কুকুরের গলায় কলার পরানো যুবককে চাকরির প্রস্তাব রতন টাটার
যার সঙ্গে কাজ করার স্বপ্ন দেখেন তার কাছ থেকেই সরাসরি ফোন এলো। সেই সঙ্গে চাকুরী করার প্রস্তাবও। এমনটা সবার জীবনে ঘটে না। কিন্তু ভারতের মুম্বায়ের বাসিন্দা শান্তনু নায়ডু ক্ষেত্রে এমনটাই ঘটেছে।
২০১৪ সালে একদিন অফিস থেকে বাড়ি ফেরার সময় দেখেন, একটি কুকুর রাস্তায় মৃত পড়ে আছে। বিষয়টি শান্তনুর বিবেককে নাড়া দেয়। এরপর তিনি ভাবতে থাকেন, রাস্তায় থাকা কুকুরদের এভাবে মৃত্যু কিভাবে ঠেকানো যায়।
এ বিষয়টি নিয়ে কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে আলোচনা করেন। এরপর তিনি শহরের একটা অংশের রাস্তায় থাকা কুকুরদের গলায় একটা করে কলার পরিয়ে দিলেন। ওই কলারগুলোতে আলো পড়লেই তা ঝলমলে হয়ে ওঠে। ফলে রাতে গাড়ির আলো দূর থেকে পড়লেই কলারগুলো নজরে আসবে চালকের। সঙ্গে কুকুরগুলোও নজরে পড়বে।
সম্প্রতি ‘হিউম্যানস অব বম্বে’ নামের একটি ফেসবুক পেজে এই পুরো ঘটনাটি পোস্ট দিয়েছেন শান্তনু নায়ডু। ওই পোস্টটি এরই মধ্যে ভাইরাল হয়েছে আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই সরাসরি চাকরির প্রস্তাব দেন রতন টাটার পক্ষথেকে শান্তনু নায়ডু ২৭ বছরের যুবককে।
ফেসবুকের ওই পোস্টে শান্তনু জানিয়েছেন, সম্প্রতি একটি ফোন পান তিনি। উল্টো দিক থেকে বলা হয়, আমার অফিসে প্রচুর কাজ রয়েছে। একজন সহকারী প্রয়োজন। আপনি কি আমার সহকারী হিসাবে কাজ করবেন?
চাকরির সুযোগের কথা শুনে শান্তনু কয়েক মুহূর্ত কোনো কথা বলতে পারেননি। কারণ তাকে ফোন দিয়েছিল রতন টাটা। নিজের সহকারীর খোঁজে শান্তনুকে নিজেই ফোন করেছেন! কী বলবেন বুঝতে পারছিলেন না শান্তনু। পর মুহূর্তেই তিনি ‘হ্যাঁ’ বলেন।
শান্তনুদের ওই ঘটনার পোষ্টটি ভাইরাল হওয়ার পর পরই টাটা গ্রুপের নিউজ লেটারেও প্রকাশ পায়। এরপর প্রচুর মানুষ কুকুরের জন্য ওই কলার কিনতে চান। কিন্তু ওই পরিমাণে কলার সরবরাহ করার সামর্থ শান্তনুর ছিল না। তার বাবা শান্তনুকে বিষয়টি রতন টাটাকে বলার পরামর্শ দেন। পরে রতন টাটাকে একটি চিঠি লেখেন শান্তনু।
এর প্রায় দু’মাস পর একটি চিঠি পান তিনি। সেই চিঠিতে রতন টাটার স্বাক্ষর। কয়েকদিন পর রতন টাটার মুম্বাইয়ের অফিসে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেন শান্তনু। রতন তার কাজে যে ভীষণ আপ্লুত সে কথাও জানান।
এরপর রতন তার ব্যক্তিগত কুকুরগুলো দেখানোর জন্য শান্তনুকে দায়িত্ব দেন। এভাবেই দুজনের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। টাটাদের তরফে শান্তনুর কাজের জন্য আর্থিক সাহায্যও করা হয়।