ঢাবির ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস: ২৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় মহিউদ্দিন রানা, আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ ২৮ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার সাইবার ট্রাইবুনালের বিচারক আস-সামস জগলুল হোসেন এই অভিযোগ গঠন করেন।
একই সঙ্গে ১১ আসামিকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। আগামী ২০ নভেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে।
অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে শাহবাগ থানায় দায়ের করা মামলায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরু হলো বলে আইনজীবীরা জানান।
আদালতে উপস্থিত আসামিদের অভিযোগ পড়ে শোনালে সবাই নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।
২০১৭ সালে দেশব্যাপী ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ১৯ অক্টোবর মধ্যরাতে গণমাধ্যমকর্মীদের দেওয়া কিছু তথ্যের সূত্র ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি আবাসিক হলে (শহীদুল্লাহ হল ও অমর একুশে হল) অভিযান চালায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
এ সময় গ্রেপ্তার হন আব্দুল্লাহ আল মামুন ও মহিউদ্দিন রানা নামে দুই শিক্ষার্থী। তাঁদের দেওয়া তথ্যে পরদিন পরীক্ষার হল থেকে গ্রেপ্তার হন ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থী ইশরাক হোসেন রাফি। গ্রেপ্তারকৃতদের তথ্য ও হলের অন্যদের জিজ্ঞাসাবাদে সিআইডি জানতে পারে প্রশ্ন ফাঁসের এই ঘটনার সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সমীর, মিজান, আজাদ ওমেগা কোচিংয়ের তন্ময়, মাইলস্টোন স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র সুব্রত জড়িত। সিআইডি আরও জানতে পারে, এরা একটি সংঘবদ্ধ চক্র, দেশব্যাপী যাদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত।
এ ঘটনায় ২০১৭ সালের ২০ অক্টোবর শাহবাগ থানায় সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিনহাজুল ইসলাম মামলা করেন।
আরও পড়ুনঃ ঢাবির সিন্ডিকেট নির্বাচনে নীল ও সাদা দলের প্রার্থী যারা
মামলাটি তদন্ত করেন পুলিশের সাইবার তদন্ত ইউনিটের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সুমন কুমার দাস। তদন্তকালে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে এবং অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করার পর তাঁরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের দায় স্বীকার করেন। ওই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ১২৬ আসামির জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়।
এই ১২৬ জনের মধ্যে ৩৯ জনের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ওই আসামিরাসহ ১২৬ জনের বিরুদ্ধে পাবলিক পরীক্ষা (অপরাধ) আইনে পৃথক অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ২০১৯ সালের ২৩ জুন এই অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ১২৬ জনের বিরুদ্ধে পাবলিক পরীক্ষা আইনে এ বছর ৩ জানুয়ারি অভিযোগ গঠন করা হয়। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওই মামলা বিচারাধীন রয়েছে।