চাকরিজীবীদের বিসিএস প্রস্তুতি
যারা ইতোমধ্যে কোনো চাকরি করছেন। আবার চাকরির পাশাপাশি বিসিএস অথবা অন্য কোনো চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা কীভাবে চাকরির পাশাপাশি সময় বের করে বিসিএস বা অন্য কোনো চাকরির প্রস্তুতি নিতে পারেন। এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও ৩৬তম বিসিএস পরিসংখ্যান ক্যাডারে প্রথম স্থান অধিকারী মোহাম্মদ কামাল হোসেন। জানাচ্ছেন- এম এম মুজাহিদ উদ্দীন।
আপনি যেহেতু চাকরি পেয়েছেন, ধরেই নিচ্ছি চাকরির পড়াশোনা সম্পর্কে আপনার যেমন ভালো ধারণা আছে তেমন দখলও আছে। এই বিসিএস’র জন্য পূর্বের শিক্ষাটাই আপনার ভিত্তি। এখন সেটার রিভিশন এবং নতুন জ্ঞান যুক্ত করাটাই হবে কাজ। তবে সবগুলো বিষয় শুরু থেকেই পড়তে হবে।
ভেবে-চিন্তে এবং পূর্বের অভিজ্ঞতার আলোকে আপনার কোথায় কোথায় দুর্বলতা আছে এবং আপনি কী কী ভালো পারেন- এই দু’টি দিক আলাদা করুন। প্রয়োজনে একটি রাফ লিস্ট করুন। নিশ্চিত হয়ে নিন যে প্রয়োজনীয় বইগুলো আপনার সংগ্রহে আছে। নতুন করে অন্তত ২টি মডেল টেস্ট এবং একটি ডাইজেস্ট বই সংগ্রহ করুন।
দক্ষতা অর্জনকল্পে দুর্বলতার জায়গাগুলোতে একটা টোটাল পড়াশোনা করতে হবে। ওই সকল টপিকের খুঁটিনাটি আদ্যোপান্ত পড়ে নিবেন। আর যা কিছু আগে থেকেই ভালো পারেন, তা আপনার সময় বাঁচিয়ে দিবে। এগুলো এবং নতুন যা কিছু শিখবেন, তা রিভিশনে রাখবেন।
আপনার সময়টাকে দুই ভাগে ভাগ করতে পারেন। একটা ভাগ রিভিশনের জন্য, অন্য ভাগটি নতুন পড়াশোনা চর্চার জন্য।
আসুন দেখে নেই, একজন চাকরিজীবীর পক্ষে কতটা সময় বের করা সম্ভব। অফিস টাইম আট ঘণ্টা, আগে পিছে আরও দুই ঘণ্টা খরচ হলে- এখানে ১০ ঘন্টা শেষ। ছয় ঘণ্টা ঘুম এবং অন্যান্য প্রয়োজনে এক ঘণ্টা ব্যয় করলে- এখানে ৭ ঘণ্টা শেষ।
২৪ ঘণ্টার মধ্যে অবশিষ্ট থাকে ৭ ঘণ্টা। এই সময়টাকে দুইটা ভাগে পাওয়া যাবে। অফিসের পূর্বে ৩ ঘণ্টা এবং অফিসের পরে ৪ ঘণ্টা। তবে অনেকের জন্য ৪ ঘণ্টা ঘুমই যথেষ্ট। তিনি তো আরও বেশি সময় পাবেন।
আবার কেউ কেউ হয়ত অফিসের পূর্বে সময় কম পান, তিনি নিজের সুবিধামত ৭/৮ ঘণ্টা সময় বের করে নিতে পারেন। এবার রিভিশনের জন্য তিন ঘণ্টা ব্যয় করুন, বাকী সময়টুকুতে নিজের দুর্বলতা নিয়ে কাজ করুন। নতুন জ্ঞানে সমৃদ্ধ হোন।
শুক্র-শনি ডে-অফ, আপনার জন্য আশীর্বাদ। এই দুই দিন কমপক্ষে ১৬ ঘণ্টা করে পড়াশোনা করার চেষ্টা করুন। মডেল টেস্ট বই থেকে তথ্যগুলো শিখুন। নিজে নিজে বাসায় পরীক্ষা দেয়ার প্রয়োজন নেই। পরীক্ষা দিতে হলে কোন কোচিং সেন্টারে গিয়ে দিতে পারেন।
ব্যস্ততার ফাঁকে পড়াশোনার জন্য হাতের মোবাইলটা কাজে লাগাতে পারেন। পড়াশোনা বিষয়ক বিভিন্ন ফেসবুক পেজ এবং গ্রুপ, উইকিপিডিয়া, বাংলাপিডিয়া, মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট এবং গুগল থেকে পড়াশোনা করতে পারেন। কোন তথ্য নিয়ে সন্দেহ হলে অবশ্যই ক্রস চেক করে নিবেন। অনলাইন থেকে পড়া পেজগুলো অফলাইনের জন্য সেভ করে রাখুন। পরবর্তীতে রিভাইস করার জন্য গুছানো থাকা জরুরী। চাইলে নোটও রাখতে পারেন।
বই থেকে গুরুত্বপূর্ণ পেজগুলোর ছবি নিয়ে অথবা নিজের করা নোট থেকে দুই চারটা পৃষ্ঠা প্রতিদিন কাজের ফাঁকে বা গাড়িতে বসে দেখে নিতে পারেন।
স্থূল সময় খুব বেশি না পেলেও চিকন সময় অনেক পাবেন। সেগুলো কাজে লাগাতে পারলেই ব্যবধান তৈরী হয়ে যাবে।