জঙ্গি অভিযোগে ঢাবি শিক্ষার্থীকে থানায় দিলেন প্রভোস্ট, ছেড়ে দিল পুলিশ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে এক শিক্ষার্থীকে জঙ্গি অভিযোগে থানায় দেয় ওই হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন। কিন্তু তদন্তের পরে অভিযোগের সাথে কোন প্রকার সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় ওই শিক্ষার্থীকে ছেড়ে দেয় শাহবাগ থানা পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ওই হলের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী মিফতাহুল মারুফকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করেন প্রাধ্যক্ষ। এরপর রাতে ও শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত থানা পুলিশ প্রাথমিক তদন্তের পর কোন প্রমাণ না পাওয়ায় তাকে একটি মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেন।
জানা যায়, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ১৪তম ব্যাচের অফিশিয়াল নোটিশ গ্রুপে (মেসেঞ্জার) তার একটি মন্তব্য লিখে মেসেজ দেন। মারুফ সেখানে লেখেন, ‘সিরিজ বোমা হামলা চালাইছে(চালিয়েছে) জামায়াতুল মুজাহিদিন নামে একটা জঙ্গি সংগঠন, বাংলা ভাইয়ের নেতৃত্বে। সেই সময় ক্ষমতায় ছিল বিএনপি-জামায়াত। এই ক্ষমতায় থাকার জন্য যদি দায়ী তারা হয় তাহলে ২০০৮-বর্তমানে গুলশান সহ সকল জঙ্গী হামলার জন্য দায়ী আওয়ামী লীগ।’
আরও পড়ুন: মেসেঞ্জার গ্রুপ ‘চৌদ্দশিখা’য় আ.লীগের সমালোচনা, ঢাবি ছাত্রকে পুলিশে দিলেন প্রাধ্যক্ষ
মারুফের সেই মেসেজের স্কিনশট নিয়ে হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হোসেন শান্ত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এরপর মোবাইল ফোন চেক করে হল প্রভোস্টের হাতে তুলে দেন তিনি। আর এই একটা মেসেজের ভিত্তিতেই প্রক্টরিয়াল টিমের মাধ্যমে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয় মারুফকে।
ওই ব্যাচের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, মাঝে মধ্যেই মেসেঞ্জার গ্রুপে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা, ডিবেট এসব হয়। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা এগুলোর চর্চা করার চেষ্টা করি। কিন্তু মারুফের ওই বক্তব্যের মধ্যে সন্দেহজনক কি থাকতে পারে সেটা কোনভাবেই বোধগম্য নয়।
শুক্রবার দুপুরে শাহবাগ থানার ওসি মওদুত হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেন, তার বিষয়ে অভিযোগ পাবার পর আমরা তার এলাকায় খোঁজ নিয়েছি। তার পরিবারের বড় দুই রাজনৈতিক দলের সাথেই সংশ্লিষ্টতা আছে৷ তবে ব্যক্তিগতভাবে তার কোন দলের সাথে সংশ্লিষ্টতা নেই। সে যে মন্তব্য করেছে এটা সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত মতামত। তাই আমরা তদন্তের পরে তাকে একটি মুচলেকা দেয়ার মাধ্যমে শিক্ষকদের জিম্মায় ছেড়ে দিয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, এটা হল প্রশাসনের বিষয়। এ বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ কথা বলবেন।
কোন তদন্ত না করেই কেন থানায় দেয়া হলো এমন প্রশ্ন করলে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, আমাদের জায়গা থেকে যতটুকু তদন্ত করা সম্ভব আমরা সেটা করেছি। এরপর পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি। বাকি কাজ তারা করেছে।