শৈত্যপ্রবাহ নিয়ে দুঃসংবাদ দিল আবহাওয়া অধিদপ্তর
দেশের বেশির ভাগ অঞ্চলে শনিবার তাপমাত্রা কিছুটা বাড়ায় শীত থেকে সাময়িক স্বস্তি মিলেছে। আগের দিন দেশের সাত জেলায় শৈত্যপ্রবাহ থাকলেও আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামীকাল রবিবারও তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে। তবে আগামী সোমবার রাত বা মঙ্গলবার সকাল থেকে আবার তাপমাত্রা কমতে পারে বলে আশঙ্কা দিয়েছে সংস্থাটি।
আজ রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মো. ওমর ফারুক দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে এসব তথ্য জানান।
আবহাওয়াবিদ ড. মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য যদি ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে আসে, সেখানে শীতের অনুভূতি বাড়তে থাকে। কিন্তু পার্থক্য যদি পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে আসে তবে শীতের অনুভূতি প্রকট থেকে প্রকটতর হয়। অর্থাৎ হাড়কাঁপানো শীত অনুভূত হয়। তখনই কেবল আমরা শৈত্যপ্রবাহ বলে থাকি।’
তিনি বলেন, ‘এ মাসের শেষের দিকে অর্থাৎ ২৯ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ সময়ের মধ্যে একটি শৈত্যপ্রবাহ হতে পারে। তখন শীতের দাপট আরও বাড়বে। এছাড়াও দেশের কোনো কোনো অঞ্চলে দু–এক দিনের জন্য মৃদু শৈত্যপ্রবাহও ফিরে আসতে পারে।’
ড. মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘শনিবার বিভিন্ন জেলার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার তুলনা করে দেখা গেছে রংপুর, দিনাজপুর, তেতুলিয়া মতো উত্তরবঙ্গের বেশিরভাগ অঞ্চলেই তাপমাত্রার পার্থক্য ছিল ১১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এছাড়াও চুয়াডাঙা, যশোর অঞ্চলের জেলাগুলোতে পার্থক্য ছিল ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম। ঢাকা, বগুড়া, ময়মনসিংহ ও সিলেট অঞ্চলেও তাপমাত্রার পার্থক্য ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম।’
আরও পড়ুন: জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা আজ, শিক্ষার্থীদের মানতে হবে ৬টি বিশেষ নির্দেশনা
নিয়ম অনুযায়ী, তাপমাত্রা আট থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, ছয় থেকে আট ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামলে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ আর চার থেকে ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়। আর তাপমাত্রা চার ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে হয় অতি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। পঞ্চগড়, দিনাজপুর ও চুয়াডাঙ্গা তাপমাত্রাই কেবল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে আছে। তবে শীতের তীব্রতা সারাদেশেই অনুভূত হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, ‘আগামী মাসের শুরুতে, অর্থাৎ জানুয়ারির শুরুর দিকে দেশে কুয়াশার পরিমাণ কমতে পারে। তখন সামগ্রিকভাবে দেশের বেশির ভাগ জায়গায় তাপমাত্রা বাড়লেও দেশের উত্তরের জেলাগুলোতে তুলনামূলক কম তাপমাত্রা ও শীতের অনুভূতি বজায় থাকতে পারে।’
এদিকে শনিবার দেশের অধিকাংশ স্থানে তাপমাত্রা বাড়ায় শীতের তীব্রতা কিছুটা কম অনুভূত হয়েছে। এদিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় যশোরে, ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এখন পর্যন্ত চলতি শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে। ঢাকায় এদিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অধিদপ্তরের মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি বা এর নিচে নেমে গেলে তাকে শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়।
তবে এই তাপমাত্রা যদি কয়েকটি অঞ্চলে টানা দুই-তিন দিন বজায় থাকে, তখনই আবহাওয়া অধিদপ্তর সেটিকে শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে ঘোষণা করে। ফলে যশোরে শনিবার তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে থাকলেও সেটিকে এখনো শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে ঘোষণা করা হয়নি।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া আগামীকাল রবিবার শুষ্ক থাকতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।