নিক ভুজে মিলে যায় স্যালুট রাসেলের গল্প!
নিক ভুজ। জীবনযুদ্ধের এক বীর যোদ্ধা; যার হাত-পা কোনটাই নেই, আছে শুধু মুরগীর ছানার মতো দুটি পাখা। কিন্তু সেই পাখা দিয়েই নিক সাতার কাটে, স্কেটিং করে, ফুটবল খেলে, পাখা মেলে মনের আকাশে। নিক অনেকের জীবনের অনুপ্রেরণা। শুক্রবার ভাইরাল হওয়া সাইফুলের গল্পটাও যেন নিকের সঙ্গে মিল গেল।
সম্প্রতি এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় রাসেলের একটি রিপোর্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেখানে পুলিশের এক সদস্য ইজিবাইক চালক এই রাসেলকে মারধর ও তার গাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। যদিও পুলিশ বলছে, ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও বাবা হারা প্রতিবন্ধী রাসেলকে মানবিক কারণে আমরা কখনও অটো চলাচলে বাধা দেইনি। তারপরও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য জেলা পুলিশ মর্মাহত। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে ওই ঘটনার পরপরই জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে ডাকা হয়। সেখানেই পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম, বিপিএম (বার), পিপিএমের সহযোগিতায় তার সমস্যা সমাধান করা হয় এবং ভবিষ্যতে তার ইজিবাইক চালানোর সব দায়িত্ব জেলা পুলিশ নেবে বলে আশ্বাস দেয়া হয়।
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ফেসবুক ইউজার লিখেছেন, রাসেলের গল্প সত্যিই অবাক করার মতো। দুর্ঘটনায় দুই পা, এক হাত খুইয়েছে। কিন্তু দমে যায় নি। এক হাত আর অদম্য মনোবল নিয়ে জীবনযুদ্ধে প্রতিনিয়ত লড়াই করে চলেছে সে। এদেশে পঙ্গুত্ব মানেই যেখানে ভিক্ষার ঝুলি, সেখানে রাসেল তার একটি হাত দিয়েই তার জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা অটোরিকশা চালিয়ে জীবনযাপন করে। যদিও তার এই কন্ডিশনে অটোরিকশা চালানো ঝুঁকিপূর্ণ তবুও যাত্রীরা নির্ভয়ে তার অটোরিকশায় উঠে, করুণা নয় ভালোবাসা দিয়ে।
রাসেলের মনোবল দেখে সত্যিই অবাক হয়েছি। কি আশ্চর্য! তার এই সীমাবদ্ধতা নিয়ে মোটেও খেদ নেই। বরং তার মুখে সদা হাসি লেগে থাকে। কী অদ্ভুত সুন্দর করে কথা বলে। আর তার দুচোখে আকাশসম স্বপ্ন..
কথা প্রসঙ্গে রাসেল জানায়, সে খুব ভালো ফুটবল ও ক্রিকেট খেলে! তার মোবাইলের স্ক্রিনের কভার ফটো মো সালাহর। রাসেল যখন তার প্রাণোচ্ছল হাসি দিয়ে আমাদের সাথে সেলফি তুলছিলো, তখন সত্যিই মনে হচ্ছিল জীবন সুন্দর! রাসেলের ফেসবুক আইডির নাম স্যালুট রাসেল। রাসেল তোমাকে সত্যিই স্যালুট।
পুনশ্চঃ রাসেল যখন বলল, কুমিল্লা জেলা পুলিশের এই আন্তরিকতা ও ভালোবাসায় আনন্দে ওর চোখে জল এসে গেছে, তখন আমাদের চোখের কোণও চিকচিক করছিল।