ডাবল জিপিএ-৫ পাওয়া সেই তানিয়ার এবার ঢাবি জয়
দারিদ্র্যতার কশাঘাতে জর্জরিত অদম্য মেধাবী ছাত্রী তানিয়া। এলাকার মানুষের সাহায্য-সহযোগিতায় এতদিন লেখাপড়া করেছে বাবা হারা মেয়েটি। অভাবকে জয় করে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েও উচ্চশিক্ষা নিয়ে সংশয় তৈরি হওয়া সেই শিক্ষার্থী তানিয়া নাম এবার উঠে এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ ইউনিটে ব্যবসায়ীক শিক্ষা বিভাগে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে মেধাতালিকায় ৮৫৬ সিরিয়ালে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন তানিয়া।
তানিয়া সুলতানা ঝিনাইদহের কাঞ্চননগর স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী। সে এসএসসি ও এইচএসসিতেও জিপিএ-৫ পেয়ে এলাকায় আলোড়ন তৈরি করে। তানিয়া ওই এলাকার মৃত কামাল হোসেনের মেয়ে। মা আছিয়া বেগম এখনও অন্যের বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এ দম্পতির একমাত্র সন্তান তানিয়া সুলতানা।
বাবার মৃত্যুর পর অভাবের সংসারে তানিয়ার লেখাপড়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় তৈরি হলে তাকে নিয়ে গণমাধ্যমে নিউজ প্রকাশিত হয়। এরপর তাকে সহযোগিতার জন্য দানশীল অনেকেই এগিয়ে আসেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আমেরিকা প্রবাসী শৈলকুপার এক শিক্ষানুরাগী সংবাদ প্রকাশের পরপরই তানিয়ার লেখাপড়ার দায়িত্ব নেন।
তানিয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় খুশি স্থানীয়রাও। এলাকার অনেকেই জানায়, মেয়েটি এমন অভাবের সংসারে বাস করেও লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ায় তারা খুশি।
এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মজিদ বলেন, শুধু টাকা-পয়সা, বাড়ি-গাড়ি থাকলেই যে লেখাপাড়া করা যায় এমন ধারণা ভেঙে দিয়েছে অদম্য তানিয়া। একদিন তানিয়া দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে।
তানিয়া সুলতানা জানান, অভাবি পরিবারের হলেও তার ভ্যানচালক বাবার ইচ্ছে ছিল যেকোনোভাবেই মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করবে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াবে। গত ৩ বছর আগে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তার বাবা মারা যান। আজ সে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পেয়েছে, বিভিন্ন মানুষ সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। তবে বাবা কামাল হোসেন দেখে যেতে পারলো না মেয়ের সেই স্বপ্ন পূরণের ইচ্ছে।