ববিতে আরণ্যকের সবুজ অভিযান
গাছের সাথে মানুষের সু-সম্পর্ক সৃষ্টি অনাদিকাল থেকে। বোধিবৃক্ষের সাথে জড়িয়ে আছে বুদ্ধের জ্ঞান চর্চার ইতিহাস। কথিত আছে, বাল্মিকী মুনি যে দিব্যজ্ঞান লাভ করেছে, তাঁর ধ্যান স্থলও কোন এক বৃক্ষতল। এই বিষয়টি স্পষ্ট যে, জ্ঞান চর্চাস্থল বা প্রতিষ্ঠানের সাথে গাছ বা সবুজের সম্পর্ক আত্মিক।
বিশ্ববিদ্যালয় বলতে শুধু গগনচুম্বী অট্টালিকা বোঝায় না। বিশ্ববিদ্যালয় বলতে বোঝায় একটা সামগ্রিক শিক্ষা আবহ। যা ছাত্র শিক্ষকের সুস্থ মনন তৈরিতে সহায়তা করার মাধ্যমে একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশে শিক্ষার পাঠদান নিশ্চিত করবে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও প্রতিষ্ঠার পৌনে এক দশক পার করেও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) ক্যাম্পাস উত্তপ্ত ধুধু বালিয়াড়িই থেকে গেছে।
তীব্র রোদে দুদণ্ড বসে গল্পকার কিংবা আড্ডা দেবার জো’ নেই গোটা ক্যাম্পাসের কোথাও। অবকাঠামোগত উন্নয়নকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে আমরা সবুজায়নকে এত বেশি অবহেলা করেছি যে মাথার উপর রোদ আর পায়ের নিচের উত্তপ্ত বালুই ক্যাম্পাসের বিশেষ বৈশিষ্ট্যে পরিণত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে এই রুক্ষতার অভিশাপ থেকে মুক্তিদিতে বৃক্ষরোপণ অত্যাবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সেই লক্ষ্যে সবুজ বাঁচাও, সবুজে বাঁচো ‘স্লোগানকে সামনে রেখে আরণ্যক (সামাজিক সংগঠন) এই বর্ষায় ক্যাম্পাসকে সবুজে ভরিয়ে দিতে বাস্তবায়ন করছে সবুজের অভিযান।
এরই ধারাবাহিকতায় গত সোমবার ও মঙ্গলবার দুদিনে সংগঠনটি কাঠগোলাপ, নাগলিঙ্গম, নাগকেশর, শ্বেতচাঁপা, কুরচি, চাঁপালিশ, তমাল, হিজল, লাল সোনাইল, অশোক, মহুয়া, কৃষ্ণচূড়া এগুলোসহ প্রায় দেড় শতাধিক বৃক্ষরোপণ করেছেন।
ক্যাম্পাসে বৃক্ষরোপণ সম্পর্কে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মুজাহিদ অভিমুন্য বলেন, ক্যাম্পাসের মরুত্ব ঘোচাতে, সবুজের নিবিড় বসতি গড়তে আর ক্যাম্পাসে শিক্ষার সঠিক পরিবেশ সৃষ্টি করতেই আরণ্যকের এই (বৃক্ষরোপণ) প্রয়াস। এ পদক্ষেপের মাধ্যমে আরণ্যক যাত্রা করলো। সংগঠনটির এ সবুজের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান এ শিক্ষার্থী।