ভাড়ায় খেটে ভর্তি পরীক্ষা: সফল ঢাবি ছাত্রী, ব্যর্থ ছাত্র
জশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দেওয়ার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) দুই শিক্ষার্থীকে ১ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছেন। গত ২৬ জুলাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার রাবির বিভিন্ন ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত ফলে দেখা গেছে, ঢাবির ওই দুই শিক্ষার্থী যাদের হয়ে প্রক্সি দিয়েছিলেন তাদের মধ্যে একজন উত্তীর্ণ হয়েছেন।
এর আগে গত ২৬ জুলাই রাবির জনসংযোগ সূত্রে জানায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মো. এখলাসুর রহমান ভর্তি পরীক্ষার রোল ১৭২২৮ এর পরীক্ষার্থী লিমনের হয়ে প্রক্সি দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এ’ ইউনিটে প্রথম শিফটের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া একাডেমিক ভবনে প্রক্সি দিতে গিয়ে আটক হন তিনি।
আটকের পর ঢাবির এই ছাত্র জানিয়েছিলেন ৫০ হাজার টাকার চুক্তিতে রাবির ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি।
মঙ্গলবার প্রকাশিত ফলাফলে রাবির ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ‘এ’ ইউনিটের প্রথম শিফটে মূল পরীক্ষার্থী তামিম হাসান লিমনের (রোল নম্বর ১৭২২৮) পরীক্ষা বাতিল করে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
অন্যদিকে রাবির ভর্তি পরীক্ষা ঢাবির এক ছাত্রীও রোল ৬২৮২৮ এর পরীক্ষার্থী মোসা. ইশরাত জাহানের হয়ে প্রক্সি দেন। আটক ছাত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনিও একই পরিমাণের অর্থের মাধ্যমে প্রক্সিতে অংশ নিয়েছেন বলে জানা গেছে। পরে তাকে ১ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ঢাবির এই ছাত্রী যে পরীক্ষার্থীর হয়ে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন তার ফল থেকে দেখা যায়, ‘ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী মোসা. ইশরাত জাহান রাবির ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন। ভর্তি পরীক্ষায় তার রোল নম্বর ৬২৮২৮। তিনি রাবির ভর্তি পরীক্ষায় সাধারণ কোটায় সব গ্রুপ থেকে ৩য় শিফটে অংশ নেন। ভর্তি পরীক্ষায় তার প্রাপ্ত নম্বর ৪৬ দশমিক ৯০ এবং মেরিট পজিশন ৬৯২১, ফল উত্তীর্ণ।’
তবে ঢাবির এই ছাত্রীর বিরুদ্ধে এখানেই অভিযোগের শেষ নয়। এর আগে, বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষাতেও প্রক্সি দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন : ‘সহযোগিতা না করে টেনে ধরলে তো সিনেমায় কাজ করতে পারব না’
রাবিতে আটকের পর ঢাবির ওই ছাত্রী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায়ও প্রক্সি দিয়েছিলেন তিনি। তিনজন প্রার্থীকে পাসও করিয়েছিলেন তিনি। এ সময় ঢাবির ওই ছাত্রীর মোবাইল চেক করে ব্যাংক একাউন্টে ৩ লাখ ৩২ হাজার ৫৫১ টাকা পাওয়ার কথা জানান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
এদিকে ঢাবি ছাত্রছাত্রীর এমন কর্মকাণ্ডে নেটিজেনরা বিস্তর সমালোচনা করেন। নেটিজেনরা এও দাবি করেছিলেন, ‘তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মান ক্ষুণ্ণ করেছেন। এভাবে পরীক্ষা দেওয়ার কী দরকার ছিল!’
এদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফল প্রকাশের পর থেকে নেটিজেনদের একাংশ দাবি করছেন, ‘প্রক্সিতে ঢাবি ছাত্রীই সেরা।’
নেটিজেনদের আরেক অংশ বলছেন, ‘ইস! অল্পের জন্য সেদিন ধরা খেয়েছিলেন ঢাবি ছাত্রী। প্রক্সিতে ঢাবির ছাত্র ব্যর্থ হলেও সফল হয়েছেন ঢাবির ছাত্র।’