মোদির রাশিয়া সফর বাতিল
পহলগাম পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামী ৯ মে রাশিয়ায় বিজয় দিবস অনুষ্ঠানে যেতে পারছেন না। বুধবার সরকারি তরফে জানানো হয়েছে, মোদীর জায়গায় মস্কোর ওই অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। এদিন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভ জানান, চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং অনুষ্ঠানে হাজির থাকার কথা রয়েছে। কিন্তু, মোদী আসতে পারছেন না।
'সুপার ক্যাবিনেট' বৈঠকের দিনই বুধবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পরিষদে ব্যাপক রদবদল করা হয়। রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং বা সংক্ষেপে ‘র’-এর প্রাক্তন প্রধান অলোক জোশিকে এনএসএবি-র মাথা হিসেবে নিয়ে আসা হয়েছে।
এনএসএবি-তে এখন ৬ সদস্য রাখা হয়েছে। যাঁদের মধ্যে ৩ জনকে রাখা হয়েছে সেনা অভিজ্ঞতাসম্পন্ন, দুজন আইপিএস পদমর্যাদার অফিসার এবং একজন বিদেশ সার্ভিসের আমলা পর্যায়ের কর্তাকে। যেমন- প্রাক্তন দক্ষিণাঞ্চল সেনার প্রাক্তন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল একে সিং, প্রাক্তন ওয়েস্টার্ন এয়ার কমান্ডার এয়ার মার্শাল পিএম সিনহা এবং রিয়ার অ্যাডমিরাল মন্টি খান্নাকে নেওয়া হয়েছে।
অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস রাজীবরঞ্জন বর্মা ও মনমোহন সিং এবং প্রাক্তন আইএফএস বি বেঙ্কটেশ বর্মা এই নতুন পরিষদে রয়েছেন। এনএসএবি প্রথম গঠিত হয়েছিল ১৯৯৮ সালে। শেষবার বোর্ড গঠিত হয়েছিল ২০১৮ সালে।
প্রসঙ্গত, পহলগাম কাণ্ড নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শীর্ষ ক্যাবিনেট বৈঠকে বসেন বুধবার। ক্যাবিনেট কমিটি অন সিকিউরিটি বা সংক্ষেপে সিসিএস এবং ক্যাবিনেট কমিটি অন পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স বা সংক্ষেপে সিসিপিএ-এর সঙ্গে গোপন ও অতি জরুরিকালীন পরিস্থিতিতে আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। মঙ্গলবারই আরও একটি শীর্ষ সেনা আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনায় মোদী দেশের বাহিনীকে পূর্ণ ক্ষমতা দিয়েছেন পহলগাম কাণ্ডের প্রত্যাঘাতের রণকৌশল ঠিক করতে।
সিসিএস হল জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ক সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক কমিটি। অন্যদিকে, সিসিপিএ-র অর্থ ক্যাবিনেট কমিটিগুলির মধ্যে সবথেকে ক্ষমতাশীল একটি গোষ্ঠী যাকে চলতি কথায় সুপার ক্যাবিনেট বলা হয়ে থাকে। পহলগাম জঙ্গি হানার পর এদিন দ্বিতীয় সিসিএস বৈঠক চলছে। হামলার পরদিনই মোদী বিদেশ ভ্রমণ কাটছাঁট করে ফিরে এসে এই বৈঠক ডেকেছিলেন।
পহলগাম পরবর্তী পরিস্থিতিতে যুদ্ধ যুদ্ধ আবহে পাকিস্তানকে যোগ্য জবাব দেওয়ার বিষয়ে তিন বাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার বিকেলে হঠাৎই শীর্ষস্তরীয় বৈঠক ডাকেন প্রধানমন্ত্রী। মোদীর সরকারি বাসভবনে ডাকা ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল এবং চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ অনিল চৌহান। প্রায় একই সময়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে আরও একটি গোপন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অমিত শাহের মন্ত্রকের সচিব সহ বিভিন্ন শীর্ষ সারির আধিকারিকরা। মোদীর সঙ্গে বৈঠকে সিডিএস ছাড়াও ছিলেন সেনাপ্রধান উপেন্দ্র দ্বিবেদী, নৌসেনা প্রধান অ্যাডমিরাল দীনেশ কে ত্রিপাঠী ও বায়ুসেনা প্রধান অমরপ্রিত সিং।
সূত্রের খবর, ওই বৈঠকেই বাহিনীর কর্তাদের প্রধানমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন, কাশ্মীরের জঙ্গি হানার যোগ্য জবাব দিতে হবে, এটাই দেশের সংকল্প। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পূর্ণ স্বাধীনতা পাওয়ার পর কখন, কীভাবে প্রত্যাঘাত তা নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন বাহিনীর কর্তারাও।
সূত্র: দ্য ওয়াল