রাবি শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগ নেতার মেরে ফেলার হুমকির ঘটনায় তদন্ত কমিটি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্রকে হলকক্ষে আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন ও গলায় ছুরি ঠেকিয়ে টাকা ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
শনিবার (২০ আগস্ট) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আরিফুর রহমানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- সহকারী প্রক্টর ফার্মেসি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আল মামুন ও ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জহুরুল আনিস। তদন্ত শেষে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রমাণ মিললে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানান প্রক্টর।
আরও পড়ুন: বুটেক্সে প্রথম-দ্বিতীয় হলেন দুই নটরডেমিয়ান
এর আগে, শুক্রবার (১৯ আগেস্ট) রাতে রাবির অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সামছুল ইসলাম তাকে নির্যাতন ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ তুলে প্রক্টর বরাবর একটি লিখিত দরখাস্ত দেন। এতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহার বিরুদ্ধে ওইদিন বেলা ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হলের ১৩২ নম্বর রুমে তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন এবং ২০ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ করেন।
অভিযুক্ত ভাস্কর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী এবং মতিহার হলের ১৩২ নম্বর রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী সামসুল মতিহার হলের ১৫৯ নম্বর রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, নিজের পড়াশোনার পাশাপাশি মোবাইল সার্ভিসিং-এর কাজ করে পরিবার চালানো এবং ছোট ভাইয়ের পড়াশোনা ব্যয়ভার বহন করেন তিনি। শুক্রবার বেলা ৩টার দিকে তাকে রুমে ডেকে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন ছাত্রলীগ নেতা ভাস্কর সাহা। কিন্তু চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে প্রায় ৩ ঘণ্টা আটকে রেখে ভুক্তভোগীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন ছাত্রলীগের নেতাসহ আরো কয়েকজন। এসময় তার কাছে থাকা বিভিন্ন জনের মোবাইল সার্ভিসিং-এর প্রায় ২০ হাজার টাকা জোর করে ছিনিয়ে নেয় ছাত্রলীগ নেতা। এছাড়া এসব কথা সাংবাদিক কিংবা পুলিশকে জানালে বুয়েটের আবরার ফাহাদের মতো তাকেও মেরে ফেলা হবে বলে ভুক্তভোগী এ শিক্ষার্থীকে হুমকি দেয়া হয়।
জানতে চাইলে ভুক্তভোগী সামছুল ইসলাম বলেন, আমার পরিবার খুব অসহায়। সেজন্য হলের শিক্ষার্থীদের মোবাইল সার্ভিসিংয়ের কাজ করে পরিবারের দেখাশোনা করি। কিন্তু এ সার্ভিসিং কাজ করার জন্য ছাত্রলীগ নেতা চাঁদা দাবি করে এবং আমি ৫ হাজার টাকা দিতে চাই।
এ শিক্ষার্থী বলেন, ৫ হাজার টাকা হবে না বলে রুমে ডেকে নিয়ে আমাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। এক পর্যায়ে আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি। এমতাবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট অভিযোগ পত্র প্রদানের পাশাপাশি নিজের নিরাপত্তা দাবি করেন ওই শিক্ষার্থী।