রাবিতে চান্স পেয়ে ঘোর অন্ধকারে হোন্ডার গ্যারাজে কাজ করা রফিক
২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ৩৬৪তম হয়েছেন রফিকুল ইসলাম নামে এক ভর্তিচ্ছু। কিন্তু অর্থাভাবে তার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি স্বপ্ন ঘোর অন্ধকারে রয়ে গেছে। তার বাবা-মা জীবিত থাকলেও তিনি তাদের থেকে কোন ধরনের সাপোর্ট পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন।
রফিকুলের বাড়ি গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উদাখালী ইউনিয়নে। তার বাবা আব্দুল আজিজ পেশায় একজন রড মিস্ত্রির হেলপার। তিনি ভর্তিচ্ছু রফিক, তার ভাই হাফিজুর রহমান ও তার মাকে ছেড়ে নতুন ঘর বেঁধেছেন প্রায় ১০ বছর আগে। অন্যদিকে রফিকের মা হাফিজা বেগমও গত বছর নতুন করে অন্য জায়গায় ঘর বেঁধেছেন।
রফিকুল গুনভরী দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে জিপিএ ৪.৮৯ অর্জন করেন এবং গাইবান্ধা সরকারি কলেজ থেকে এইসএসসি পরীক্ষা দিয়ে জিপিএ-৫ অর্জন করেন।
তিনি জানান, আমি ছোট থেকেই আমার মামার বাড়িতে থেকে পড়াশুনা করেছি। কারণ আমার বাবা-মা তখন ঢাকায় কাজ করতেন। আমাদের নিজস্ব কোনো জায়গা-জমি বা ঘরবাড়ি নেই। ছোটবেলা থেকেই পড়াশুনার একটা মনোযোগ ছিল। আমি যখন ৫ম শ্রেনিতে পড়ি তখন আমার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। তখন আমার মা আমাকে ঢাকায় নিয়ে গিয়ে হোন্ডার গ্যারেজে কাজে লাগিয়ে দেন।
আরও পড়ুন: টিকিট না পেয়ে ট্রেন বন্ধ করল রাবি ভর্তিচ্ছুরা
রাবি ভর্তি পরীক্ষা ‘এ’ ইউনিট থেকে ৩য় গ্রপে ৭৩.৯০ মার্ক পেয়ে ৩৬৪তম হয়েছেন রফিকুল। ভর্তি পরীক্ষায় তার রোল ৬৫৯৬৯। রাবির আগে ঢাবির ভর্তি পরীক্ষায়ও অংশ নিয়েছিলেন তিনি। সেখানে রিটেনে ফেল আসলেও মোট মার্কস ছিল ৭৩.৭৫। তার ঢাবি ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন তার মা দ্বিতীয় করেন। তখন তিনি আরও ভেঙে পড়েন বলে জানান। তিনি সমাজের বিত্তবানদের কাছে তার ভর্তির বিষয়ে সহায়তা চেয়েছেন। রফিকুলের সঙ্গে এ নম্বরে 01796508862 যোগাযোগ করা যাবে।
ছাত্র জীবনে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমার যখন জেএসসির রেজাল্ট দিলো তখন আমি ঢাকায় একটি কনস্ট্রাকশন সাইটে কাজ করি। ভেবেছিলাম পড়াশুনা বাদ দিয়ে দেব। কিন্তু জিপিএ-৫ পাওয়ার পর আমার বড় ভাই হাফিজুর রহমান রাজমিস্ত্রী কাজ করে ও আমার মা ঢাকায় রান্নার কাজ করে আমার এসএসসি পাস করা পর্যন্ত সাপোর্ট দিয়েছেন।