ফেসবুকে প্রেমে পড়ে কারাগারে ৬ বছর
আর যাই করুন, প্রেম করবেন না। প্রেম করলেও ফেসবুকে প্রেম তো একেবারেই করবেন না। পাকিস্তানের কারাগারে প্রায় ছয় বছর অতিবাহিত করার পর ভারতের সফটওয়্যার প্রকৌশলী হামিদ নিহাল আনসারি যুবক-যুবতীদের উদ্দেশ্যে এমনই উপদেশ দিচ্ছেন। ফেসবুকে প্রেমে পড়ে জীবনের ৬টি মূল্যবান বছর তাঁকে কাটাতে হয়েছে পাকিস্তানের কারাগারে। খবর এনডিটিভি বাংলার।
আনসারি জানিয়েছেন, ফেসবুকে তিনি পাকিস্তানের এক মেয়ের প্রেমে পড়েছিলেন। ওই মেয়েটি তাকে জানায় জোর করে তার বিয়ে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ‘বলপূর্বক’ ওই বিয়ে বন্ধ করার জন্য এবং প্রেমিকাকে বাঁচাতে আনসারি সেখানে দৌড়ে যান। মেয়েটির সঙ্গে তাঁর দেখা হওয়ার আগেই তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং কারাগারে বন্দি রাখা হয়। এই ঘটনার পর পেরিয়ে গিয়েছে ছয় বছর।
শুক্রবার তিনি মুম্বাইয়ের উপকণ্ঠে তার নিজের বাড়িতে পৌঁছে স্বস্তিতে রয়েছেন। আনসারি বলেন, ‘নিজের বাবা-মায়ের কাছ থেকে কিছু লুকিয়ে রাখো না। শুধু নিজের বাবা-মা'ই জীবনের কঠিন সময়ে তোমার পাশে দাঁড়াবে। এবং ভবিষ্যতে যেখানেই যাও না কেন, অবৈধ উপায়ে কক্ষনো যেও না!’
ফেসবুকে প্রেমে পড়া মানুষদের উদ্দেশ্যে তার সতর্কবার্তা হল, ‘ঝুঁকি নেবেন না। দুমদাম প্রেমে পড়বেন না। ফেসবুকে বিশ্বাস করে প্রেমে তো একেবারেই পড়বেন না।’
শুক্রবার সকালেই দিল্লি থেকে আনসারি ও তার পরিবার ভারসোভাতে তাঁদের নিজেদের বাড়িতে পৌঁছেছেন। তাঁদের স্বাগত জানাতে বাড়ির প্রবেশদ্বার সাজিয়ে রেখেছিলেন তাদের প্রতিবেশীরা। ‘স্বাগতম হামিদ' লেখা নীল ফিতে কেটে বাড়িতে প্রবেশ করেন তিনি।
আনসারি জানান, তার মুক্তির খবর আচমকাই তার কাছে এসে পৌঁছায়। তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার ভোর ৬.৩০টা নাগাদ জেলের উপপরিদর্শক আমার কাছে এসে বললেন, আপনি তৈরি হন। আপনার মুক্তি হল আজ। প্রস্তুত হওয়ার জন্য আধ ঘণ্টা সময় আছে। আমি খুব উত্তেজিত ছিলাম এবং এক মুহূর্তও নষ্ট না করে তড়িঘড়ি জামা জুতো পরে নিলাম এবং গাড়িতে চেপে রওনা দিলাম।’
২০১২ সালে ফেসবুকের ওই প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তানে প্রবেশের দায়ে গ্রেফতার হন আনসারি। পাকিস্তান তাঁর বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনে। মঙ্গলবার তাকে ফেরত পাঠানো হয় এবং ওয়াঘা-আট্টারি সীমান্তে তাকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করা হয়।