২১ নভেম্বর ২০২৫, ১৪:৪৭

ভূমিকম্পের কতটা ঝুঁকিতে বাংলাদেশ?

প্রতীকী ছবি  © সংগৃহীত ও এআই জেনারেটেড

গত দুই বছরে দেশের ভেতরেই উৎপত্তিস্থল ছিল এমন ভূমিকম্পের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত মোট ১২৭টি ভূমিকম্প অনুভূত হলেও এর মধ্যে ১৯টির কেন্দ্র ছিল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে। ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ হিসেবে আগে থেকেই ঝুঁকিতে থাকা বাংলাদেশের জন্য এই প্রবণতা বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।

শুক্রবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যে ভূমিকম্প অনুভূত হয়, সেটিকেই চলতি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী বলে জানিয়েছে পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৭ এবং উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদীর মাধবদী এলাকা। হঠাৎ তীব্র কম্পনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে, রাজধানীর অনেক বাসিন্দাকে দ্রুত ঘর ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসতে দেখা যায়।

আরও পড়ুন: একনজরে জবির ভর্তি বিজ্ঞপ্তির আদ্যোপান্ত দেখুন এখানে

এদিকে ভূমিকম্পের পর ঢাকায় কয়েকটি ভবন হেলে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া ঢাকায় ভবনের রেলিং ভেঙে অন্তত ৩ জন, ও অন্যান্য জেলায় ২ দু’জনসহ মোট পাঁচজনের মৃত্যু এবং ১৯ জন আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সাম্প্রতিক এসব হালকা ও মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পগুলোকে বড় ধরনের ভূমিকম্পের সম্ভাব্য পূর্বাভাস হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।

তথ্য অনুযায়ী, দেশে উৎপত্তিস্থল ছিল এমন ভূমিকম্পগুলোর মধ্যে সিলেট অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি মোট ৮টি। দিনাজপুর ও রংপুরে দুটি করে, পাবনা, কুমিল্লা, শরীয়তপুর, টাঙ্গাইল, রাঙ্গামাটি এবং চুয়াডাঙ্গায় একটি করে ভূমিকম্প রেকর্ড হয়েছে। সর্বশেষ আজ নরসিংদীর কম্পনটিকেই এ সময়ের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের অভ্যন্তরে উৎপত্তিস্থল বাড়তে থাকা ভূমিকম্প অবকাঠামোগত দুর্বলতার কারণে বাংলাদেশকে আরও ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। তাই দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, ভবন নির্মাণ কোড কঠোরভাবে অনুসরণ এবং ভূমিকম্প–ঝুঁকি প্রশমনে জরুরি প্রস্তুতি বাড়ানোর ওপর জোর দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ হুমায়ুন আখতার দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ভূমিকম্পটি ইন্দো–বার্মা টেকটোনিক প্লেট এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে। তিনি জানান, তার অভিজ্ঞতায় বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এত তীব্র ঝাঁকুনি খুবই বিরল এবং এটি সামগ্রিক ঝুঁকি বাড়ার ইঙ্গিত দেয়।