প্রফেসর হওয়ার পথ ছেড়ে সচিব হওয়ার দৌঁড়ে ল্যান্সি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী আসমা উল হুসনা ল্যান্সি ৩৬তম বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারে সহকারী কমিশনারও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কর্মরত আছেন। দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের পাঠকদের জন্য তার এই সাফল্যের গল্প লিখেছেন- এম এম মুজাহিদ উদ্দীন
পড়েছেন সারা দেশে
এস এম আলী আজগর ও সারমীন আজগরের কোলজুড়ে পৃথিবীর মুখ দেখেন ল্যান্সি। বাবার বাড়ি নেত্রকোনা হলেও ল্যান্সি জন্ম নিয়েছেন রাজশাহীতে। বাবা সেনা কর্মকর্তা হওয়ার সুবাদে দেশের অনেক জেলায় তার পড়ার ও অভিজ্ঞতা লাভের সুযোগ হয়েছে। বগুড়ার ক্যান্টমেন্ট পাবলিক স্কুল থেকে অষ্টম শ্রেণীতে পেয়েছেন ট্যালেন্টফুল বৃত্তি। তারপর কুমিল্লার ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে যথাক্রমে ২০০৬ সালে এসএসসি ও ২০০৮ সালে এইচএসসিতে জিপিএ ৫ পান।
বাবা-মা’র ইচ্ছাই আমার ইচ্ছা
ল্যান্সির বাবা মা চেয়েছিলেন সে ডাক্তার হোক কিন্তু তার ইচ্ছা ছিল ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। বাবা মা’র ইচ্ছাকে প্রধান্য দিয়ে মেডিক্যালের কোচিং করলেও অল্পের জন্য মেডিকেলে চান্স হয়নি। অবশেষে ভর্তির সুযোগ পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগও সাংবাদিকতা বিভাগে। অনার্সের শুরুটা বেশি ভালো না হলেও ধীরে ধীরে ল্যান্সির রেজাল্ট ভালো হতে থাকে। অনার্সের ফলাফলে ৪র্থ তম ও মার্স্টাসে ৩য় স্থান অধিকার করেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেছিলেন। শিক্ষক হওয়ার গৌরব অর্জন করলেও বাবা মার ইচ্ছা তিনি বিসিএস ক্যাডার হন। তাই বাবা-মা চাওয়ায় তাদের ইচ্ছাকে গুরুত্ব দিয়ে ল্যান্সি বিসিএস পরীক্ষায় অবর্তীর্ণ হন।
যা যা করা দরকার
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েই সর্বপ্রথম ক্যারিয়ারের লক্ষ্য ঠিক করতে হবে। আর সে অনুযায়ী প্রথম থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। যে বিষয়ে অনার্স করা হবে সে বিষয় সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখতে হবে। প্রচুর বই পড়ার অভ্যাস করা দরকার। বন্ধু নির্বাচনে সর্তক হতে হবে। একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমের সাথে যুক্ত হলে ক্যারিয়ার ও ভবিষ্যত জীবনের জন্য ভালো ফল বয়ে আনে বলে বিশ্বাস করেন ল্যান্সি।
যারা বিসিএস দেবে
বিসিএস পরীক্ষা দিতে হলে সর্বপ্রথম বিসিএসের সিলেবাস সম্পর্কে সম্যক ধারণা রাখতে হবে। দেশ বিদেশ সম্পর্কে জানার আগ্রহ থাকতে হবে। এজন্য নিয়মিত সংবাদপত্র পাঠ করতে হবে, ইংলিশও বাংলা খবর দেখতে হবে। গণিতও ইংলিশের বেসিক স্ট্রং করতে হবে। বিসিএসের প্রস্তুতিটা অনেক দীর্ঘ তাই ধৈর্যটা জরুরি। ধৈর্য ধরে নিয়মিত পড়াশোনা করে যেতে হবে। কতটুকু পরিশ্রম করলাম বা পড়লাম সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। গুরুত্বপূর্ণ হলো পরীক্ষার হলের সময়টাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে খাতায় সুন্দরভাবে উপস্থাপন করে বিসিএসে উত্তীর্ণ হওয়া। এজন্য এলোপাতাড়িভাবে পড়াশোনা না করে কৌশল অবলম্বন করে পড়তে হবে। এরজন্য বিগত সালের প্রশ্নের প্যাটার্ন ধরতে হবে।
অনুভূতির কোঠরে
ল্যান্সির স্বপ্ন পূরণের অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাবা-মা’র স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি; এজন্য মহান আল্লাহকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। আমি স্বপ্ন দেখি একদিন সচিব হব। আমি চাই আমাদের বাড়ি একদিন আমার নামে সচিব বাড়ি হিসেবে পরিচিতি পাবে। আমাদের বাড়ির পাশ দিয়ে যখন মানুষ হেঁটে যাবে তখন বলবে এটা সচিব আসমা উল হুসনা ল্যান্সিদের বাড়ি।