনুভূতি হয়েছিল তা আসলেই প্রকাশ করার মতো নয়। তবে নিজের প্রতি অনেক বিশ্বাস ছিল। তবুও অন্যরকম একটা ভালো লাগা কাজ করেছিল।’’
৩৮ তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফলে শিক্ষা ক্যাডারে ব্যবস্থাপনা বিভাগে তৃতীয় হয়ে এভাবেই নিজের উচ্ছ্বাসিত অনুভূতি ব্যক্ত করছিলেন সুশান্ত মজুমদার। তিনি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ১ম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনিই প্রথম বিসিএসে সুপারিশ প্রাপ্ত হলেন। তাঁর এই সাফল্যের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিবাদন জানিয়েছেন অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী।
২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন সুশান্ত মজুমদার। সেখান থেকেই ২০১৬ সালে স্নাতকে ৫ম এবং ২০১৮ সালে স্নাতকোত্তরে ৪র্থ মেধাক্রম নিয়ে একাডেমিক জীবন শেষ করেন। এর পরই যোগদেন বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর উপ-পরিদর্শক পদে। বর্তমানে সেখানেই কর্মরত রয়েছেন। এর আগে ২০০৯ সালে হুলারহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ২০১১ সালে পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন তিনি ।
সুশান্ত মজুমদারের গ্রামের বাড়ি পিরোজপুর সদর উপজেলার লখাকাঠী গ্রামে। পিতা সন্তোষ কুমার মজুমদার পেশায় একজন ব্যবসায়ী। মাতা জ্যোস্না রাণী মজুমদার গৃহিণী। তিন ভাই বোনের মধ্যে তৃতীয় সুশান্ত মজুমদার।
সুশান্ত মজুমদার বলেন, সকল সফল মানুষের পেছনেই কিছু কিছু মানুষ থাকে, যারা প্রতিনিয়ত মানুষকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য চেষ্টা করে যায়। আদিকালে যখন গুহামানবেরা ছবি আঁকত তখনও কিন্তু একজন মশাল বা আলো ধরে থাকতো। আমার মা-বাবা প্রচন্ড শিক্ষানুরাগী মানুষ। বিসিএস অনেকটা সময়ক্ষেপণ করে। বেশির ভাগ মানুষেরই ধৈর্য থাকেনা। কিন্তু আমার মা-বাবা আমাকে ধৈর্য ধারণ করতে সাহায্য করেছেন। অনেক সময় দীর্ঘসূত্রিতায় আমি হতাশ হয়ে পড়লে তাঁরা আমাকে সাহস যুগিয়েছেন। ভালোবাসার মানুষটার প্রতিও আমি কৃতজ্ঞ এই বন্ধুর পথে বন্ধুর মতো এতটা সময় পাশাপাশি থেকে অনুপ্রাণিত করেছে।
জীবনের প্রথম বিসিএসে সফল সুশান্ত মজুমদার বলেন, আমি পড়ার সময় বেশকিছু কৌশল অবলম্বন করে নিয়েছিলাম,যেহেতু আমার সময় ছিল কম। প্রাইভেট পড়ানো, একাডেমিক পড়া, রিসার্চ পেপারের কাজ। তাই আমি যতটুকু সময় পেতাম, সঠিক ভাবে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি। বিশাল কিছু লক্ষ্যে না নিয়ে পুরো সিলেবাসটাকে ছোট ছোট করে ভাগ করে নিয়েছিলাম। সেই ছোট ছোট অংশগুলো সম্পন্ন করার চেষ্টা করতাম। গণিত, ইংরেজিটা প্রতিদিন পড়ার চেষ্টা করেছি । বিসিএস এর প্রস্তুতি নেয়ার জন্য কৌশলী হওয়া বেশি গুরুত্বপূর্ণ।