১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০:২৮

মেসির সফরে বিশৃঙ্খলার জেরে পদত্যাগ করলেন পশ্চিমবঙ্গের ক্রীড়ামন্ত্রী

অরূপ বিশ্বাস ও মেসি  © সংগৃহীত ছবি

ফুটবল তারকা লিওনেল মেসির কলকাতা সফরকে ঘিরে সৃষ্ট চরম বিশৃঙ্খলা ও ভাঙচুরের ঘটনার দায় নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস পদত্যাগ করেছেন। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেন।

সরকারি সূত্র জানায়, ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে ক্রীড়ামন্ত্রীর পদত্যাগ গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ক্রীড়া দপ্তরের দায়িত্ব নিজেই সামলাবেন মুখ্যমন্ত্রী। যদিও সরকারিভাবে এখনো এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি।

এর আগে মঙ্গলবার দুপুরেই রাজ্য পুলিশের মহাপরিচালক রাজীব কুমারসহ তিনজন শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় রাজ্য সরকার। একই সঙ্গে এক সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত এবং এক প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পুরো ঘটনা তদন্তে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (এসআইটি) গঠন করা হয়েছে।

গত শনিবার সল্ট লেকের বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে (সল্ট লেক স্টেডিয়াম) লিওনেল মেসির উপস্থিতিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে চরম অব্যবস্থাপনা দেখা দেয়। একদল তথাকথিত ভিআইপির ভিড়ে মেসি, লুইস সুয়ারেজ ও রদ্রিগো ডি পল কার্যত আটকে পড়েন। হাজার হাজার টাকা দিয়ে টিকিট কাটা দর্শকদের বড় একটি অংশ মেসিকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ পাননি।

নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হওয়ায় মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যেই মেসিকে স্টেডিয়াম থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপরই দর্শকদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং গ্যালারি ও মাঠে ব্যাপক ভাঙচুর শুরু হয়।

ওই অনুষ্ঠানের মাঠ ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। বিশৃঙ্খলা সামলাতে ব্যর্থ হওয়া এবং মেসির সঙ্গে অতিরিক্ত ঘনিষ্ঠ উপস্থিতি নিয়ে তার বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মেসির সঙ্গে তার ছবি ভাইরাল হয়, যেখানে পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিও প্রশ্ন তোলে।

ঘটনার সময় মেসি মাঠ ছাড়ার কিছুক্ষণ পরেই ক্রীড়ামন্ত্রীও স্টেডিয়াম ত্যাগ করেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। তখন থেকেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। মাঠ ছাড়ার সময় দর্শকদের ক্ষোভ ও কটূক্তির মুখেও পড়েন তিনি।

উল্লেখ্য, অরূপ বিশ্বাস ক্রীড়া দপ্তরের পাশাপাশি রাজ্যের বিদ্যুৎ দপ্তরেরও দায়িত্বে রয়েছেন। তবে তিনি শুধু ক্রীড়ামন্ত্রীর পদ থেকেই পদত্যাগ করেছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের ভেতরেও এ ঘটনা নিয়ে সমালোচনা চলছিল বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।