আসর থেকে ভেঙে যাওয়া বিয়ের সমঝোতা করলেন সেই এএসপি
গত পরশু রাতে মতিঝিল বিভাগের সেন্ট্রাল নাইট রাউন্ড ডিউটিরত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সহকারী কমিশনার জাহিদুল ইসলাম রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে খিলগাঁও কমিউনিটি সেন্টারে বিশৃঙ্খলার খবর পেয়ে সেখানে যান। ঘটনাস্থলে পৌঁছার পর জানতে পারেন, বিয়ের অনুষ্ঠানে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির উদ্ভব হওয়ায় বিয়েটা প্রায় ভেঙে যাচ্ছে। তার হস্তক্ষেপেই পরে সমঝোতায় আসেন বিয়ের দু’পক্ষ। সে ঘটনাটি তার ফেসবুক প্রোফাইলে করা এক স্ট্যাটাসে জানিয়েছে।
এরআগে তিনি একইভাবে তার ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে অভাবের তাড়নায় বাচ্চার জন্য দুধ চুরি করা বাবার চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। মূলত সে ঘটনা থেকেই তিনি আলোচনায় আসেন।
তিনি তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘‘পেশাগত দায়িত্বের বাইরেও সমাজের সাধারণ মানুষ হিসেবে পালন করা কিছু দায়িত্ব মনে প্রশান্তি এনে দেয়। এমনই একটা ঘটনা আজ শেয়ার করবো।
গত ১৭/১০/২০১৯ তারিখ রাতে মতিঝিল বিভাগের সেন্ট্রাল নাইট রাউন্ড ডিউটি করছিলাম। রাত আনুমানিক ১:৩০ এর দিকে খিলগাঁও কমিউনিটি সেন্টারে বিশৃঙ্খলার খবর পাই। তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পৌঁছার পর জানতে পারি, বিয়ের অনুষ্ঠানে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির উদ্ভব হওয়ায় বিয়েটা প্রায় ভেঙে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে বিয়ের ভোজন পর্বও শেষ। দুই পক্ষের ঝামেলা দেখে কাজী সাহেবও সটকে পড়েছেন।বরপক্ষ খুবই উত্তেজিত! পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছিল।
বরপক্ষ বিয়ে না করেই বিয়ের আসর ছেড়ে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন! এমনই পরিস্থিতির এক পর্যায়ে কনের বাবা খুব ভেঙে পড়েন। পরে বাধ্য হয়ে হস্তক্ষেপ করলাম। (দুঃখ প্রকাশ করছি; যে বিষয়টি নিয়ে তারা উত্তেজিত ছিল তা শেয়ার করতে পারছিনা।) প্রথমে বরের সাথে একান্তে কথা বললাম। বর আমাকে সোজাসাপ্টা জানিয়ে দিলো যে, ‘আমি বিয়ে করতে রাজি কিন্তু আমার বাবা মা রাজি না থাকলে আমি বিয়ে করতে পারবোনা।’
এরপর বরের পিতা-মাতার সাথে কথা বললাম। দুই পক্ষকে নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আলোচনার পর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে পুলিশ পাঠিয়ে কাজী সাহেবকে বিয়ের আসরে নিয়ে আসলাম। পরে রাত আনুমানিক ৩:৩০ ঘটিকার দিকে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পন্ন করি।
আল্লাহ্ নব দম্পতিকে সুখে রাখুন। মানুষের জন্য কিছু করতে পারার মধ্যে যে আনন্দ তা জগতের অন্য কিছুতে নাই। দিনশেষে আত্মতৃপ্তি নিয়ে ঘুমাতে যাওয়া সকলের ভাগ্যে জোটে না। সেদিক থেকে আমি নিঃসন্দেহে ভাগ্যবান।’’